কর্মাধ্যক্ষ নির্বাচন নিয়ে দ্বন্দ্ব
র্মাধ্যক্ষ নিবার্চন নিয়েও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া এড়াতে পারল না তৃণমূল। মঙ্গলবার ছিল পুরুলিয়া জেলা পরিষদের বিভিন্ন স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ নিবার্চন। কোন স্থায়ী সমিতিতে কে কর্মাধ্যক্ষের দায়িত্ব পাবেন, তা নিয়ে দড়ি টানাটানি চলছিল দলে। এমনকী, নিজের গোষ্ঠীর লোক যাতে পূর্ত, বন ও ভূমি, খাদ্য, জনস্বাস্থ্যের মতো বিশেষ কয়েকটি দফতরের দায়িত্ব পান, সেই লক্ষ্যে কয়েক জন তৃণমূল নেতা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত সক্রিয় ছিলেন বলে দল সূত্রেই জানা যাচ্ছে। শেষ পর্যন্ত রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ওই নির্বাচন হয়েছে।
জেলা তৃণমূল সূত্রের খবর, মূলত পূর্ত ও পরিবহণ এবং জনস্বাস্থ্য দফতরকে নিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। পূর্ত দফতরে হাজারি বাউরি এবং জনস্বাস্থ্যে পুষ্প বাউরির নাম ওঠে। অথচ এই দুই দফতরের প্রধান দাবিদার ছিলেন যথাক্রমে জেলা তৃণমূলের কাযর্করী সভাপতি তথা জেলা পরিষদের দলনেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিদায়ী জেলা পরিষদে কংগ্রেসের টিকিটে নির্বাচিত অধ্যক্ষ উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়। বস্তুত, ন’টি দফতরের স্থায়ী সমিতির বেশির ভাগেই এমন কয়েক জন সদস্যকে রাখা হয়, যাতে নিজের অনুগামীদের কর্মাধ্যক্ষ পদে বসানো যায়। কিন্তু, জেলা পরিষদের সভাধিপতি সৃষ্টিধর মাহাতোর ‘পছন্দের’ সদস্যদের প্রধান কয়েকটি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ করা নিয়ে দলে ফাটল চওড়া হয়। এমনকী, সৃষ্টিধরবাবুর সঙ্গে জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী শান্তিরাম মাহাতোর মধ্যে ‘ঠান্ডা লড়াই’ শুরু হয়ে যায়।
পুরুলিয়া জেলা পরিষদের ক্যান্টিন-কর্মীদেরও শাড়ির রং বদলে গেল।
সভাধিপতির নির্দেশে মেরুন শাড়ির বদলে চালু সবুজ শাড়ি। —নিজস্ব চিত্র।
পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে রাজ্য নেতৃত্বকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। মঙ্গলবার কর্মাধ্যক্ষ নিবার্চনের আগের দিন রাতে কলকাতা থেকে তাপস রায় পুরুলিয়ায় এসে শান্তিরামবাবুর সঙ্গে আলোচনায় বসেন। আলোচনার পরে অন্তত ছ’টি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ পদে জেলা সভাপতির মতামত ও পছন্দ গুরুত্ব পায়। বাকি দফতরগুলির ক্ষেত্রে অবশ্য সভাধিপতির মতই নেওয়া হয়। পূর্ত দফতরের ক্ষেত্রে রাজ্য নেতৃত্ব সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়কেই মনোনীত করেন। তাপসবাবু বিভিন্ন দফতরে কর্মাধ্যক্ষ হিসেবে কারা দায়িত্ব পাবেন, তার খামবন্দি তালিকা জেলা নেতৃত্বের হাতে তুলে দেন। কোন সদস্য কার নাম প্রস্তাব করবেন, কে সেই নাম সমর্থন করবেন, সবই ঠিক করে দেওয়া হয় তাতে।
মঙ্গলবার কর্মাধ্যক্ষ নিবার্চন সেই মোতাবেকই হয়েছে। জেলা সভাপতি ও সভাধিপতি দু’জনেই অবশ্য বলেছেন, কর্মাধ্যক্ষ নিবার্চন নিয়ে তাঁদের মধ্যে কোনও মতান্তর নেই। শান্তিরামবাবু বলেন, “কে কোন দফতর পাবেন, তা রাজ্য নেতৃত্বই ঠিক করে দিয়েছেন।” তাপস রায়ের পুরুলিয়া আসা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “উনি এসেছিলেন বৈঠক করতে। তা ছাড়া, আগেই আমাদের কাছ থেকে রাজ্য নেতৃত্ব বিভিন্ন দফতরের স্থায়ী সমিতির নির্বাচিত সদস্যদের তালিকা চেয়েছিলেন। আমরা তা পাঠিয়েও দিয়েছিলাম। সেই মোতাবেকই সব হয়েছে।” সৃষ্টিধর মাহাতোও বলছেন, “আমাদের মধ্যে কোনও মতপার্থক্য নেই। সব কিছুই ঠিক হয়েছে সবার সঙ্গে আলোচনা করে।”
এ দিন জেলা পরিষদ প্রেক্ষাগৃহে অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রকাশ পাল এবং পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের আধিকারিক শুভময় ভট্টাচার্যের উপস্থিতিতে ন’টি দফতরের কর্মাধ্যক্ষ মনোনীত হন। তাঁরা হলেন পূর্ত ও পরিবহণে সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশে উত্তম বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃষি, সেচ ও সমবায়ে শক্তিপদ মাহাতো, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও তথ্য-ক্রীড়ায় সুষেণচন্দ্র মাঝি, শিশু ও নারী উন্নয়ন এবং জনকল্যাণ ও ত্রাণ দফতরের নিয়তি মাহাতো, বন ও ভূমি সংস্কারে হলধর মাহাতো, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদে হাজারি বাউরি, খাদ্য সরবরাহ দফতরে সারদাদেবী মুর্মু এবং ক্ষুদ্রশিল্প, বিদ্যুৎ ও অচিরাচরিত শক্তি দফতরের দায়িত্ব সরিতা তুরি পান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.