মহকুমা পরিষদ তৃণমূলের দখলে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি
|
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উত্তরবঙ্গ সফরের ঠিক আগে বামেদের হটিয়ে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ আনুষ্ঠানিক ভাবে দখল করল তৃণমূল।
২০০৯-এর জুলাইয়ের গত নির্বাচনে সাত সদস্যের ওই পরিষদে সিপিএমের চার জন এবং কংগ্রেসের তিন জন জেতেন। কংগ্রেসের তিন জন সম্প্রতি তৃণমূলের যোগ দেন। এ দিন ওই তিন জনের মাধ্যমেই পরিষদের সিপিএম সদস্য তথা সহকারী সভাধিপতি জ্যোতি তিরকির নাম সভাধিপতি পদে প্রস্তাব করায় তৃণমূল। সিপিএমের তিন জন অনুপস্থিত থাকায় সোমবার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাধিপতি নির্বাচিত হন জ্যোতিদেবী। পাশাপাশি, এ দিনই শিলিগুড়ি পুরবোর্ডেও ফের কর্তৃত্ব কায়েমের দিকে আরও এক ধাপ এগিয়েছে তৃণমূল। পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে নান্টু পাল অপসারিত হওয়ার পরে ভোটাভুটিতে তৃণমূলের প্রার্থী অরিন্দম মিত্র জিতেছেন।
এই জোড়া সাফল্যের পরে দার্জিলিং জেলা তৃণমূলেরা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “মহকুমা পরিষদ ও শিলিগুড়ি পুরসভাদু’টি জায়গাতেই উন্নয়ন বন্ধ ছিল। মহকুমা পরিষদে বামেরা ক্ষমতায় থাকলেও, আড়াল থেকে কংগ্রেস সমর্থন করে। আবার পুরসভায় কংগ্রেসকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করেন বামেরা। এই অশুভ আঁতাঁত যাতে না থাকে, সে জন্য শিলিগুড়ির গ্রাম ও শহরে দীর্ঘদিন ধরেই দাবি রয়েছে। সেই চাহিদা পূরণ হয়েছে।”
পক্ষান্তরে মেয়াদ ফুরানোর ৯ মাস আগে তৃণমূলের মহকুমা পরিষদ দখলের ঘটনাকে ‘গণতন্ত্রের পক্ষে লজ্জার’ বলে মন্তব্য করেছেন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, “গায়ের জোরে মহকুমা পরিষদ দখল করল তৃণমূল। হুইপ অমান্য করে জ্যোতিদেবী এ দিন সভায় যান। তাঁর বাড়িতে দু’জন পঞ্চায়েত সদস্য হুইপের নির্দেশ পৌঁছে দেন। দলত্যাগ বিরোধী আইনে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানাব।” দলের তরফে জ্যোতিদেবীর বিরুদ্ধে দলত্যাগ বিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
জ্যোতিদেবী বলেন, “আমি সিপিএম ছাড়িনি। দলের নির্দেশও পাইনি। উন্নয়নের বন্ধ হয়েথাকা কাজ শুরু করতে চাই।” জ্যোতিদেবী জানান, সহ-সভাধিপতি হবেন তৃণমূলের আইনুল হক। আইনুল বলেন, “জ্যোতিদেবী সিপিএমের সঙ্গে রয়েছেন কি না, তা সাম্প্রতিক কাজকর্মে বুঝিয়ে দিয়েছেন। এর বেশি কিছু বলব না।” পঞ্চায়েত দফতর সূত্রের খবর, সিপিএমের টিকিটে জয়ী জ্যোতি তিরকির তৃণমূলের সমর্থনে সভাধিপতি পদে বসতে বাধা নেই। বামেদের তরফে দলত্যাগ বিরোধী আইনে ব্যবস্থা নিতে জেলাশাসকের কাছে আবেদন করতে হবে। সেই আবেদন নিয়ে শুনানি হবে। তার পরে জেলাশাসকের পক্ষ থেকে কোনও নির্দেশ জারি হলে তার বিরুদ্ধে পঞ্চায়েত দফতরে আবেদনের সুযোগও থাকবে জ্যোতিদেবীর। সব মিলিয়ে ছ’মাস কেটে যেতে পারে। |