অবৈধ ভাবে এ দেশে প্রবেশ করার অভিযোগে এক শিশু-সহ চার বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার স্বরূপনগর থানার ডাকবাংলো মোড়ে একটি অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতর থেকে ওই চার জনকে পুলিশ ধরে ফেলে।
পুলিশের দাবি, দালাল মারফত অবৈধ ভাবে এ দেশে ঢোকার পরে ওই অ্যাম্বুল্যান্সে চেপেই তাদের কলকাতায় পৌঁছনোর পরিকল্পনা ছিল। জেরায় ধৃতেরা সে কথাই জানিয়েছে। চালককে গ্রেফতার করা ছাড়াও অ্যাম্বুল্যান্সটিকেও আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ৩টে নাগাদ গোপন সূত্রে ওই বাংলাদেশিদের খবর মেলে। জানা যায়, কয়েক হাজার টাকার বিনিময়ে কয়েকজন বাংলাদেশ থেকে আমুদিয়া সীমান্ত পেরিয়ে এখানকার একটি অ্যাম্বুল্যান্সে করে কলকাতার উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। খবর মিলতেই স্বরূপনগর থানার পুলিশের একটি দল ডাকবাংলো মোড়ের কাছে আগে থেকেই পৌঁছে যায়। এর পর সেখানে অ্যাম্বুল্যান্সটি পৌঁছতেই সেটিকে আটক করা হয়। স্বরূপনগর থানার ওসি প্রসেন মিত্র জানান, ধৃতেরা প্রথমে স্বীকার না করলেও জেরায় তাঁরা নিজেদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে জানিয়েছেন।
যে অ্যাম্বুল্যান্সে করে ওই বাংলাদেশিদের নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, সেটি প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক মোস্তফা বিন কাসেমের বিধায়ক তহবিল থেকে দেওয়া। যার জেরে ঘটনায় রাজনৈতিক রং লেগেছে। তৃণমূল ব্লক সভাপতি রমেন সর্দারের অভিযোগ, “এ দিনের ঘটনা থেকে স্পষ্ট যে সিপিএম বিধায়কের দেওয়া ওই অ্যাম্বুল্যান্স বাংলাদেশিদের এ দেশে পাচারের কাজে লাগানো হত। এতে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।”
তৃণমূলের বক্তব্য উড়িয়ে দিয়ে সিপিএমের স্বরূপনগর জোনাল সম্পাদক হামালউদ্দিন আহমেদ বলেন, “এর সঙ্গে রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। অসুস্থ রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য দলের প্রাক্তন বিধায়ক মোস্তফা বিন কাসেম বিধায়ক তহবিল থেকে আমুদিয়া বাজার এলাকার একটি ক্লাবকে ওই অ্যাম্বুল্যান্সটি দান করেছিলেন। এখন যদি কেউ তা অবৈধ কাজে ব্যবহার করেন, তাহলে তার দায় প্রাক্তন বিধায়কের হবে কেন!” তাঁরাও ওই অ্যাম্বুল্যান্সচালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
স্বরূপনগর সীমান্তে মানুষ কিংবা নানা রকমের সামগ্রী পাচার কোনও নতুন ঘটনা নয়। সম্প্রতি সোনা পাচারের সময়ে এক ব্যবসায়ী ধরা পড়েছিল। এ ছাড়া দিনকয়েক আগেই বিশেষ ধরনের মাদক পাচার করতে গিয়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল কয়েকজন স্কুলছাত্রীও।
জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “সীমান্ত এলাকায় বিভিন্ন গাড়িতে করে অবৈধ ভাবে এ দেশে বাংলাদেশিদের ঢুকিয়ে দেওয়া ও কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে তাদের পৌঁছে দেওয়ার একটি চক্র অত্যন্ত সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পুলিশ বা বিএসএফ যাতে ধরতে না পারে, তার জন্য সম্প্রতি ওই সব কাজে অ্যাম্বুল্যান্স ব্যবহার করা হচ্ছে বলে আগেই অভিযোগ ছিল। এ দিনের ঘটনায় তারই প্রমাণ মিলল।” |