|
|
|
|
জলে ক্ষতি রাস্তার, দ্রুত সংস্কার নিয়ে বৈঠক
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
সাম্প্রতিক বৃষ্টি ও বাঁধের ছাড় জলে এলাকা জলমগ্ন হওয়ায় জেলার বেশ কিছু রাস্তা খারাপ হয়েছে। পিচ উঠে তৈরি হয়েছে খানাখন্দ। বেশ কয়েকটি কালর্ভাট-সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসীকে ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রবিবার মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে এক বৈঠক করেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের সচিব সুব্বাইয়া। ছিলেন জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুশান্ত চক্রবর্তী প্রমুখ। জমা জলে কী কী ক্ষতি হয়েছে, রাস্তা-কালভার্ট-সেতুর হাল কেমন, কোন কোন ক্ষেত্রে সংস্কার-মেরামত জরুরি, এ সব নিয়েই আলোচনা হয়। জানা গিয়েছে, পুরো পরিস্থিতির কথা জানিয়ে মুখ্যসচিবকে সঞ্জয় মিত্রকে চিঠি দেবেন সচিব। জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি রাস্তা-কালভার্ট সংস্কারের কাজও শুরু হবে। জেলাশাসক গুলাম আলি আনসারি বলেন, “আগের থেকে পরিস্থিতি অনেক উন্নতি হয়েছে। প্রায় সর্বত্রই জল নেমেছে। বৈঠকে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়েই আলোচনা হয়। কিছু রাস্তা-কালভার্ট সংস্কার করা জরুরি। সেগুলি যত দ্রুত সম্ভব কাজ শুরু করার চেষ্টা চলছে।” |
কংসাবতীর জলে কেশপুরে পঞ্চমী থেকে বিশ্বনাথপুর
যাওয়ার রাস্তার এমনই জীর্ণদশা। ছবি:কিংশুক আইচ। |
পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতর জঙ্গলমহলে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করে। দফতরের বরাদ্দ অর্থে রাস্তা, কালভার্ট, সেতু তৈরি হয়। পাশাপাশি, ‘পিছিয়ে পড়া’ এলাকায় পানীয় জলের বন্দোবস্ত করা, সেচ ব্যবস্থার সম্প্রসারণে পদক্ষেপ করা, হস্টেল তৈরি করা প্রভৃতি কাজও হয়। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম এবং বর্ধমানও রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের এই ৫ জেলার ‘পিছিয়ে পড়া’ ৭৪ টি ব্লক এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজকর্মের জন্যই ‘পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ’ গঠিত হয়েছে। এর মধ্যে পশ্চিম মেদিনীপুরের ১৮টি ব্লক রয়েছে। এই ১৮টি ব্লকের মধ্যে আবার ৮টিই ঝাড়গ্রাম মহকুমার। বাকি ৬টি মেদিনীপুর মহকুমার এবং ৪টি খড়্গপুর মহকুমার। অতিবৃষ্টি এবং জলাধার থেকে প্রচুর পরিমাণ জল ছাড়ায় গত সপ্তাহে পশ্চিম মেদিনীপুরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। জেলার ২৯টি ব্লকের মধ্যে ২৬টি ব্লকেই কমবেশি দুর্যোগের প্রভাব পড়ে। এর মধ্যে জলমগ্ন হয় ১১-১২টি ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকা। ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলোর মধ্যে রয়েছে গোপীবল্লভপুর-১ এবং ২, সাঁকরাইল, নয়াগ্রাম, কেশিয়াড়ি, দাঁতন-১, মোহনপুর। সুবর্ণরেখা নদী ছাপিয়ে এই সব ব্লকে জল ঢুকে। অন্য দিকে, কংসাবতী নদী ছাপিয়ে প্লাবিত হয় ঘাটাল, দাসপুর-১, খড়্গপুর-২, মেদিনীপুর সদর, কেশপুরের বিস্তীর্ণ এলাকা। জলের তোড়ে বেশ কয়েকটি বাঁধ ভাঙে। ফলে, পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হতে শুরু করে। একের পর এক এলাকায় হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করে। ঘাটাল, দাসপুর-১ এর মতো কিছু এলাকায় এখনও জল জমে রয়েছে। জমে থাকা জল পেরিয়েই যাতায়াত করতে হচ্ছে গ্রামবাসীদের। বন্যা পরবর্তী পরিস্থিতিতে ব্লকস্তরেও সমস্ত দফতরের কাজকর্মের উপর নিয়মিত নজরদারি রাখার নির্দেশ দিয়েছেন জেলাশাসক। |
দুর্দশার নানা চিত্র |
|
|
ধানগাছের গোড়ায় এখনও জমে রয়েছে
জল। ফলে ধান নষ্ট
হওয়ায় আশঙ্কায় চাষিরা।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের নতুন বাজারে। |
জল নামতেই ধসে যাচ্ছে
মাটির দেওয়াল।
মেদিনীপুর সদর
ব্লকের
মহাতাবনগরে তোলা ছবি। |
ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
|
শুক্রবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুরে আসেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের সচিব। ওই দিনই অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুশান্ত চক্রবর্তীর কাছ থেকে তিনি বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেন। শনিবার ঝাড়গ্রামের কিছু এলাকা ঘুরে দেখেন। সঙ্গে ছিলেন দফতরের অন্য আধিকারিকেরা। ইতিমধ্যে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। ত্রাণ শিবিরে থাকা মানুষজন বাড়ি ফিরেছেন। ফলে, এ বার পুনর্গঠনের কাজ শুরু করা জরুরি। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, তিন-চার দিন ধরে জল জমে থাকার ফলে বেশ কয়েক’টি রাস্তার এখন কঙ্কালসার দশা। পিচ উঠে খানাখন্দ তৈরি হয়েছে। যে কোনও সময় ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। বিশেষ করে রাতের বেলায়। এর মধ্যে কয়েকটি রাস্তা দিয়ে বাস চলাচল করে। দ্রুত এই রাস্তাগুলো সংস্কার করা জরুরি।
জলের স্রোতে কয়েকটি কালভার্ট-সেতুও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে। পরিস্থিতি ঠিক কী, তা খতিয়ে দেখতে রবিবার মেদিনীপুর সার্কিট হাউসে বৈঠক করেন পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের সচিব। ঠিক হয়, জেলা থেকে ওই দফতরের কাজে কিছু প্রস্তাব পাঠানো হবে। অর্থ বরাদ্দ হলে দ্রুত কাজ শুরু হবে। |
পুরনো খবর: জল নামেনি, পাঁশকুড়া-তমলুকে পৌঁছয়নি ত্রাণ |
|
|
|
|
|