অতীতের ভুলের মাসুল দিতে হচ্ছে, আবার সরব বুদ্ধদেব
ঞ্চায়েত এবং পুরভোটে খারাপ ফলের প্রেক্ষিতে বাম জমানায় দলের কৃতকর্মকেই ফের দুষলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পঞ্চায়েত এবং পুরভোটে তৃণমূলের বিরুদ্ধে যথেচ্ছ সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠলেও তাকেই বামেদের খারাপ ফলের একমাত্র কারণ বলে মানতে বুদ্ধবাবু নারাজ। বাম আমলে কোথাও কোথাও একাধিপত্য চালানোর মাসুলই এখন সিপিএমকে দিতে হচ্ছে দলের অন্দরে বুদ্ধবাবু এই তত্ত্বেরই প্রবক্তা। শনিবার বারুইপুরে সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কমিটির বৈঠকেও ফের তিনি ওই তত্ত্বই ব্যাখ্যা করেছেন।
এর আগে সেপ্টেম্বরে কলকাতায় প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে সিপিএমের সব ক’টি জেলার সম্পাদকমণ্ডলী এবং গণসংগঠনের নেতাদের নিয়ে বর্ধিত রাজ্য কমিটির অধিবেশনেও ওই কথাই বলেছিলেন বুদ্ধবাবু। এ দিনের বৈঠকেও তিনি বলেন, বাম জমানায় যে সমস্ত জায়গায় সিপিএম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতত, মূলত সেই সব জায়গাতেই এখন তৃণমূল সন্ত্রাস করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতছে। সে সব ক্ষেত্রে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে বিশেষ সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না। কারণ, অতীতে সিপিএমেরও ওই ধরনের কার্যকলাপ অনেক জায়গায় তাঁরা দেখেছেন। বুদ্ধবাবু এ ক্ষেত্রে বর্ধমান, আরামবাগ, গোঘাট, ক্যানিং প্রভৃতি জায়গার কথা বোঝাতে চেয়েছেন বলে দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা। বর্ধমান, চাকদহ-সহ ১২টি পুরসভার ভোটের পরে সিপিএমের রাজ্য কমিটির প্রথম বৈঠক হবে আগামী ৩ নভেম্বর। সেখানেও বর্ধমানে পুরভোট থেকে সরে দাঁড়ানোর পাশাপাশিই দলের অতীত একাধিপত্যের মাসুলের প্রসঙ্গও ওঠার সম্ভাবনা আছে।
এ দিন বুদ্ধবাবু দলীয় কর্মীদের একাংশের দুর্নীতির প্রসঙ্গও তোলেন। তিনি বলেন, প্রমোদ দাশগুপ্ত, প্রভাস রায় প্রমুখ নেতারা কখনও টাকা-পয়সা বা বড় বাড়ি করার জন্য দল করতেন না। তাই তাঁদের গ্রহণযোগ্যতা ছিল। মানুষ তাঁদের পাশে থাকত। ’৭২ সালে কংগ্রেস যে সিপিএম-কে এ রাজ্যে দুর্বল করতে পারেনি, তারও অন্যতম কারণ, তখন দলের স্থানীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল না। কিন্তু এখন দলের সর্ব ক্ষণের কর্মীদেরও অনেকে আর্থিক লাভ করছেন বা করার চেষ্টা করছেন। সে জন্যই দলের একাংশ এখন জনগণের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। এই প্রেক্ষিতেই বুদ্ধবাবুর বক্তব্য, যাঁরা কাজ করতে চান না, তাঁরা চলে যান। তবে একদা বুদ্ধ-ঘনিষ্ঠ এবং দুর্নীতির অভিযোগে অধুনা সিপিএমের যাদবপুরের একটি জোনাল কমিটির সম্পাদক পদ থেকে অপসারিত খোকন ঘোষদস্তিদার এ দিন ওই বৈঠকে বুদ্ধবাবুর মঞ্চের পাশেই ডান দিকে বসেছিলেন। যদিও বৈঠক শেষে মঞ্চ থেকে নামার পর যাদবপুর-১ এবং ২ নম্বর জোনাল কমিটির একাধিক নেতার সঙ্গে বুদ্ধবাবু কথা বললেও নিজের এক কালের ভোট ম্যানেজার খোকনের দিকে যাননি।
এ দিনের বৈঠকে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসুও ফের জানিয়ে দেন, দলীয় কর্মীদের দুর্নীতি এবং নিষ্ক্রিয়তা মেনে নেওয়া হবে না। তাঁর বক্তব্য, রাজ্যে যখন বামফ্রন্ট ক্ষমতায় আসে, তখন গোটা রাজ্যে সিপিএমের সদস্য ছিল ২৮ হাজার। এখন শুধু দক্ষিণ ২৪ পরগণাতেই দলের ১৩ হাজার সদস্য। এঁদের মধ্যে বেনোজল বেরিয়ে যাওয়াই ভাল। দলের দক্ষিণ ২৪ পরগনার নেতা রেজ্জাক মোল্লা এ দিন বৈঠকে যাননি। আগেও জেলায় বুদ্ধবাবুর নেতৃত্বে সাধারণ সভা তিনি এড়িয়ে গিয়েছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে রেজ্জাক জানিয়েছেন, কুষ্ঠিয়া রোডে বৃষ্টিবন্দি হয়ে থাকায় তিনি বৈঠকে যেতে পারেননি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.