দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হওয়া টাস্ক ফোর্স দু’দিন শিলিগুড়ির তিনটি বাজারে অভিযান করলেও দাম কমেনি শাকসব্জির। তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ক্রমশ বাড়ছে। শনিবার শিলিগুড়ির বিভিন্ন বাজারে দাম ছিল চড়ার দিকে। এ দিনও বিভিন্ন আলু বিক্রি হয়েছে ২৮-৩০ টাকা কেজি দরে। যা কিনতে হিমশিম খেতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। রাজ্যের অন্য জায়গায় প্রশাসনের তরফে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হলেও এখানে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আলু থেকে পেঁয়াজ, আদা, টমোট্যো, পালং শাক সব কিছুরই দাম ছিল সাধারণের সাধ্যের বাইরে।
এ দিন বাজারে গিয়ে রীতিমত ক্ষোভ উগড়ে দিলেন ক্রেতারা। তাঁদের অভিযোগ, “এক দিন অভিযান করার পর আর কোন দেখা নেই প্রশাসনের। সাধারণ মানুষ কী করে জিনিস কিনবেন?” বিধান মার্কেট, ফুলেশ্বরী বাজার, সুভাষপল্লি বাজার সহ সমস্ত বাজারেই ছিল আলু-পেঁয়াজ ৩০ টাকা ও ৭০ টাকা। রথখোলা বাজারেও সব্জি বিক্রেতাদের একাংশ চড়া দামে আলু-পেঁয়াজ বিক্রি করছেন বলে অভিযোগ। এমনকী, কেন আনাজের দাম বেশি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিক্রেতাদের কয়েকজন খারাপ ব্যবহার করছেন বলেও ক্রেতাদের একাংশের অভিযোগ। ক্রেতাদের তরফে প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানানো হবে বলা হলেও ওই বিক্রেতারা গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বরং কিছু ব্যবসায়ীর কটাক্ষ, “আমরা সব জানি। দু-তার দিন পরেই সব অভিযান থেমে যাবে।” তবে প্রশাসনের অভিযান নিয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশ উদ্বিগ্ন। তাঁদের বক্তব্য, “এ ভাবে খুচরো বাজারে এসে দাম দেখে কী লাভ! আমরা পাইকারি বাজারের থেকে একটি বেশি দামে বিক্রি করি। পরিবহণ খরচের জন্য দাম তো বেশি নিতে হবে। না হলে ব্যবসা চালাব কি করে। পাইকারি বাজারে কোনও নিয়ন্ত্রণ না করে এই সমস্ত বাজারে কেন অভিযান করছেন তা বুঝতে পারছি না।”
প্রসঙ্গত, বাজারে শাক সব্জির দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য বৃহস্পতিবার বিধান মার্কেট ও শুক্রবার চম্পাসারি ও সুভাষপল্লি বাজারে অভিযানে যান টাস্ক ফোর্সের সদস্যরা। শহরে অন্য বাজারে কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই সঙ্গে রথখোলা-সহ একাধিক বাজারে ওজন যন্ত্র পরীক্ষা করার দাবিও তুলেছেন শহরবাসীদের অনেকেই।
তবে বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য আজ বরিবার ফের অভিযান করা হবে বলে জানান মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৈঠকও ডাকা হয়েছে বলে জানান তিনি। বাজারে শাক সব্জির দাম বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন বাজারে সভা করবে সিপিএম। দার্জিলিং জেলা সিপিএমের কার্যনিবার্হী সম্পাদক জীবেশ সরকার বলেন, “যে ভাবে সব কিছুর দাম বাড়ছে তা নিয়ে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি রাজ্য সরকার। এই অব্যবস্থার প্রতিবাদে আমরা সভা করব শহরের বিভিন্ন বাজারে।” তৃণমূলের তরফেও রাস্তায় নামার কথা জানানো হয়েছে। তৃণমূলের দার্জিলিং জেলার সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণ পাল বলেন, “কেন্দ্রের জনবিরোধী অর্থনীতির জেরেই আমজনতা জেরবার। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে আমরা রাস্তায় নামছি।” |