নিম্নমানের মশলা ও সস্তার উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে, এই অভিযোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের আপত্তিতে রবিবার দুপুর থেকে কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে পুরুলিয়ার মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালের কর্মীদের আবাসন সংস্কারের কাজ। রবিবার দুপুরে ওই অভিযোগে হাসপাতাল চত্বরে বিক্ষোভও দেখান এলাকাবাসী। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক মানবেন্দ্র ঘোষ স্পষ্ট বলেছেন, “মানের সঙ্গে কোনও ভাবে আপস করা যাবে না। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার কী ভাবে সংস্কারের কাজ করছেন, তা জানতে দফতরের বাস্তুকার পাঠিয়ে পরীক্ষা করানো হবে।”
মানবাজার গ্রামীণ হাসপাতালে সম্প্রতি গ্রুপ ‘সি’ ও গ্রুপ ‘ডি’ কর্মচারীদের আবাসনগুলি মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর থেকে মেরামতি বাবদ দুই পর্যায়ে ৪২ ও ৪৩ লক্ষ অর্থাৎ মোট ৮৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। গ্রুপ ‘ডি’ কর্মীদের একতলা বিশিষ্ট ৮টি কোয়ার্টার অপেক্ষাকৃত পুরনো হওয়ায় প্লাস্টার ছাড়িয়ে নতুনভাবে প্লাস্টার করা এবং নতুন দরজা-জানলা বসানোর কথা। গ্রুপ ‘সি’ কর্মচারীদের ভবনগুলি অপেক্ষাকৃত ভাল থাকায় যেখানে প্রয়োজন, শুধুমাত্র সেই অংশের মেরামতি হওয়ার কথা। কর্মচারীদের একাংশের অভিযোগ, মেরামতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। তাদের আরো অভিযোগ মেরামতিতে ৮৫ লক্ষ টাকা ব্যয় করা অপেক্ষা ওই টাকায় নতুন ভবন তৈরি হতে পারত নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের কিছু স্বাস্থ্যকর্মী বলেন, “মেরামতিতে যে ধরনের মশলা ও অন্য উপকরণ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা নিয়ে আমরা আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু ঠিকাদার আমাদের আপত্তি শোনেনি।”
রবিবার দুপুরে হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশও কাজের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। তাঁদের ক্ষোভ, “পুরনো প্লাস্টার ছাড়িয়ে সংস্কারের নামে যে-ভাবে কাজ হচ্ছে, তা বেশদিন টিকবে না। আমরা প্রতিবাদ করলেও আমাদের আপত্তি শোনা হচ্ছে না।” বিক্ষোভস্থলে উপস্থিত থাকা মানবাজার ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি মানবেন্দ্র চক্রবর্তীর দাবি, “আমরা মশলার নমুনা সংগ্রহ করেছি। যে অনুপাতে সিমেন্ট ব্যবহার করার নির্দেশ, তা করা হচ্ছে না। এ ছাড়াও পাইপ এবং অন্যান্য সরঞ্জাম নিম্নমানের। দফতরের বাস্তুকারকে দিয়ে কাজের মান পরীক্ষা করার দাবি জানিয়েছি।” সংশ্লিষ্ট কাজের ঠিকাদারদের পক্ষে শান্তিময় সেন, ফাল্গুনী মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, “আমরা নিয়ম মেনেই কাজ করছি।” অন্য ঠিকাদার আনন্দময় বন্দ্যোপাধ্যায় মন্তব্য করতে চাননি। |