ভিসা বিতর্ক রেখেই চিনের সঙ্গে চুক্তি
সীমান্ত নিয়ে দু’দেশের মধ্যে উত্তেজনা কখনও বেড়েছে, কখনও কমেছে। উঠেছে সেনা অনুপ্রবেশের অভিযোগ। ভারত-চিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সেই চাপা উদ্বেগ কাটাতে বেজিংয়ে আজ সক্রিয় হলেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। ভারত এবং চিনের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল ন’টি সার্বিক চুক্তি।
কিন্তু ভিসা নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারল না দু’দেশ। স্টেপল ভিসা নিয়ে চিন অনড় থাকায় ভারতও তার কড়া বিরোধিতা করেছে। যদিও এই বৈঠকের আগে ভিসা বিতর্ক মেটার ইঙ্গিত মিলেছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে চিনের তরফে ভিসা নীতিতে পরিবর্তনের কোনও সম্ভাবনা দেখা যায়নি বলেই এ বিষয়ে ধীরে চলো নীতি নিতে চাইছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং চিনের প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং আজ টানা তিন ঘণ্টা বৈঠকের পরে চার পাতার সীমান্ত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি (বিডিসিএ) স্বাক্ষর করেন। তার মূল বার্তা, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর শান্তি বজায় রাখা। সিদ্ধান্ত হয়েছে, একটি দেশকে আক্রমণের জন্য অন্য দেশের সেনা সক্রিয় হবে না।

বেজিংয়ে মনমোহনকে গার্ড অব অনার। সঙ্গে চিনা প্রধানমন্ত্রী লি খ্যছিয়াং।
চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে আরও একটি বিষয় প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর সেনা টহল বন্ধ করা হবে। এর আগে বেশ কয়েক বার ভারতের মাটিতে চিনা সেনার অনুপ্রবেশের অভিযোগ উঠেছে। গত এপ্রিলেও লাদাখের দেপসাং উপত্যকায় নিয়মকানুনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে তাঁবু ফেলেছে চিনা সেনা। এ বার সেই অনুপ্রবেশ প্রসঙ্গে বিতর্ক নিরসনে উদ্যোগী হলেন দু’দেশের প্রধানমন্ত্রী। যদি তা সত্ত্বেও ধরনের অভিযোগ ওঠে, সংশ্লিষ্ট দেশ সে বিষয়ে জবাবদিহি করবে।
মনমোহনের সফরে দু’দেশের ভিসা সংক্রান্ত বিষয়টি গুরুত্ব পাবে বলে আগে থেকেই মনে করা হচ্ছিল। ভিসা নিয়ে কথা বলার আগ্রহ দেখিয়েছিল চিনও। কিন্তু এর আগে কাশ্মীর এবং অরুণাচল প্রদেশকে নিজেদের এলাকা হিসেবে দেখিয়ে সেখানকার লোকজনকে স্টেপল ভিসা দেওয়ার মতো পদক্ষেপ করেছে চিনা দূতাবাস। যা নিয়ে চূড়ান্ত বিরক্ত ভারত। বৈঠকের পরে প্রধানমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, চিনা নাগরিকদের স্বচ্ছন্দ যাতায়াতের কথা ভেবে ভিসা সংক্রান্ত জটিলতা দূর করতে চায় ভারত। খ্যছিয়াংকে সেই বার্তাই তিনি দিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, চিনও এই ব্যাপারে সমান আগ্রহী হবে। কিন্তু কাশ্মীরের পরে সাম্প্রতিক কালে অরুণাচল প্রদেশের দু’জনকে চিন স্টেপল ভিসা দেওয়ায় ভারত এই নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চায় না। ভিসা নিয়ে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে বিশদ কী কথা হয়েছে, জানাতে চাননি ভারতের বিদেশসচিব সুজাতা সিংহ। তাঁর মন্তব্য, “অরুণাচল প্রদেশ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এর বেশি কিছু এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।”

দু’দিনের চিন সফরে লি খ্যছিয়াংয়ের সঙ্গে মনমোহন সিংহ।
মনমোহন এবং লি জানিয়েছেন, বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। বিডিসিএ-র আওতায় দু’দেশের সেনা সদর দফতরের মধ্যে একটি হটলাইন চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে। চার হাজার কিলোমিটার প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার বিভিন্ন অংশে সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে থাকা অফিসাররা কোথায় বৈঠক করবেন, ঠিক হয়েছে তা-ও। দু’দেশের সীমান্ত পার করা নদী নিয়েও নতুন চুক্তি হয়েছে। ব্রহ্মপুত্রে চিন নতুন বাঁধ তৈরি করছে, এমন অভিযোগও বড় মাথাব্যথা ভারতের। সেই উদ্বেগ কমাতে এবং বন্যা সংক্রান্ত তথ্য আদাপ্রদানের জন্য এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ছবি: এএফপি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.