|
|
|
|
আটক আলুর ট্রাক, প্রশ্ন তুললেন ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানো বন্ধ করায় রাজ্য সরকারের উপর ক্ষুব্ধ রাজ্যের আলু ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অভিযোগ, মজুতদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে রাজ্য সরকার ব্যবসায়ীদের উপর অন্যায় চাপ সৃষ্টি করছে। সরাসরি আইনি নিষেধাজ্ঞা জারি না করে, সরকার ঘুরপথে ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানো আটকাতে চাইছে বলে অভিযোগ করেন ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের কাছে খোঁজ করছে কেন্দ্রীয় খাদ্য দফতরও।
রাজ্যের বাজারে আলুর দাম নিয়ন্ত্রণ করতে শুক্রবার কৃষি বিপনন মন্ত্রী অরূপ রায় ঘোষণা করেছিলেন, সরাসরি ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠাতে পারবে না ব্যবসায়ীরা। আলু অন্য রাজ্যে পাঠাতে এবার সরকারি অনুমতি লাগবে। এর পরই রাজ্যের সীমানাগুলিতে নজরদারি শুরু করে পুলিশ। শনিবার উত্তরবঙ্গের অসম সীমানার বারবিশা চেক পোস্টে আটকে দেওয়া হল কয়েকশো আলুর গাড়ি। দক্ষিণবঙ্গেও একটি লরি আটক করল আরামবাগ পুলিশ। সাড়ে ১৬ টন আলু-সহ লরিটি অন্ধ্রপ্রদেশ যাচ্ছিল। তারকেশ্বরের আলু ব্যবসায়ী রাম মাইতি বলেন, “সরকার যা করছে তা ভারতবর্ষের আইনে আছে বলে জানা নেই।” ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, আলু পাঠানোর উপর হঠাৎ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার ফলে তাঁদের ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে। মাঝপথে ট্রাক আটকে দেওয়ায় আলুতে পচন ধরার আশঙ্কাও করছেন তাঁরা।
কৃষি বিপনন মন্ত্রী অরূপ রায় অবশ্য এই সব অভিযোগের উত্তরে বলেন, “আমরা সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই এটা করছি। এর আগে আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠালে সরকার তো ভর্তুকি দিয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনুয়ায়ী সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। কৃষি সচিবের থেকে আলু ভিন্ রাজ্যে পাঠানোর ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে।”
কিন্তু ভিন্ রাজ্যে আলু রফতানি ঠেকাতে আদৌ কোনও আইন আছে কি না, প্রশ্ন তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। আলু ব্যবসায়ী নীরজ দাস বলেন, “সরকারি নিয়ম মেনে আমরা অসম, মেঘালয়, অরুণাচল, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরার মতো রাজ্যগুলিতে প্রতি বছর আলু পাঠাই। এ বছর আচমকা এমন সিদ্ধান্ত কেন? আলু পাঠানো বন্ধ করে দাম কমানো যাবে না।” তাঁর অভিযোগ, “পাইকারি দামের থেকে অনেক বেশি দরে খুচরো ব্যবসায়ীরা আলু বিক্রি করছেন। তার বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।”
ভিন্ রাজ্যে আলু পাঠানো বিষয়ে রাজ্যের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় খাদ্য দফতরের কাছে একটি অভিযোগ জমা পড়েছে। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিব জানান, বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রের তরফে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। আগামী সোমবার চিঠি দিয়ে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের মতামত চাওয়া হবে, জানান তিনি। কেন্দ্রীয় খাদ্য মন্ত্রকের কর্তারা জানিয়েছেন, এ ভাবে রাজ্য সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে না। দেশের ভিতরে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে প্রয়োজনীয় কর দিয়ে পণ্য সামগ্রী নিয়ে যাওয়া যায়। পর্যাপ্ত জোগান সত্ত্বেও কেবল দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য ভিন্ রাজ্যে পণ্য পাঠানো আটকানো যায় না অত্যাবশকীয় পণ্য আইনের অধীনে।
ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সরাসরি আলু পাঠানো নিষিদ্ধ না করে, কোথাও বলা হচ্ছে ট্রাকের দূষণ সংক্রান্ত কাগজপত্রে গোলমাল রয়েছে। কোথাও বলা হচ্ছে অতিরিক্ত মাল বোঝাই করা হয়েছে। পুলিশ কর্তারা ফোন করে ধমক দিচ্ছেন। যদিও পুলিশ কর্তাদের দাবি, তাঁরা সরকারি নির্দেশ মেনেই কাজ করছেন। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আকাশ মাগারিয়া বলেন, “সরকারি নির্দেশ পেয়েই আলুর গাড়ি আটকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|