আদালত থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়ার পর শনিবারই ছিল নারায়ণস্বামী শ্রীনিবাসনের প্রথম বোর্ড মিটিং। আর সেই ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক চেয়ার করেই আইপিএল থেকে পুণে ওয়ারিয়র্সকে সরকারি ভাবে ছেঁটে ফেলল শ্রীনি-র বোর্ড।
গত মার্চ মাস থেকেই বোর্ড বনাম সহারা গোষ্ঠীর লড়াই চলছে। যা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এ দিনই নেওয়া হল। রাতে আবার সহারা গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে বোর্ডকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
পুণে ওয়ারিয়র্স পরের বছরের আইপিএলের জন্য ১৭০.২ কোটি টাকা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি জমা না দেওয়ায় বোর্ডের এই সিদ্ধান্ত। বোর্ড সচিব সঞ্জয় পটেল এ দিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, “সহারা ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি না দেওয়ার অবস্থানে অনড় থাকায় ওয়ার্কিং কমিটি সর্বসম্মত ভাবে সহারা ফ্র্যাঞ্চাইজির চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।” বিবৃতিতে বোর্ড সচিব আরও বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের মার্চ থেকে পুণে ওয়ারিয়র্সের ২০১৪ আইপিএলের ব্যাঙ্ক গ্যারান্টি বকেয়া। গত ছ’মাসে বোর্ড পাঁচ বার সহারাকে বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করে চিঠি দেয়। শেষ চিঠি পাঠানো হয় ৮ অক্টোবর।”
সহারার চুক্তি বাতিল হয়ে গেলেও পুণের জায়গায় নতুন টিম নেওয়ার কথা এখনই ভাবছে না বোর্ড। চেন্নাইয়ে ফোন করে জানা গেল, ১৩ নভেম্বর আইপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের মিটিং। সেখানেই আইপিএল সেভেনের তারিখ এবং জায়গা ঠিক করা হবে। পুণে ওয়ারিয়র্সের জায়গায় শেষ পর্যন্ত আর কোনও টিম নেওয়া না হলে পরের আইপিএল আট দলেরই হবে।
বোর্ড এ দিন সরকারি ভাবে পুণে ওয়ারিয়র্সকে বাতিল করার কথা ঘোষণা করার পরই ই-মেল মারফত নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানায় সহারা। তাদের মূল অভিযোগ,
এক) ২০১১-তে আইপিএল-ফোরের আগে বলা হয়েছিল প্রতি বছর ৯৪টি ম্যাচ পাবে পুণে ওয়ারিয়র্স। কিন্তু পরে তা কমে গিয়ে প্রথমে হয় ৭৪টি। তার পর দু’টো ম্যাচ বেড়ে হয় ৭৬। তা সত্ত্বেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি কমায়নি বোর্ড।
দুই) প্রতি তিন বছর অন্তর সব ক্রিকেটারকে নিলামে তোলা হবে বলেও পরে প্রতি দলে চার ক্রিকেটার ধরে রাখার নীতি হঠাৎই সামনে আনা হয়। এর ফলে সচিন, ধোনি, ওয়াটসন, সহবাগের মতো ক্রিকেটারদের জন্য ঝাঁপাতে পারেনি সহারা।
তিন) সহারার দাবি, এক বছরের ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি না দেওয়ার যে কারণটা বোর্ড দেখাচ্ছে, সেটা স্রেফ নিজেদের গাফিলতি ঢাকা দেওয়ার অজুহাত ছাড়া আর কিছু নয়। কারণ সহারা ২০০১ থেকে বোর্ডকে এক হাজার কোটি টাকারও বেশি স্পনসরশিপ ফি দেওয়া ছাড়াও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি-ও দিয়েছে। কোনও দিন টাকা বকেয়া রাখেনি। নিজেদের সমস্যা নিয়ে সহারাশ্রী সুব্রত রায় বোর্ডের সঙ্গে বারবার আলোচনা করতে চেয়েছিলেন। বোর্ডের তরফে রাজীব শুক্লও আশ্বাস দিয়েছিলেন, আলোচনার মাধ্যমে সব সমাধান হয়ে যাবে। কিন্তু কিছুই হয়নি। উল্টে তার পরে বোর্ড বিশ্বাসঘাতকতা করে সহারার সঙ্গে। কোনও প্রতিশ্রুতিই রাখেনি তারা।
সব মিলিয়ে সচিন তেন্ডুলকরের বিদায়ী সিরিজের আগে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড সেই বিতকের্র জালেই আটকে রইল। |