শিক্ষাক্ষেত্র শিক্ষাবিদের হাতে থাকবে। যদি অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে তবে তখনই রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হবে। নতুবা কখনওই সেখানে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ করবেন না। বৃহস্পতিবার মালদহের পুরাতন সার্কিট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে এ ভাবেই শিক্ষাক্ষেত্র রাজনীতি মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এ দিন মালদহ জেলার দুই মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র, কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী ও গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন উপাচার্য গোপালচন্দ্র মিশ্রকে পাশে বসিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “বাম জামানায় রাজ্যে পরীক্ষা ও ভর্তি ব্যবস্থা শেষ হয়ে গিয়েছিল। সেই ব্যবস্থাকে তুলে আনার চেষ্টা করছি। ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ করতে রাজ্যের সমস্ত কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইনে ভর্তি শুরু করা হয়েছে।” শিক্ষাক্ষেত্র রাজনীতি মুক্ত করার কথা বললেও সেটা বাস্তবে কায়র্কর করা যে খুব কষ্টকর তা অবশ্য স্বীকার করেছেন শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, “শিক্ষাক্ষেত্র রাজনীতি মুক্ত হবে আশা করা ঠিক নয়। আমাদের মতো রাজ্যে রাজনীতিকে বাদ দিয়ে কোনও কাজ করা সম্ভব নয়। তবে এই প্রবণতা থেকে আমাদের সবাইকে আস্তে আস্তে বার হয়ে আসতে হবে।”
অভিযোগ স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের পযর্টন মন্ত্রীর সঙ্গে বিরোধের জেরে গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অচিন্ত্য বিশ্বাস ইস্তফা দিয়েছিলেন। এর পরই বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল। ফের যাতে বিশ্ববিদ্যালয় অচালাবস্থায় মুখে না পড়ে তা দেখতে সার্কিট হাউসে জেলার দুই মন্ত্রী ও উপাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করেন ব্রাত্য। |
সরকারি সূত্রের খবর, বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী সর্তক করেছেন, গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও রকম আন্দোলন যাতে না হয়, উপাচার্যকে কোনও ভাবেই যাতে কোনও বিষয়ে হেনস্থা না করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনও কাজে যাতে কেউ বাধা না দেন। বৈঠকের শেষে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “জেলার দুই মন্ত্রী নতুন উপাচার্যকে সমস্ত রকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন। উপাচার্যকে পরামর্শ দিতে পারি। কিন্তু পরিকল্পনা বিন্যাস করবেন উপাচার্য।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে কাউন্সিলে সিংহভাগ সদস্যই জেলার বাইরের বাসিন্দা। উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলে স্থানীয় শিক্ষাবিদদের রাখার পরামর্শ দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী এ দিন বলেন, “শিক্ষার কোনও ভূগোল হয় না। উপাচার্যকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউন্সিলে স্থানীয় বিশিষ্ট শিক্ষাবিদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য বলেছি। কাউন্সিল নতুন ভাবে সাজাবেন উপাচার্যই। আমরা কোনও রকম ভাবে হস্তক্ষেপ করব না। উপাচার্যকে প্রতি মাসে কাউন্সিলের বৈঠক করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
এ দিন শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য শিক্ষা বিস্তারে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। রাজ্য সরকার রাজ্যে ৩২ সরকারি কলেজ তৈরি করতে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে অন্তত ৬টি সরকরি কলেজের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। অথচ ১৯৪৭ সাল থেকে ২০১১ সাল পযর্ন্ত রাজ্যে মাত্র ৮টি সরকারি কলেজ তৈরি হয়েছিল। আগামী নভেম্বর মাস থেকে রাজ্যে সরকারি অনুমোদিত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে বদলি নীতি চালু হচ্ছে। বদলি নীতির সমস্ত কাগজপত্রও তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর পাশাপাশি আইনের দিক থেকে সুরক্ষিত ও সুনিশ্চিত হওয়ার পরেই খুব দ্রুত প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের রেজাল্ট প্রকাশিত করা হবে। |