চোলাই খাওয়ার পরে অসুস্থ হয়ে মৃত্যু হল দু’জনের। হাবরার কুমড়া পঞ্চায়েতের বাঘাডাঙার পাড়ুইপাড়ার ঘটনা। মৃতদের নাম গৌরাঙ্গ রায় (৩৬) ও বাঁশি মোড়ল (৪০)। বাড়ি ওই এলাকাতেই। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, মদ খাওয়ার পরে বিষক্রিয়াতে মৃত্যু হয়েছে ওই দু’জনের। আরও চার জন অসুস্থ হয়ে জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় বলেন, “ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরেই মৃত্যুর কারণ বোঝা যাবে। ওই এলাকায় বেআইনি মদের কারবারিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এলাকার বিধায়ক তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “পুলিশকে বলা হয়েছে, যারা চোলাই বিক্রি করে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করতে। অসুস্থদের চিকিত্সার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” ইতিমধ্যেই চোলাই মদ বিক্রির অভিযোগে বৈকুণ্ঠ রায় নামে এক জনকে ধরেছে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, লক্ষ্মী পুজো উপলক্ষে বাঘাডাঙায় মেলা চলছিল। শুক্রবার সন্ধ্যায় সেখানে গানের জলসা ছিল। সেখানেই গিয়েছিলেন গৌরাঙ্গরা। সম্ভবত সেই সময়েই চোলাই ও বাংলা মদ খেয়েছিলেন তাঁরা। রাতে বুকে গলায় জ্বালা শুরু হয়। হাসপাতাল নিয়ে যাওয়ার আগেই গৌরাঙ্গের মৃত্যু হয়। পরে মারা যান বাঁশি। বাঁশির স্ত্রী মায়া বলেন, “বিহারে ঠিকাশ্রমিকের কাজ করত আমার স্বামী। পুজোয় বাড়ি এসেছিল। শুক্রবার সারাদিন বাড়িতেই ছিল। সন্ধ্যেবেলা আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সেই সময়েই হয়তো কেউ ওকে ডেকে নিয়ে গিয়ে মদ খাইয়েছে। রাতে বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্থানীয় চিকিত্সক এসে ইঞ্জেকশন দেন। কিন্তু তাতেও না কমলে সকালে হাবরা স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই মারা যায় আমার স্বামী।” এলাকার বাসিন্দা গৌরচন্দ্র পাড়ুই জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে এলাকায় চোলাই ও বাংলা মদের রমরমা চলছিল। গ্রামের লোক বাধা দিলে তাদের আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে শাসানো হয়। এলাকার মহিলারাও সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে চোলাইয়ের বিরুদ্ধে নেমেছিলেন। তখন চোলাইয়ের রমরমা খানিক কমলেও এখন আবার তা শুরু হয়েছে। গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য আবদুল গনি মণ্ডল বলেন, “অনেক দিন ধরেই চোলাইয়ের কারবার চলছে। পুলিশ ধরপাকড় করলে কিছু দিন বন্ধ থাকে। ফের শুরু হয়।” বাসিন্দাদের দাবি, এলাকার তিন জন এই কারবার করে। তবে এখন ব্যাগে মদ লুকিয়ে নিয়ে আসছে ওরা। বাইরে থেকে বোঝার উপায় নেই। পুলিশ জানিয়েছে, এলাকার ওই তিন চোলাই কারবারিকে অতীতেও গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা জেলও খেটেছে। তাদের বিরুদ্ধে ফের কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |