ফুটবল ছেড়ে পড়তে ‘চাপ’, উদ্ধার বাড়ি-পালানো ছাত্র
স্বপ্ন ফুটবলার হওয়ার। পড়াশোনা, বইপত্র বিশেষ ভাল লাগে না। কিন্তু, না পড়লেই চলত বাবার বকুনি। তাই ‘অভিমানে’ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছিল কল্যাণীর বিধানপল্লির বাসিন্দা, নবম শ্রেণির ছাত্র শিবু ব্যাপারি। প্রায় এক মাস নিখোঁজ থাকার পরে টেলিফোনের সূত্র ধরে খোঁজ মিলল তার। ‘‘অভিমানেই বাড়ি ছেড়েছিলাম’’ধরা পড়ে ‘পুলিশ কাকু’দের এমনই বলেছে শিবু।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৪ সেপ্টেম্বর স্কুল যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল শিবু। আর বাড়ি ফেরেনি সে। সেই দিনই কল্যাণী থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন শিবুর বাবা দীপন ব্যাপারি। বিভিন্ন থানায় শিবুর ছবি পাঠিয়ে খোঁজ শুরু করে পুলিশ। দীপনবাবু জানান, গত শনিবার সকালে আচমকাই দিদিকে ফোন করে শিবু জানায় তাকে আটকে রাখা হয়েছে। শিবুর দিদি পিয়ালি বলে, “আমি ভয় পেয়ে ওকে পরে আবার ফোন করতে বলি।” শিবুর এই ফোনের কথা পুলিশের কাছে জানান পেশায় কাঠের কারিগর দীপনবাবু।
ছেলেকে ফেরত পাওয়ার পর।—নিজস্ব চিত্র।
শিবুর ফোনের সূত্র ধরে জানা যায়, ফোনটি এসেছিল কলকাতার বেলগাছিয়া রোডের দত্তবাগান এলাকার একটি এসটিডি বুথ থেকে। এর পর সেই বুথ-সহ এলাকার সব ক’টি টেলিফোন বুথের মালিককে শিবুর ছবি দেখিয়ে নজর রাখতে শুরু করে সাদা পোশাকের পুলিশ। শনিবার রাতেই শিবু আবার বাড়িতে ফোন করতে পারে, তা অনুমান করে এলাকায় অপেক্ষায় ছিলেন কল্যাণী ও টালা থানার তদন্তকারী অফিসাররা। রাতে শিবু বুথে ফোন করতে গেলে পুলিশ ধরে ফেলে তাকে। জিজ্ঞাসাবাদের পর রাতেই শিবুকে পরিবারের হাতে তুলে দেয় পুলিশ।
পুলিশের কাছে শিবু জানিয়েছে, সে ফুটবল খেলতে চায়। সে কল্যাণী পুরসভার অনূর্ধ্ব ১৬ দলে খেলে। প্রিয় দল ব্রাজিল আর প্রিয় ফুটবলার মেসি। কিন্তু, বাবা শুধুই পড়ার কথা বলেন। তাই অভিমানে সে বাড়ি ছেড়েছিল। রবিবার সকালে কল্যাণীতে পুলিশকর্তাদের সামনে বসে নিজের খেলতে চাওয়ার কথা জানিয়ে কেঁদে ফেলে শিবু।
শিবু আরও জানিয়েছে, বাড়ি থেকে পালিয়ে দত্তবাগান মোড়ে একটি রোলের দোকানে সব্জি কাটা আর প্লেট ধোওয়ার কাজ জুটিয়েছিল সে। মাঝে অভিমান একটু কমায় বাড়ির জন্য মন খারাপ করছিল বলে শনিবার সকালে দিদিকে ফোন করেছিল। ফোন ধরে হঠাৎ ঘাবড়ে গিয়েই ‘আটকে রাখার’ কথাটা বলে ফেলেছিল সে।
এত দিন পরে ছেলেকে ফেরত পেয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি দীপনবাবুও। বললেন, “আমি নিজে পড়ার সুযোগ পাইনি। তাই চেয়েছিলাম ও লেখাপড়াটাই মন দিয়ে করুক। কিন্তু, সেই অভিমানে যে ও বাড়ি থেকে চলে যাবে, আমি ভাবিনি!” কল্যাণীর এসডিপিও চন্দ্রশেখর বর্ধন বলেন, ‘‘শিবুর অভিভাবকদের বলেছি, ওর উপর নজর রাখতে। সবাই লেখাপড়ায় ভাল হয় না। ও যদি মন দিয়ে খেলতে চায়, তা হলে ওকে সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছি।’’



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.