মহাষ্টমীর রাতে মণ্ডপে ধর্ষণ করে খুন
পাঁচ দিনের পুলিশি হেফাজতে ধৃত দুই
হাষ্টমীর রাতে এক মহিলাকে নির্যাতনের পরে খুনের ঘটনায় ধৃত দুই অভিযুক্তকে ফের পাঁচ দিনের হেফাজতে নিল গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ। সোমবার বুনিয়াদপুরে গঙ্গারামপুর মহকুমা আদালতে ধৃত ওই পুজো মণ্ডপের ঢাকি এবং নৈশপ্রহরীকে হাজির করানো হয়। পুলিশ বিচারকের কাছে পুনরায় সাত দিনের জন্য তাদের হেফাজতে রাখার আবেদন করে। এ দিন তার তীব্র বিরোধিতা করেন ধৃতদের আইনজীবী রঞ্জন পাণ্ডে। তিনি আদালতের শুনানির সময়ে অভিযোগ করেন, ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে পুলিশ যৌন নির্যাতন মামলা দায়ের করেনি। পাশাপাশি, রঞ্জনবাবু আদালতে দাবি করেন, ধৃতরা ঘটনায় যুক্ত না হলেও তাঁদের সামনে রেখে পুরো বিষয়টি পুলিশ ধামাচাপা দিতে চাইছে। সেই সময়ে সরকারি আইনজীবী জনার্দন পাণ্ডে ওই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। সরকারি আইনজীবী তদন্তের স্বার্থে ধৃতদের পুলিশ হেফাজতের রাখার পক্ষে সওয়াল করেন। এ দিন ভারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট উমা সিংহরায় বন্দ্যোপাধ্যায় ধৃত দুজনকে আরও ৫ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ২৬ অক্টোবর তাদের আদালতে হাজির করানোর নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
মহকুমা আদালতে। নিজস্ব চিত্র।
নবমীর দিন, গত ১৪ অক্টোবর সকালে পুলিশ গঙ্গারামপুরের কালদিঘি এলাকার একটি ক্লাবের পুজো মণ্ডপের ভিতর থেকে ২৬ বছরের এক মহিলার অর্ধনগ্ন দেহ উদ্ধার করে। তিনি এই এলাকারই বাসিন্দা ছিলেন। সে দিনই মণ্ডপের ঢাকি এবং নৈশ প্রহরীকে পুলিশ গ্রেফতার করে। অষ্টমীর রাতে তার উপর নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে মহিলার বাড়ির লোকজনদের অভিযোগ। নিহত মহিলার জেঠার অভিযো, অষ্টমীর রাতে তাঁর ভাইঝিকে গণধর্ষণ করে খুনের লিখিত অভিযোগ গঙ্গারামপুর থানায় দায়ের করলেও তা জমা নিয়ে প্রতিলিপি দেয়নি পুলিশ। তাই তিনি পুলিশের ভূমিকা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ দিন রাজ্য পুলিশের উত্তরবঙ্গের আইজি শশীকান্ত পুজারী বলেছেন, “ময়না তদন্তের রিপোর্টে যা আছে, সেই মতো ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে পুনর্তদন্ত হবে।” তবে দক্ষিণ দিনাজপুরের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, “মামলাটি আদালাতে বিচারাধীন। তাই বিষয়টি আদালতই ভাল বুঝবে। আমি কোনও মন্তব্য করব না।”
নিহতের পরিবারের লোকজন ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ময়না তদন্তের রিপোর্টে নিহত মহিলার বুকে, ঘাড়ে, হাতে সহ দেহের বেশ কিছু জায়গায় কামড় এবং আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে। মহিলাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় বলে পুলিশেরও সন্দেহ। এতদ্সত্ত্বেও মামলায় যৌন নির্যাতনের ধারা কেন যুক্ত হয়নি তা নিয়ে নিহতের আত্মীয়-স্বজন ও বাড়ির লোকজনদের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন।
এ দিন দুপুর দুটো নাগাদ ধৃত ঢাকি এবং নৈশপ্রহরীকে মহকুমা আদালতে তোলা হয়। মামলার কেস ডায়েরি পুলিশ আদালতে পেশ না করায় আদালতেই প্রশ্ন ওঠে। আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তকারী ফের সিডি এনে আদালতে পেশ করেন। সওয়ালে ধৃতদের পক্ষের আইনজীবী রঞ্জন পাণ্ডে বিচারকের কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, “এর আগে ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার এবং অস্ত্র উদ্ধারের আবেদন করে পুলিশ আদালতের কাছে ৭ দিনের পুলিশ হেফাজত নিয়েছিল। কিন্তু ওই সময় কেটে গেলেও পুলিশ মামলার কাজে কোনও অগ্রগতি করতে পারেনি। আদালতের কাছে তিনি অভিযোগ করেন, ঘটনায় নিহত মহিলার উপর যৌন নিগ্রহের কোনও মামলা রুজু করেনি পুলিশ। ৩০২ ও ৩৪ ধারায় খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে তারা।” পাশাপাশি, আদালতে রঞ্জনবাবু দাবি করেন, ঘটনার রাতে ঢাকি অনুকূল নট্ট তার ৭-৮ বছরের ছেলেকে নিয়ে মণ্ডপে শুয়ে ছিলেন। ধৃতদের মধ্যে অন্য জন নৈশপ্রহরী বৃদ্ধ ভবতোষ গায়েন প্রায় ১০ বছর ধরে কালদিঘির ওই ক্লাবের দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত। ৬৫ বছরের ভবতোষবাবু নির্দোষ বলে আদালতের কাছে দাবি করেন রঞ্জনবাবু। সরকারি আইনজীবী অবশ্য দাবি করেন, ধৃতদের বিরুদ্ধে স্পষ্ট তথ্য-প্রমাণ রয়েছে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.