অস্ত্র কারখানার হদিস মিলল উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁয়। মঙ্গলবার রাতে মিনাখাঁ থানার দক্ষিণ বারগা গ্রামের বাসিন্দা ইউসুফ মোল্লা ওরফে হাঁসার বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ লক্ষাধিক টাকার অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম আটক করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ওই বাড়ি থেকে একটি রিভলভার এবং আটটি রিভলভারের ব্যারেল উদ্ধার করা হয়েছে। বসিরহাটের এসডিপিও অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কারখানাটি সিল করে দেওয়া হয়েছে। অস্ত্র তৈরির কারবারে জড়িত অভিযোগে ইউসুফ মোল্লা ওরফে হাঁসা এবং তার সঙ্গী আব্দুল বারিক মোল্লার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে।” |
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, খুন-ডাকাতি, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তোলাবাজি-সহ নানা অভিযোগ রয়েছে ইউসুফের বিরুদ্ধে। ২০০৯ সালে দক্ষিণ বারগা গ্রামের তৃণমূল সদস্য মুজিবর মোল্লার ছেলের মৃতদেহ উদ্ধার হয় দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলা থানা এলাকায়। ওই ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ইউসুফকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বেশ কিছুদিন কারাবাসের পরেমাস কয়েক হল জামিনে ছাড়া পেয়ে গ্রামে ফেরে সে। এর পরে সঙ্গী আব্দুল বারিককে নিয়ে অস্ত্র তৈরি করতে শুরু করে।
সম্প্রতি মিনাখাঁ থানার ওসি গৌতম মিত্র খবর পান দক্ষিণ বারগা গ্রামের একটি বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র তৈরি হচ্ছে। এর পর মঙ্গলবার রাত দেড়টা নাগাদ গৌতমবাবুর নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে ইউসুফের বাড়ি। তার আগেই অবশ্য পুলিশ আসার খবর পেয়ে পালিয়ে যায় ইউসুফ ও আব্দুল বারিক। ওই অস্ত্র কারখানা থেকে ট্রান্সফরমার, মোটর, ডাইস মেশিন, রেঞ্জ, প্লাস, ছেনি, রঙিন কাচ, ওয়েল্ডিং মেশিন, লোহার পাত ইত্যাদি উদ্ধার করে। পাওয়া যায় একটি রিভলভারও। তল্লাশি চালিয়ে বাড়িতেই একটি ধানের গোলা থেকে বেশ কয়েকটি রিভলভার তৈরির ব্যারেল। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, ইউসুফ ও তার সঙ্গী মূলত দুই ২৪ পরগনার সীমান্তবর্তী এলাকায় দুষ্কৃতীদের কাছে ওই সব অস্ত্র বিক্রি করত।
উত্তর ২৪ পরগনায় তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক ও খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “দিন কয়েক আগে আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানিয়েছিলাম যে মিনাখাঁ, হাড়োয়া, সন্দেশখালি ও শাসনে সিপিএমের নেতা কর্মীদের কাছে প্রচুর পরিমাণে আগ্নেয়াস্ত্র মজুত রয়েছে। ওই সব অস্ত্র উদ্ধারে তাঁকে বলেছিলাম। তারপরই পুলিশ মিনাখাঁয় এই অস্ত্র কারখানার হদিস পায়।” সিপিএমের পক্ষ থেকে অবশ্য খাদ্যমন্ত্রীর এই অভিযোগকে মনগড়া বলা হয়েছে। তাঁদের দাবি, এই ঘটনায় সঙ্গে কোনওভাবেই দলের কেউ জড়িত নন। এটা একেবারেই দুষ্কৃতীদের কাজ। |