উপযুক্ত পরিষেবা দেওয়ার পরিবর্তে রোগীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করার অভিযোগ উঠল রামপুরহাট হাসপাতালের দুই নার্সের বিরুদ্ধে। ব্যপারে রোগীর পরিবারের তরফে হাসপাতাল সুপার এবং হাসপাতালের নার্সিং সুপারের কাছে অভিযোগ জানানো হয়েছে। সোমবারের ঘটনা। নার্সিং সুপারের কাছে রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে এবং ওই রিপোর্ট পাওয়ার পরে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতাল সুপার হিমাদ্রি হালদার। তবে হাসপাতাল সুপারের দাবি, “যতটুকু জানি রোগীটিকে জরুরি প্রতিষেধক দেওয়ার প্রয়োজন ছিল না। রুটিন মাফিক সকালে প্রতিষেধক দেওয়ার সময় রোগীর লোকজন সময় মতো প্রতিষেধক নিয়ে আসেননি। যার ফলে নাম ধরে ডাকার সময় ওই রোগীকে প্রতিষেধক দেওয়া যায়নি। অন্য রোগীদের প্রতিষেধক দেওয়ার পরে ওই রোগীকে প্রতিষেধক দেওয়া হয়েছে।”
হিমাদ্রিবাবু বলেন, “১০০ জন রোগী। সেই সঙ্গে রোগীর সঙ্গে উপস্থিত লোকজনদের সঙ্গে কথা বলা, তাঁরা ওষুধ ঠিকঠাক এনেছেন কি না পরীক্ষা করা সমস্ত কিছুই করতে হয় ওয়ার্ডে কর্তব্যরত মাত্র দু’জন নার্সিং স্টাফকে। রোগীর চাপে অনেক ক্ষেত্রে সময় মতো নার্সিং স্টাফরা হাতের কাছে ওষুধ, প্রতিষেধক না পেলে দেরি তো হবেই। যতজন রোগী তার তুলনায় স্টাফ কম হওয়ার জন্য, এই ধরনের অসুবিধা বা রোগীর আত্মীয়-পরিজনদের ক্ষোভ-বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় হাসপাতাল কর্মী থেকে নার্সিং স্টাফ, চিকিৎসক সকলকেই। সব কিছু সামাল দিয়ে মাথা ঠান্ডা রেখে তাঁদের কাজ করতে হচ্ছে।”
এ দিকে, এ দিনই রোগীর আত্মীয়পরিজন তাঁদের বেশ কিছু দাবি পেশ করার জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও হাসপাতাল সুপারকে পাননি। শেষ পর্যন্ত তাঁরা হাসপাতালের সুপারের দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক কাজলকান্তি দাসের সঙ্গে দেখা করে যান রোগীর আত্মীয়রা। সেই সঙ্গে কর্তব্যে গাফিলতির অভিযোগ ওঠা ঝুম্পা সরকার ও অনীমা ভুঁইমালি নামে ওই দুই নার্সের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, ভবিষ্যতে বৃহত্তর আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছেন তাঁরা। রামপুরহাট পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মাদ্রাসা পাড়ার বাসিন্দা আলাউদ্দিন আলি (অলোক) জানান, ১৭ অক্টোবর সকালে তাঁর তেরো বছরের মেয়েকে জ্বরের উপর্সগ নিয়ে রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। অভিযোগ, “পরের দিন রাত থেকে ১৯ তারিখ সকাল পর্যন্ত হাসপাতালে কর্তব্যরত দুই নার্স ঝুম্পা সরকার, অনীমা ভুঁইমালি রোগীকে যথার্থ চিকিৎসা পরিষেবা দেননি। ফলে রোগীর অবস্থার অবনতি হচ্ছিল। বার বার বলা হলেও তাঁরা তাঁদের কাজ করেনি। এ ব্যাপারে সুপারের কাছে ১৯ অক্টোবরই লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছে।” তাঁর আরও অভিযোগ, “হাসপাতালের ন্যায্য মূল্যের দোকানে যে সমস্ত ওষুধ পাওয়া যায়, সেই সমস্ত ওষুধ হাসপাতালের চিকিৎসকেরা অধিকাংশ রোগীদের ক্ষেত্রে লেখেন না। অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা এমন ওষুধ লিখে দেন সেগুলি বাইরে থেকে কিনতে বাধ্য করা হচ্ছেন রোগীর বাড়ির লোকেরা।” সুপার হিমাদ্রি হালদার বলেন, “এরকম হয়ে থাকলে চিকিৎসকদের সতর্ক করা হবে এবং বিষয়টি নিয়ে রোগীকল্যাণ সমিতিতে আলোচনা করা হবে।” এ দিকে, যে দুই নার্সের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে, তাঁরা এখন ছুটিতে আসেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের নার্সিং সুপার মীনা দাস। তিনি বলেন, “তাঁদের সঙ্গে কথা বলে হাসপাতাল সুপারকে রিপোর্ট দেওয়া হবে।” দুই নার্স ঝুম্পা সরকার ও অনীমা ভুঁইমালি অবশ্য বলেন, “যা বলার নার্সিং সুপার ও হাসপাতাল সুপারকে বলব।” |