|
|
|
|
ভাঙল বাড়ি, দুর্যোগের বলি চার জন |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
রাজ্য জুড়েই শুরু হয়েছে একটানা বৃষ্টি। জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্যোগে বেশ কিছু জায়গায় ঘরবাড়ি ভেঙে পড়েছে। শনিবার রাত পর্যন্ত দেওয়াল চাপা পড়ে ও জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে চার জনের।
এই দফায় দুর্যোগে মৃতদের মধ্যে তিন জনই পশ্চিম মেদিনীপুরের বাসিন্দা। শনিবার গোপীবল্লভপুর ১ ব্লকের বাসিন্দা চারুবালা সিংহ (৭২) ক্যানালের জলে ভেসে যান। পরে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। নারায়ণগড় ব্লকের বাকরাবাগ এলাকার হুলি সিংহও (২১) ক্যানালের জলে ভেসে গিয়েছেন। এ দিনই গড়বেতা ১ ব্লকের কেশিয়া গ্রামে নিজের মাটির বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে কনক কর্মকারের (৪৮)। ওই পরিবারের আরও দু’জন জখম হয়ে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি রয়েছেন। বৃষ্টির মধ্যে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন গড়বেতা ৩ ব্লকের মেটিয়াডহর গ্রামের সিকন্দর মণ্ডল। মেদিনীপুর শহরের স্কুল বাজার এলাকায় একটি বাড়ি ধসে জখম হন বৃদ্ধা সন্ধ্যারানি দে। তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। |
বৃষ্টিতে মেদিনীপুর শহরের স্কুলবাজারে ভেঙে পড়ল একটি পুরনো বাড়ি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
শুক্রবার রাতে বর্ধমানের গলসিতে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে মারা গিয়েছেন এক বৃদ্ধা। গলসির ভুঁড়ি গ্রামে মৃতের নাম দুলালী মাহাতো (৭৫)। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত থেকে টানা বৃ্ষ্টির জেরেই ভেঙে পড়ে দুলালীদেবীর বাড়ির মাটির দেওয়াল। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে জখম অবস্থায় উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
ক’দিন আগেই টানা বৃষ্টি এবং জলাধারের ছাড়া জলে পশ্চিম মেদিনীপুরে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। ক্ষতি হয়েছিল বহু ঘরবাড়ির। সেই ক্ষত সামলাতে না সামলাতেই ফের দুর্যোগ। গত দু’দিনের বৃষ্টিতে জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে কমবেশি ১৮টি ব্লক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। ৩৯৭৭টি বাড়ি সম্পূর্ণ ও ১৫৮৫৪টি বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দুর্ভোগে পড়েছেন সওয়া দুই লক্ষ মানুষ। দুর্গতদের সাহায্যার্থে জেলায় ৫টি মেডিক্যাল টিম কাজ করছে।
দু’দিনের বৃষ্টিতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার ও কাকদ্বীপ মহকুমাতেও বেশ কিছু বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দেওয়াল চাপা পড়ে জখম হয়েছেন কয়েকজন। প্রশাসন সূত্রে খবর, ডায়মন্ড হারবার মহকুমার মথুরাপুর ২ ব্লকে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। সেখানে শতাধিক মাটির বাড়ি ভেঙেছে। উপড়ে গিয়েছে বহু গাছ। মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে ৮ জন আহত হয়েছেন। রায়দিঘি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তাঁদের চিকিৎসা চলছে।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়রে বাইপাস মোড়ে জলের তোড়ে বাড়ি ভেঙে পড়ায় দেওয়াল চাপা পড়ে এক দম্পতি জখম হয়েছেন। টানা বৃষ্টিতে শুক্রবার রাত থেকে দক্ষিণ বাঁকুড়ায় বেশ কয়েকটি রাস্তাও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন খাতড়া, রাইপুর, সারেঙ্গা, রানিবাঁধ, বারিকুল ও সিমলাপাল ব্লকের বাসিন্দারা। |
|
|
|
|
|