তথ্যকেন্দ্র কিংবা সার্কিট হাউসের হল নয়। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের প্রশাসনিক বৈঠক হবে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-ভানু মঞ্চে। আজ, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত দু’দফায় ওই বৈঠক হওয়ার কথা। সেখানে জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, উত্তর এবং দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের কর্তা ও জনপ্রতিনিধিরা যোগ দেবেন। মূলত প্রশাসনিক বৈঠক হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজকর্ম, সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরার সুযোগও মিলবে বলে আশা করছেন কর্তৃপক্ষ। উপাচার্য সমীর দাস বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে আসছেন জেনে আমরা উৎসাহিত। আমরা স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছি।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরের খবর, অফিসার-কর্মী সংগঠনের একাংশ নানা সমস্যার কথা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরারও প্রস্তুতি নিয়েছেন। তৃণমূল জমানায় রাজ্যের একাধিক নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ শুরু হয়েছে। সে জন্য অর্থ বরাদ্দও হচ্ছে। পাশাপাশি, পুরানো বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা ব্যাপারেও মুখ্যমন্ত্রীকে অবহিত করতে চান তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার-কর্মীদের একাংশ জানান, বাম আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় দেড় কোটি টাকা নয়ছয়ের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। তা নিয়ে রেজিস্ট্রার দিলীপ সরকারের বিরুদ্ধে এফআইআর হলেও চার্জশিট দেওয়া নিয়ে টালবাহানার অবিযোগ ওঠে। মহাকরণে ক্ষমতাসীন হয়ে সে কথা জানার পরে মুখ্যমন্ত্রী উদ্যোগী হওয়ায় দ্রুত চার্জশিট দাখিল হয়। বর্তমানে রেজিস্ট্রার সাসপেন্ড হয়ে রয়েছেন। তাঁর জায়গায় স্থায়ী রেজিস্ট্রার নিয়োগের জন্যও বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার-কর্মীদের একাংশ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানানোর ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। যদিও সিপিএম প্রভাবিত একাধিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত রেজিস্ট্রারকে পুনর্বহালের দাবিও তোলা হয়েছে।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকান্ডের ব্যাপারে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাই তিনি গোড়া থেকেই নিজেও উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামগ্রিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার চেষ্টা করছেন। তাই তাঁর এবারের বৈঠক ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের চত্বরে করা হয়েছে। বিরাট ক্যাম্পাস, গাছপালা ঘেরা পরিবেশ মুখ্যমন্ত্রীর ভাল লাগবে।” শহরের কেন্দ্রে দীনবন্ধু মঞ্চে এর আগে তিনি একবার প্রশাসনিক বৈঠক করেছেন। এ বার তাই ওই জায়গায় বন্দোবস্ত না করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসেই ব্যবস্থা করতে তৎপর হন গৌতমবাবু। বস্তুত, মুখ্যমন্ত্রী যাতে তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরের সময়ে প্রতিবারই নতুন কোনও এলাকায় যান, সেই বিষয়টি মাথায় রাখা হয় বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যেখানেই যান, সেখানে উন্নয়নের কর্মকান্ডে বাড়তি গতি আসে। যেমন মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগেই দার্জিলিঙে তাকদায়, লামাহাটায় নয়া পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে। তাই এবার মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতিক্রমে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখানে রাজনীতির কোনও জায়গা নেই।” |