ছিনতাইবাজ বাইকবাহিনী রেড রোডেও
মোটরবাইক নিয়ে রেড রোড থেকে কার্ল মার্ক্স সরণির দিকে ঘুরতেই প্রায় গায়ের উপরে উঠে এল আর একটি মোটরবাইক। সঙ্গে সঙ্গেই হ্যাঁচকা টান লাগল পিঠের ব্যাগে। বুঝলাম, আমি ছিনতাইবাজদের কবলে পড়ে গিয়েছি!
মিনিট কয়েক আগে রেড রোডের পুলিশ স্মারক স্তম্ভের সামনে থেকেই পিছু নিয়েছিল মোটরবাইকটা। লুকিং গ্লাসে দেখেছিলাম, চালক ও পিছনে বসা আরোহী, দু’জনেরই মুখ কালো হেলমেটে ঢাকা। ছিল আরও একটি মোটরবাইকও। ভেবেছিলাম, ওই দু’টি মোটরবাইকের আরোহীরা পরস্পরের পরিচিত। কিন্তু কার্ল মার্ক্স সরণির মোড় আসতেই একটি মোটরবাইক আমাকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ওভারটেক করে চলে গেল ভিক্টোরিয়ার দিকে। অন্যটা ঘুরল আমার সঙ্গে। তার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই হ্যাঁচকা টান!
অঙ্কন: সুমন চৌধুরী।
সম্বিৎ ফিরল ক্ষণিকের ব্যবধানে দ্বিতীয় হ্যাঁচকা টানে। পিঠব্যাগে রাখা দামী ক্যামেরার ‘গন্ধ’ তত ক্ষণে পেয়ে গিয়েছে দুষ্কৃতীরা। ক্রমশই ঠেলে রাস্তার ধারে নিয়ে যেতে চাইছে আমাকে। ফাঁকা রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ রাখাই দায়। ছিনতাইবাজদের আটকাতে গিয়ে নিজের দুর্ঘটনাও ঘটতে পারে।
কিন্তু বিপদের আঁচ পেয়ে আমিও তত ক্ষণে মরিয়া। অ্যাকসিলারেটর ঘুরিয়ে গতি বাড়িয়ে দিয়েছি নিজের মোটরবাইকের। তাতেই হাত ছুটে গিয়েছে ওই মোটরবাইকের পিছনে বসা দুষ্কৃতীর। খেপে গিয়ে অশ্লীল গালাগালি জুড়ে দিয়েছে সে। চালক অবশ্য গতি বাড়িয়ে ফের আমার গায়ের কাছে। ফের টান পড়ল ব্যাগে! বুঝলাম, ছিনতাই করতে ওরা মরিয়া।
এ সময়ে আচমকা ব্রেক কষলাম আমি। অন্য মোটরবাইকটা গতি সামলাতে না পেরে সোজা ট্রামলাইন সংলগ্ন একটা ঝোপে গিয়ে উল্টে পড়ল। দেখলাম, এই সুযোগ। কোনও আগুপিছু না ভেবে অ্যাকসিলারেটর ঘুরিয়ে মোটরবাইক নিয়ে সোজা বিদ্যাসাগর সেতুর দিকে। সেতু পেরিয়ে টোলপ্লাজায় গিয়ে দাঁড় করালাম মোটরবাইকটা। বুকের ভিতরটা তখনও ধক-ধক করছে। নিয়মিত যাতায়াতের সুবাদে পরিচিত টোলপ্লাজার কর্মীরাও কিছুটা অবাক চোখে তাকিয়ে।
পুলিশের বক্তব্য
ধীরে ধীরে একটু ধাতস্থ হলাম। মনে পড়ল, রাত সওয়া বারোটা নাগাদ রেড রোডের কাছে পুলিশ শহিদ স্তম্ভের কাছে দেখেছিলাম কয়েক জন পুলিশকর্মী বসে রয়েছেন। তার পর থেকে আর কাউকে চোখে পড়েনি। ব্রিগেডের কাছে যে ফাঁড়িটা রয়েছে, তাতে আলো জ্বলছে না। যেখানে মোটরবাইকটা ছিটকে পড়ল, তার কয়েক মিটারের মধ্যে রয়েছে আরও একটি ট্রাফিক পোস্ট। সেখানেও কেউ পাহারায় ছিল না। চোখে পড়েনি কোনও টহলদার গাড়িও।
প্রায় প্রতিদিনই এ রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফিরি। কিয়স্কে পাহারা তেমন না থাকলেও মাঝেমধ্যে দু’-একটা পুলিশের গাড়ি চোখে পড়ত। তাই বুঝতে পারিনি রেড রোডের মতো একটা ‘রেড অ্যালার্ট’ এলাকা কতটা ভয়ঙ্কর হয়ে রয়েছে। সেটা বুঝলাম রবিবার রাতের অভিজ্ঞতা থেকে।
খবরের কাগজে চাকরির সুবাদে এত দিন বহু ছিনতাইয়ের খবর জেনেছি। কিন্তু ছিনতাইবাজদের কবলে পড়লে আম-নাগরিকের কী অবস্থা হয়, সেটাও মালুম হল হাড়ে হাড়ে।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.