আসন্ন হাওড়া পুর-নির্বাচনে ৫০টির মধ্যে ৪১টি আসনেই নতুন মুখ আনল বামফ্রন্ট। হাওড়া জেলা বামফ্রন্টের তরফে সোমবার অবশ্য ৪৮ জন প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে বাকি দু’টি আসনেও নতুন মুখই আনা হবে বলে বাম নেতৃত্বের বক্তব্য।
পুরনো প্রার্থীদের মধ্যে মেয়র মমতা জয়সবাল, ডেপুটি মেয়র কাবেরী মৈত্রের নাম থাকলেও ওজনদার আরও নামই প্রার্থী তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে। দুই মেয়র পারিষদ দেবাশিস ঘোষ ও সমীর সাহার নাম যেমন নেই, তেমনই সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শ্রীদীপ ভট্টাচার্যের স্ত্রী তথা পুরসভার চেয়ারপার্সন স্বপ্না ভট্টাচার্য এবং প্রাক্তন সাংসদ স্বদেশ চক্রবর্তীর মেয়ে সম্পূর্ণা চক্রবর্তীর নামও নেই তালিকায়। তিনি হাওড়া পুরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। এ বারে পুরনো প্রার্থী রয়েছেন মাত্র ৯ জন।
বস্তুত, নভেম্বরে যে পাঁচ পুরসভার ভোট আসছে, তার মধ্যে হাওড়াতেই জোরালো লড়াইয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বাম নেতৃত্ব। গত জুনে হাওড়া লোকসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ফলের নিরিখেও তৃণমূল-বাম তুল্যমূল্য। এই পরিস্থিতিতে বৈতরণী পার হওয়ার জন্য নতুন মুখেই ভরসা রাখতে চেয়েছেন বাম নেতৃত্ব। আগামী লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী তালিকা তৈরির সময় পুরনো না নতুন, কোন মুখে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে, তা-ই নিয়ে সিপিএমের অন্দরে বিতর্ক চলছে। সেই সময়ে হাওড়ার পুরভোটে ঢালাও নতুন মুখ আনার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। নতুন মুখের পরীক্ষা হাওড়ায় কিছুটা সফল হলেও লোকসভা ভোটে পুরনো মুখ ঝেড়ে ফেলার জন্য সিপিএমের ভিতরেই চাপ বাড়বে।
হাওড়া জেলা বামফ্রন্ট সূত্রের খবর, নতুন মুখে যেমন বাজি ধরতে চাওয়া হয়েছে, তেমনই বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে অনেকে প্রার্থী হতেও না-চাওয়ায় এক ধরনের বাধ্যবাধকতাও কাজ করেছে। গত কয়েক মাসে শৃঙ্খলাভঙ্গ ও বিভিন্ন বেআইনি কার্যকলাপে যুক্ত থাকার অভিযোগে বেশ কয়েক জন সক্রিয় সদস্যকে বরখাস্ত করেছেন সিপিএম জেলা নেতৃত্ব। তা নিয়েও দলের অন্দরে জটিলতা আছে। এই পরিস্থিতিতে পুরভোটে নতুন প্রার্থীই বেশি করে ময়দানে নামাচ্ছে বামেরা।
হাওড়া জেলা বামফ্রন্টের আহ্বায়ক তথা সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদারের বক্তব্য, “অন্য কোনও বিষয় নয়। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোটে জিততে গেলে নতুন মুখের যোগ্য ব্যক্তিকে দরকার। তাই এ বারে অধিকাংশ নতুন মুখ আনা হয়েছে।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যা থাকার জন্যই দু’টি আসনে এখনও প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা যায়নি। তবে সেখানেও নতুন মুখই আনা হবে।” বাম সূত্রের খবর, ৫০ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে মনোনীত প্রার্থীরা এখনও মত না দেওয়ার ফলেই এ দিন ওই দু’টি আসনে প্রার্থীর নাম প্রকাশ করা হয়নি। মোট ৫০টি আসনের মধ্যে সিপিএম ৩৬, ফরওয়ার্ড ব্লক ৬, সিপিআই ৩, আরসিপিআই ২, আরএসপি ২ এবং জনতা দল সেকুলার একটি আসনে লড়বে। ২৬ অক্টোবর প্রার্থীরা মনোনয়ন জমা দেবেন।
|