মাসে চার লক্ষেরও বেশি মানুষ যাতায়াত করেন এই স্টেশন দিয়ে। কেউ কেউ দূরপাল্লার ট্রেন ধরলেও বেশির ভাগেরই নিত্য যাওয়া-আসা লোকালে। কিন্তু আসানসোল, পুরুলিয়া বা ঝাড়খণ্ড থেকে আসা ভিড়ে ঠাসা ট্রেনগুলিতে যাতায়াত রীতিমতো কষ্টসাধ্য। তাই বহু দিন ধরে দুর্গাপুর থেকে হাওড়া লোকাল ট্রেনের দাবি তুলেছেন বাসিন্দারা।
সম্প্রতি দুর্গাপুর শিল্পশহর থেকে এক জোড়া হাওড়াগামী লোকাল চালুর দাবিতে সাড়ে সাত হাজার বাসিন্দার স্বাক্ষর করা চিঠি পাঠানো হয়েছে রেলমন্ত্রীকে। জঙ্গীপুরের সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ও দুর্গাপুরবাসীর তরফে পৃথক চিঠি পাঠিয়েছেন রেল মন্ত্রী মল্লিকার্জুন খারগেকে। তিনি জবাবি চিঠিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
২০০৭-এর ৩০ জুন বাঁকুড়া রোড রেল উড়ালপুলের উদ্বোধনে দুর্গাপুরে আসেন তৎকালীন রেলমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব। তখনই দুর্গাপুর থেকে হাওড়া ও শিয়ালদহের লোকাল ট্রেনের দাবিতে তাঁকে স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল এবং রেল নিত্যযাত্রী সমিতি। সভামঞ্চ থেকে লালুপ্রসাদও পরবর্তী রেল বাজেটে দুর্গাপুর-হাওড়া লোকালের প্রস্তাব দেওয়ার আশ্বাস দেন। কিন্তু তা হয়নি। |
ব্যস্ত সময়ে ট্রেনে ওঠা দায়। ছবি: বিশ্বনাথ মশান। |
২০০৮ সালের মাঝামাঝি তৎকালীন রেলওয়ে স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান বাসুদেব আচারিয়া দুর্গাপুরে জানান, ওই বছরের অগস্ট থেকে দুর্গাপুর-হাওড়া লোকাল ট্রেন চালুর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে রেল। কিন্তু সেই আশ্বাসও বাস্তববায়িত হয়নি।
গত কয়েক বছরে একের পর এক স্কুল, কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, কারখানা গড়ে উঠেছে। কর্মসূত্রে বাইরে থেকে আসা লোকজনের সংখ্যাও বেড়েছে পাল্লা দিয়ে। এছাড়া শহর থেকেও প্রতিদিন হাজার হাজার বাসিন্দা কাজেকর্মে কলকাতায় যান। কিন্তু যথেষ্ট লোকাল ট্রেন না থাকায় মুশকিলে পড়েন বাসিন্দারা। দুর্গাপুরের উপর দিয়ে যে ট্রেনগুলি যায় তার বেশিরভাগই আসে আসানসোল, পুরুলিয়া, কখনও ঝাড়খণ্ড থেকে। ফলে বসার জায়গা পান না যাত্রীরা। সঙ্গে শিশু বা বয়স্কেরা থাকলে সমস্যা আরও বাড়ে। সম্প্রতি তাই দুর্গাপুর থেকে একটি ভায়া মেন ও একটি ভায়া কর্ড হাওয়া লোকাল ট্রেন চালু করার দাবিতে বাসিন্দারা রেল মন্ত্রীর কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। জঙ্গীপুরের সাংসদ অভিযিঢ মুখোপাধ্যায় দুর্গাপুরে এলে তাঁর কাছেও অনেকে সাহায্য চান। আবেদনকারীদের এক জন সীতাংশুশেখর দাস বলেন, “দুর্গাপুর থেকে লোকাল ট্রেন চালু হলে বাঁকুড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশের মানুষজনও উপকার পাবেন।” সেই মতো রেল মন্ত্রীকে বিষয়টি জানিয়ে চিঠি দেন অভিজিৎবাবু। রেলমন্ত্রী খাড়গে অভিজিৎবাবুকে চিঠি দিয়ে জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই চিঠিতে আশায় বুক বেঁধেছেন দুর্গাপুরবাসীও। |