১৯৮৭ সালে আসানসোল স্টেডিয়ামের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে গিয়েছিলেন বামফ্রন্টের ক্রীড়া মন্ত্রী সুভাষ চক্রবর্তী। কিন্তু ২৬ বছর পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ স্টেডিয়াম গড়ে ওঠেনি। এমনকী মাঠ, গ্যালারি থেকে ইন্ডোর স্টেডিয়াম সবেরই হাল বেহাল। তবে সম্প্রতি কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক স্টেডিয়ামের হাল ফেরাতে বেশ কিছু পরিকল্পনা নিয়েছেন। স্টেডিয়ামের উন্নয়নে বেশ কিছু টাকা বরাদ্দও হয়েছে। |
ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের দশ বছর পরে খোলা মাঠে খেলা শুরু হয়। গড়া হয় স্টেডিয়াম কমিটি। ২০০১ সালে ন্যাশনাল সিনিয়র উইমেন্স ক্রিকেট প্রতিযোগিতা আয়োজিত হয় এই স্টেডিয়ামে। সেই প্রতিযোগিতা ঘিরেই প্রথম স্টেডিয়াম তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু এখনও তা অসম্পূর্ণ। স্টেডিয়াম কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, একটি প্যাভেলিয়ন তৈরি হলেও তার গ্যালারি এখনও অসম্পূর্ণ। ক্রীড়া ক্ষেত্র ৫০ মিটারের, যা মহকুমাস্তরের প্রতিযোগিতার জন্যও যথেষ্ট নয়। ফুটবল ও ক্রিকেট খেলাও হয় একই মাঠে। এছাড়া তার দিয়ে ঘেরা প্রাচীর দু’দিকে প্রায় ১০০ ফুট খুলে গিয়ে অরক্ষিত পড়ে রয়েছে। ফলে কোনও বড় ম্যাচ দেখানো সম্ভব হয় না। কাঁটাতার না থাকার সুযোগে এলাকার কিছু মানুষ প্রায় সারাদিনই স্টেডিয়ামে ঘুরে বেড়ান বলে অভিযোগ। এছাড়া বাইরের চারটে দল তাদের নিজেদের মাঠ থাকা সত্বেও স্টেডিয়ামে নিয়মিত খেলা অনুশীলন করছে বলে জানা গিয়েছে। ফলে স্টেডিয়ামের সবুজ ধরে রাখা যাচ্ছে না। মাঠ কাদায় ভরা এবং ক্রিকেট পিচেরও ক্ষতি হচ্ছে। এছাড়া তিনটি গ্যালারির মাথায় শেড না থাকায় রোদ, বৃষ্টিতে দর্শকদের নাকাল হতে হয় বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে।
আউটডোরের মতো ইন্ডোর স্টেডিয়ামের হালও বেশ করুণ। শব্দগ্রহণ ব্যবস্থা নেই, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নেই, ভেতরটা অপরিস্কার। অভিযোগ অজস্র। এছাড়া স্টেডিয়ামের মাঝামাঝি চারটি পিলার গাঁথা, ফলে গ্যালারির অর্ধেক দর্শক খেলা দেখতে পান না এবং এলাকার কমবয়েসি ছেলেরা মাঝেমধ্যেই ঢিল ছুঁড়ে স্টেডিয়ামের কাচ ভেঙে দেয় বলেও অভিযোগ। |
সমস্যা রয়েছে সুইমিং পুল নিয়েও। স্টেডিয়াম কমিটি সূত্রে জানা গিয়েছে, তিন বছর আগে সুইমিং পুল নির্মাণের কাজ শেষ হলেও এডিডিও এখনও পুলের দায়িত্ব কমিটিকে দেয়নি। বহিরাগত দু’এক জন সেখানে মাছ চাষ করতে শুরু করেছিলেন বলেও অভিযোগ। বিষয়টি নিয়ে স্টেডিয়াম কমিটি থানায় অভিযোগও দায়ের করেছে। দিন কয়েক আগে স্টেডিয়াম কমিটির মিটিংয়ে এসে কৃষিমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন, চার কোটি টাকা ব্যায়ে আন্তর্জাতিক মানের প্যাভিলিয়ন নির্মাণ করা হবে। ৯০ ফুট দৈঘ্যের ক্রীড়া ক্ষেত্র তৈরী করা হবে। ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় ভেঙে যাওয়া তারের প্রাচীর সংস্কার করা হবে। ১১ হাজার টাকা খরচ করে নতুন পিচ তৈরী হবে। এছাড়া ঘাস কাটার যন্ত্র কেনার জন্য ৩০ হাজার টাকা, সুইমিং পুলের আধুনিকীকরণের জন্য ১২ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কারণ নিদেন পক্ষে ৫০ মিটার লম্বা সুইমিং পুল না হলে রাজ্য স্তরের কোনও প্রতিযোগিতাও করা যাবে না। ইন্ডোর স্টেডিয়ামেও খুব শীঘ্র কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। মন্ত্রীর আশ্বাসেই বুক বেঁধেছেন আসানসোলের ক্রীড়াপ্রেমীরা।
|