খাবারে নজর রাখতে সিসিটিভি, বাগডোগরার স্কুল এল তথ্যচিত্রে
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শুধু জল দিয়ে হাত ধুয়ে মিড ডে মিলের খাবার নিতে দৌড়েছিল ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্র। পথ আগলে দাঁড়াল অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া, সে দাঁড়িয়ে থেকে সাবান দিয়ে হাত ধুইয়ে দিল ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রটিকে।
মিড ডে মিল রান্নার সময়ে এক রাঁধুনী মাথায় কাপড় বাঁধতে ভুলে গিয়েছিলেন। ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় সে ছবি দেখেই প্রধান শিক্ষকদের ঘর থেকে কড়া নির্দেশ পৌঁছে গেল মিড ডে মিলের হেঁশেলে। মাসের কয়েকটি দিনে কী ধরনের সতর্কতা নিলে স্কুলে আসা কোনও সমস্যা নয়, নিচু ক্লাসের ছাত্রীদের তা বুঝিয়ে বলছেন উঁচু ক্লাসের ছাত্রীরা। সেই সঙ্গে একটি বেসরকারি সংস্থার দেওয়া স্যানেটারি ন্যাপকিন বিনামূল্যে বিলি করা হচ্ছে। |
মিড ডে মিল রান্নার কাজ চলছে শিলিগুড়ির মুরালিগছ হাইস্কুলে। —নিজস্ব চিত্র। |
শিলিগুড়ির মুরালিগছ স্কুলের এমনই নানা টুকরো ছবি দেখানো হবে একটি আন্তর্জাতিক সভায়। শৌচব্যবস্থার উপর পঞ্চম দক্ষিণ এশীয় সম্মেলন শুরু হচ্ছে। ১০ মিনিটের তথ্যচিত্রে থাকবে মুরালিগছ স্কুলের পড়ুয়াদের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার নানা পদ্ধতি। গত তিন দিন ধরে স্কুলের নানা দৃশ্য ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছে ইউনিসেফের প্রতিনিধি দল। মধ্যপ্রদেশের একটি স্কুলের সঙ্গে, এ রাজ্যের মুরালিগছ স্কুলটিও স্থান পেয়েছে ওই তথ্যচিত্রে।
ইউনিসেফ-এর তরফে রাজ্যে ‘স্যানিটেশন’ প্রকল্পের ভারপ্রাপ্ত শ্যাম নারায়ণ দাভে জানান, বাগডোগরার কাছে ওই স্কুলটি সমবেত উদ্যোগ, পরিচ্ছন্নতা এবং নান্দনিকতা, এই তিনটি বিষয়েই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। তাই ‘যামিনী রায়’ পুরস্কারের জন্যে স্কুলটির নাম প্রস্তাব করা হয়েছে জেলা থেকে। এ বছর থেকে তিনটি স্কুলকে ওই পুরস্কার দেবে রাজ্য সরকার ও ইউনিসেফ। “শুদ্ধ পানীয় জল, পরিষ্কার শৌচাগার শিশুদের অধিকার,” বলেন দাভে।
স্কুলে ঢুকলে বোঝা যায়, কেন মুরালিগছ নজর কেড়েছে। পাচকদের সকলের হাতে গ্লাভস। মুখে কাপড় বাঁধা। স্কুলে পড়ুয়ার সংখ্যা প্রায় দেড় হাজার। পানীয় জলের কল রয়েছে ৬৪টি। রান্নাঘরে সিসিটিভি বসানো। রান্নাঘরে খাবারের পাত্র খোলা রয়ে গেল কিনা, পোকার উৎপাত হচ্ছে কিনা, তার দিকে নজর রাখতে এই ব্যবস্থা। বাসনপত্র যেখানে ধোয়া হয় সেখানেও ক্যামেরা রয়েছে। পড়ুয়ারা খাওয়ার আগে হাত ধুচ্ছে কিনা, রান্নার সময়ে কর্মীরা পরিচ্ছন্ন রয়েছেন কিনা তা দেখার জন্য ৩৩ জন ছাত্রের একটি দলও গড়া হয়েছে।”ইউনিসেফের রাজ্যের পরামর্শদাতা পলাশ সারেঙ্গি বলেন, “ দেশের অন্য কোনও স্কুলে একই ধরনের কর্মকাণ্ড চলছে কি না তা খোঁজ নেওয়া হবে।” |