তৃণমূলের তরুণ প্রজন্মকে ‘শৃঙ্খলাপরায়ণ’ এবং ‘আদর্শবাদী’ হওয়ার বার্তা দিলেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। একই আহ্বান তৃণমূল যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।
ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে রবিবার যুবার বিজয়া সম্মিলনীর মঞ্চ থেকেই পার্থবাবু পরামর্শ দিয়েছেন, সংগঠনের সদস্যদের শৃঙ্খলা রক্ষার উপরে জোর দিতে হবে। আত্মপ্রচার করা এবং ব্যক্তিগত লাভের হিসেব কষা যাবে না। সরকারের সাফল্য প্রচার করতে হবে। যুবার নতুন লোগো প্রকাশ করা হয়েছে এ দিনের সভায়। ওই লোগো স্বয়ং তৃণমূল নেত্রীরই চিন্তাপ্রসূত। সেই সভাতেই পার্থবাবু বলেন, “আমরা যখন ছাত্র বা যুব রাজনীতি করেছি, তখন পঞ্চায়েতে টিকিট পাব কি না, কাউন্সিলর হতে পারব কি না ভাবিনি। ছাত্র-যুব সমাজের উপকারের কথা ভেবেছি। এখন সেই আদর্শ সরে যাচ্ছে। তাই যুবাকে বলছি, শৃঙ্খলার উপরে জোর দিতে হবে।” |
তৃণমূল যুবার নতুন লোগো উদ্বোধনের অনুষ্ঠানে অভিষেক
বন্দ্যোপাধ্যায়
ও পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
রবিবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে। ছবি: সুদীপ আচার্য। |
পার্থবাবুর ব্যাখ্যা, তৃণমূলের ছাত্র এবং যুব সংগঠন থাকা সত্ত্বেও যুবা নামক আর একটি সংগঠন রাখার উদ্দেশ্য উজ্জ্বল ভাবমূর্তির সামাজিক কর্মী তৈরি করা। তৃণমূলের মহাসচিবের পরামর্শ, “ভাল বলতে পারে, ভাল গান গাইতে পারে বা অন্যান্য গুণ আছে, এমন সদা হাস্যময়, সমাজ সচেতন কর্মী সংগ্রহ করে যোগ্য করে তুলতে হবে। যুবা রাজনৈতিক কর্মীর চেয়ে বেশি করে সামাজিক কর্মী গড়ার কারিগর হোক।” পাশাপাশিই তাঁর হুঁশিয়ারি, “জেলায় জেলায় অনেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছাড়াই নিজেদের ছবি ছাপাতে শুরু করেছেন! এটা দলীয় শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে। অত্যন্ত কঠিন ভাবে এ কথা বলে গেলাম। আমার ছবি কোথাও থাকলে আমি নামিয়ে দেব!” পার্থবাবুর সংযোজন, “নিজেরা নিজেদের ঢোল পেটাচ্ছি! তা না করে একটু সরকারের ঢোল
পেটাই! যে পয়সায় ফ্লেক্স হচ্ছে, তা দিয়ে সরকারের কন্যাশ্রী, যুবশ্রী, ন্যায্যমূল্য দোকান প্রভৃতি সাফল্য প্রচার করি।”
অভিষেকেরও মূল বক্তব্য, যুবার সদস্য হতে গেলে তৃণমূল নেত্রীর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে নতুন বাংলা গড়ার কাজ করতে হবে। তার জন্য নির্লোভ, নির্ভীক, শান্ত এবং দায়িত্বশীল হতে হবে। দলের ব্লক থেকে রাজ্য স্তর পর্যন্ত সমন্বয় রেখে ঐক্যবদ্ধ কর্মসূচি নিয়ে চলতে হবে। অভিষেকের কথায়, “যে খারাপ কাজ করছে, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা কোর না! তাকে বর্জন কর। দলও তাকে বর্জন করবে। আর যে ভাল কাজ করবে, দল তাকে খুঁজে নেবে।” পিসি মমতার ঢঙেই অভিষেক বলেন, “কে কোথায় কী করছে, আমি সব দেখি! কে পিকনিকে গিয়ে হামলা করছে, কে প্রোমোটারি করছে, সব আমার নজরে আছে। যারা প্রোমোটারি করছে, তাদের সঙ্গে দলের সম্পর্ক নেই।” রাজ্যের একাংশে সাম্প্রতিক প্লাবনের প্রেক্ষিতে অভিষেক বলেন, “ব্লকে ব্লকে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থেকে সাহায্য করতে হবে। অসুবিধা হলে সরাসরি আমাকে জানাতে হবে।”
তবে শৃঙ্খলারক্ষার বার্তা দেওয়া হল যে সভা থেকে, ভিড়ের চাপে সেখানেই ঈষৎ বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। ছিলেন মন্ত্রী সুদর্শন ঘোষ দস্তিদার, হায়দর আজিজ সফি, বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্বর্ণকমল সাহা, শশী পাঁজা প্রমুখ। |