|
|
|
|
গরম কাদার স্রোত, আতঙ্ক
নিজস্ব সংবাদদাতা • গুয়াহাটি |
পাহাড়ের চূড়া ফেটে গলগলিয়ে বের হচ্ছে গরম কাদার স্রোত, কালো ধোঁয়া। আতঙ্কে তা-ই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাচ্ছেন মণিপুরের উখরুলের তুসম গ্রামের বাসিন্দারা। ওই ‘আগ্নেয়গিরি’ বিস্ফোরণের ভয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়েছে আশপাশের সড়কগুলিতেও। ঘটনাস্থলে তদন্তকারী দল পাঠিয়েছে প্রশাসন। প্রাথমিকভাবে অনুমান, ঘটনাটি বড় ধরনের ধসও হতে পারে।
১৩ অক্টোবর, নবমীর রাতে প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে কেঁপেছিল তুসম। এলাকার মানুষ জানান, গ্রামের কাছেই একটি পাহাড়ের চূড়া থেকে বড় বড় পাথরের টুকরো ছিটকে পড়তে থাকে। তারপর উত্তপ্ত কাদার স্রোত পাহাড়ের ঢাল বেয়ে গ্রামের দিকে নামতে শুরু করে। পাথর ফেটে বের হতে থাকে গরম জলও। জেলা সদর থেকে ওই গ্রামের দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। দূর্গম পথ দিয়ে সেখানে খবর পৌঁছতে সপ্তাহখানেক সময় লেগে যায়। উখরুল প্রশাসন জানিয়েছে, উত্তপ্ত কাদা, পাথর, গরম জলের স্রোত এখনও বের হচ্ছে। পরিবার নিয়ে পালিয়েছেন গ্রামবাসীরা।
এলাকার বিধায়ক এম কে প্রেসো জানান, মায়ানমারের একেবারে গা-ঘেঁষা সেই গ্রাম। স্থানীয় মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ওই পাহাড়ে ঠিক কী হয়েছে তা জানতে, বিশেষজ্ঞদের পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থলের লাগোয়া গ্রামগুলিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় রসদ পাঠাতে ওই ‘আগ্নেয়গিরি’র কাছে সোমরা এলাকা দিয়ে যেতে হবে। কিন্তু, পাথর-লাভা পড়ে সে পথ বন্ধ। বিকল্প রাস্তায় ত্রাণ পাঠানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে।
ভূ-বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, বর্তমানে ভারত-মায়ানমার সীমান্ত অঞ্চলে কোনও সক্রিয় আগ্নেয়গিরি নেই। উখরুল ভারতীয় এবং ইউরেশিয় প্লেটের মধ্যবর্তী এলাকায় অবস্থিত। দুটি প্লেটের মধ্যে সংঘাত চলছে। তাই, সাধারণভাবে ওই অঞ্চলে পাহাড় ফেটে জল, কাদা, পাথর বের হওয়া অসম্ভব নয়। উত্তর মায়ানমারেও কয়েকটি ‘মাড ভলক্যানো’ (কাদার আগ্নেয়গিরি) রয়েছে। সেখানে মাটির তলায় জমে থাকা গ্যাসের বিস্ফোরণে মাটি ফেটে পাথর, কাদা বের হয়। ভূকম্পপ্রবণ ওই সব এলাকায় আগেও কয়েকবার এমন ঘটেছে। নির্গত গ্যাস অতি দাহ্য হওয়ায় তাতে আগুন ধরে যেতে পারে। পুড়তে পারে গাছপালাও। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, তুসামের পাহাড়েও সম্ভবত সে রকম ঘটনাই ঘটেছে। মাটির নীচে থাকা গ্যাসের চাপে এবং অন্য কারণে বড় ধস এবং পাহাড়ে ফাটল ধরেছে। |
|
|
|
|
|