শিলিগুড়িকে কেন্দ্র করে পাহাড়-সমতল মিলিয়ে পর্যটনের উন্নয়নের জোর দেওয়ার নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার শিবমন্দির আঠেরোখাই মেলা মাঠে এক সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এ কথা জানান তিনি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং মিলিয়ে পর্যটনের ‘মেগা অ্যাকশন প্ল্যান’ তৈরি করছে সরকার। ‘টি-ট্যুরিজম’ গড়ে তোলা থেকে পাহাড়ে চারটি রোপওয়ে তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। গড়ে তোলা হবে বেশ কিছু হোটেল এবং পর্যটকদের সুবিধার জন্য নতুন রাস্তাও।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “শিলিগুড়ি নেপাল, ভুটান, বাংলাদেশ, সিকিম, এবং উত্তর পূর্বাঞ্চলের গেটওয়ে। শিলিগুড়িকে নিয়ে দার্জিলিং এবং ডুয়ার্সে পর্যটনের অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। অনেক উন্নয়ন হবে পর্যটনের।” উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবও এ দিন জানান, পাহাড় সমতলে ইতিমধ্যেই অন্তত ২২ বার এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি উত্তরবঙ্গের উন্নয়নে বিশেষ জোর দিয়েছেন। যা আগে কখনও হয়নি। |
প্রায় তিন মাস ধরে পাহাড়ে অস্থিরতার পরে মোর্চার সঙ্গে বৈঠকের পরে ফের পাহাড়ে এখন খুশির হাওয়া। এ দিনের অনুষ্ঠানেও তাঁর বক্তব্যে ঘুরে ফিরেই এসেছে দার্জিলিং তথা পাহাড়ের উন্নয়নের কথা। পাহাড়ে পর্যটনের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সে কথা বার বার বলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘‘দার্জিলিং ভাল থাকলে বাংলা ভাল থাকবে। আরও অনেক হোটেল, রাস্তাঘাট হলে পাহাড়ের উন্নয়ন ঘটবে। এখানে যে প্রাকৃতিক ও মানব সম্পদ রয়েছে, তা সুইত্জারল্যান্ডেও নেই। সুইত্জারল্যান্ড ছবির মতো। আর এখানে এক এক জায়গায় এক এক রকম সৌন্দর্যের সমাহার।” একই সঙ্গে ডুয়ার্স-সহ উত্তরবঙ্গে পর্যটনের সুযোগের বিষয়টিও তুলে ধরেন। মনে করিয়ে দেন, রাজ্যে ক্ষমতায় আসার আগেই শিলিগুড়ির কাছে গজলডোবায় পর্যটনের যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে তা তিনি দেখেছেন। এখন ক্ষমতায় এসে সেই কাজ বাস্তবায়িত করতে চান। |
রাজ্যের পর্যটন উন্নয়ন নিগম ইতিমধ্যেই সেখানে পর্যটক টানতে বিশেষ ‘ট্যুরিজম হাব’ তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছে। শিলিগুড়িতে মিনি সচিবালয় গড়ার পাশাপাশি সেখানে পরিবহণ দফতরের জোনাল অফিস তৈরির সিদ্ধান্তও এ দিন ঘোষণা করেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গে উন্নয়ন দফতরের টাকায় উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থায় ৩৫টি নতুন বাস কেনা হয়েছে। সেগুলির একাংশও পাহাড়ে চালানোর পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্যটকদের ঘোরানোর জন্য মিরিক, কালিম্পঙে আলাদা বাসের ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দেন তিনি।
সংখ্যালঘু, পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের ছাত্রীদের ৫৫ জনকে সাইকেল বিলি করা হয়। তফসিলি জাতি ও উপজাতির বাসিন্দাদের একাংশকে শংসাপত্র, জাতীয় পরিবার সহায়তা প্রকল্পে চেক, স্বামী বিবেকানন্দ স্বনির্ভর প্রকল্পের চেক বিলি করা হয়। কিষান ক্রেডিট কার্ড, মিনিকিট, পাম্প সেট-সহ নানা সুযোগ-সুবিধাও দেওয়া হয়। শিলিগুড়িতে তিনটি, জলপাইগুড়িতে তিনটি, কোচবিহারে চারটি ও আলিপুরদুয়ারে দু’টি অ্যাম্বুল্যান্স দেওয়া হয়। |