শেষ পর্যন্ত টেলিফোনে কথা হল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বাংলাদেশের বিরোধী নেত্রী খালেদা জিয়ার। কিন্তু বরফ গলল না।
সোমবার সন্ধ্যায় খালেদাকে ফোন করে নিজের বাড়ি ‘গণভবনে’ নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান হাসিনা। বিএনপি কাল থেকে তিন দিনের যে হরতাল ডেকেছে, তা তুলে নেওয়ার আর্জিও জানান। কিন্তু রাতে বিএনপি সোমবার প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার আমন্ত্রণ খারিজ করে জানিয়ে দিল হরতাল হচ্ছে। আজ বিকেল থেকেই ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন লাগাতে শুরু করে বিএনপি ও তাদের জোটসঙ্গী জামাতে ইসলামির কর্মীরা। বেশ ক’জন মন্ত্রীর বাড়ির সামনে বোমাবাজি হয়। বিচারপতি, আমলা, ব্যবসায়ীদের বাড়ি, থানা এবং সংবাদমাধ্যমের দফতরের সামনেও বোমা ফাটানো হয়।
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে অবিলম্বে আলোচনায় বসার দাবি জানিয়েই কাল থেকে তিন দিনের হরতাল ডেকেছিল বিএনপি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালেই খালেদার বাড়িতে ফোন করেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর প্রেসসচিবের দাবি, সে ফোন বেজে গেলেও কেউ ধরেনি।
এর পরে সন্ধ্যা ছ’টা নাগাদ হাসিনা ফের ফোন করলে খালেদা নিজেই তা ধরেন। দুই নেত্রীর মধ্যে প্রায় ৩৭ মিনিট কথা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী নেত্রীকে সোমবার তাঁর বাসভবনে নৈশভোজের আমন্ত্রণ জানান। বলেন, সেখানেই তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করতে চান। খালেদা অন্য নেতাদের নিয়ে এলেও স্বাগত। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বলেন, “আলোচনার দাবিতে আপনারা হরতালের ডাক দিয়েছেন। আমি নিজে আপনাকে ও আপনার দলের নেতাদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। সোমবার আপানারা আসুন। তার আগে হরতাল প্রত্যাহার করে নিন।”
খালেদা জানান, তাঁর আমন্ত্রণ নিয়ে তিনি দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন, তার পরে সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেবেন। এই ফোনের পরে বিএনপি সাংবাদিক বৈঠক ডাকে। সাফ জানিয়ে দেয়, আগের ঘোষণা মতো মঙ্গলবার পর্যন্ত হরতাল চলবে। তার পরে আলোচনায় বসার কথা ভাববে বিএনপি। খালেদার প্রেসসচিব মারুফ কামাল সোহেল বলেন, বিরোধী নেত্রী প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। কিন্তু সোমবারের বদলে হরতালের পরে কোনও দিন তিনি আলোচনায় বলবেন। বিএনপির এক মুখপাত্র জানান, অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে আগেই সরকারের প্রস্তাব কাছে জমা দিয়েছেন। সরকার সেই প্রস্তাব পুরোপুরি মেনে নিলে তবেই হরতাল প্রত্যাহার করা হত। কিন্তু হাসিনা সরকার সে প্রস্তাব এখনও মানেনি। |