খড়্গপুর গ্রামীণ |
চাঁদার জুলুম, শিক্ষকের বাড়ি ভাঙচুরের নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
শিক্ষক দম্পত্তির উপর চাঁদার জুলুমের অভিযোগ উঠল খড়্গপুর গ্রামীণ থানার মাওয়া গ্রামে। দাবি মতো চাঁদা না দেওয়ায় স্থানীয় ক্লাবের ছেলেরা বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে বলে অভিযোগ। খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় অভিযোগ দায়েরের পরেও রবিবার রাতে ফের ভাঙচুর চলে। ঘটনার বিহিত চেয়ে সোমবার দুপুরে খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হন ওই শিক্ষক।
খড়্গপুর-২ ব্লকের মাওয়া গ্রামে বাড়ি সবং নারায়ণবাড় উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বাংলার শিক্ষক সনাতন পাত্রের। তাঁর স্ত্রী প্রতিমাদেবী খড়্গপুরের নিমপুরার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা। ১৯৯২ সাল থেকে পাড়ার পুজোর উদ্যোক্তা ‘মাওয়া সর্বজনীন দুর্গোসব কমিটি’কে চাঁদা দিয়ে আসছেন তাঁরা। এ বছর চাঁদার অঙ্ক বাড়ানোর দাবি করেন উদ্যোক্তারা। স্বামী-স্ত্রী দু’জনের নামে ২৩০ টাকার দু’টি রসিদ কাটা হয়। সনাতনবাবুর দাবি ছিল, একটি বাড়িতে একজনই চাঁদা দেবেন। এর পর থেকেই চোখরাঙানি চলছিল বলে অভিযোগ। ৩৩০ টাকা চাঁদা দেওয়ার পরেও অশান্তি কমেনি। |
|
অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ জানাতে শিক্ষক দম্পতি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
শিক্ষক দম্পতির অভিযোগ, গত ১৫ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের শোভাযাত্রা যাওয়ার সময় তাঁদের বাড়ির বেড়া ভেঙে ফুলের বাগান নষ্ট করা হয়। চুরি যায় একটি সাইকেল। খড়্গপুর গ্রামীণ থানায় ১৭ অক্টোবর চাঁদার জুলুমের মামলা রুজু করেন তাঁরা। তাতে পুজো কমিটির সভাপতি, সম্পাদক-সহ ৭জনের নাম ছিল। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই রবিবার রাতে এলাকায় যান খড়্গপুর গ্রামীণ থানার ওসি অভিজিৎ বিশ্বাস। তিনি স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে পুজো কমিটির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। ফোনে কথা হয় সনাতনবাবুর সঙ্গেও। এরপরই রাতে সনাতনবাবুর বাড়ি ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ। তখন দম্পতির ৭ বছরের ছেলেও জখম হয়।
সোমবার সকালে ছেলেকে নিয়ে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন সনাতনবাবু। তারপর অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের দফতরে লিখিত অভিযোগ জানান। সনাতনবাবুর কথায়, “পুজো হোক আমরাও চাই। প্রতিবছরই চাঁদা দিই। একই বাড়িতে দু’জন চাঁদা দেব না বলার পর থেকেই আমাদের উপর আক্রমণ চলছে। পুলিশে জানানোয় অত্যাচারের মাত্রা বেড়েছে।” পুজো কমিটির সভাপতি দুর্গাপদ ঘোষ অবশ্য ভাঙচুরের অভিযোগ মানেননি। তাঁর বক্তব্য, “এক বাড়িতে যতজন চাকরি করেন প্রত্যেকের থেকেই চাঁদা নেওয়ার নিয়ম রয়েছে। তবে ওই শিক্ষকের অভিযোগ মিথ্যে। বিসর্জনের সময়ে একটি গাড়ি বাড়ির বেড়ায় ধাক্কা মারলে কিছুটা ক্ষতি হয়। কেউ ইচ্ছে করে তা করেনি। আর রবিবার রাতে পুলিশ আসার পরে আমরা সকলে রাতে ওঁর বাড়ি ফিরেছিলাম। এর পর কী হয়েছে জানি না।”
এ দিন খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর অফিসে ছিলেন না। তবে ওই শিক্ষক তাঁর দফতরে অভিযোগ জমা দিয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছুটিতে আছেন। অভিযোগ জমা পড়লে নিশ্চয়ই তদন্ত হবে।” |
|