মেসির বাঁ-পা
তো আপনার হাতে |
কোন ফর্মেশনে খেলবে রিয়াল মাদ্রিদ,
রোনাল্ডোর বুটের রং কী হবে, কখনও চেলসির ডাগআউটে
মোরিনহোর
জায়গায়
বসার অভিজ্ঞতা। সবটাই হবে মাউজের ক্লিকে। দিন রাত ফিফা
২০১৪-র কম্পিউটার গেমস
খেলে এমনই আশ্চর্য সব অভিজ্ঞতা হল সোহম দে-র |
রিয়াল মাদ্রিদকে নিয়ে লা লিগা জিতে স্পেনে বার্সেলোনার একক আধিপত্য শেষ করা। কিংবা ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডকে নিয়ে চোদ্দোতম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ জয়। মেসি আর নেইমার জুটির ভাগ্য নির্ধারণ করা কিংবা বার্সেলোনার প্রথম দল নিজের ছকে সাজানো।
কোনও ফুটবলপ্রেমীর কাছে যা স্বপ্ন বা আকাঙ্ক্ষার থেকে বেশি কিছু নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে ‘ভারচুয়াল ওয়ার্ল্ডে’ ফুটবলপ্রেমীর এই আকাঙ্ক্ষাই পরিণত হচ্ছে সত্যিতে।
এক সময় ছিল ভিডিও গেমস। যা বিনোদনের সঙ্গে সঙ্গে ছোটদের নিয়ে যেত এমন একটা বিশ্বে যেখানে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। যুগ বদলেছে, বদলেছে প্রযুক্তি। আজ কম্পিউটার অথবা পিসি গেমসের যুগে ‘এনএফএসে’ ফেরারি চালানো বা ‘কল অব ডিউটিতে’ রাশিয়ার শত্রুদের ধ্বংস করা, কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। আজ সেই ভারচুয়াল ওয়ার্ল্ডের সবচেয়ে বড় ব্র্যান্ড কিন্তু ‘ফুটবল’। বছরের পর বছর গেমসের দুনিয়ায় এই একটা খেলাই হয়ে উঠেছে উনিশ-কুড়ির পাগলামির কারণ। নেশার নাম? ‘ইএ স্পোর্টসের’ ফিফা।
প্রতি বছরের মতো এ বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রতিটা দোকানে চলে এসেছে ‘ফিফা ২০১৪’। অর্থাৎ বিনোদনের ‘আপডেটেড ভার্সন’। যেখান বেল ও রোনাল্ডোকে নিয়ে গোল করা, বা নেইমারের বুট বদলানো, বা নতুন কোনও অনামী তরুণকে ফুটবলবিশ্বের মহাতারকা করা, সব কিছুই হয়ে যাবে একটা মাউজ ক্লিকে। কী রকম? |
|
বার্সেলোনা জার্সিতে বল নিয়ে ছুটছেন লিওনেল মেসি। |
ইগনাইট ইঞ্জিন |
ফিফা ২০১৪ তে থাকবে ইগনাইট ইঞ্জিন। গ্রাফিক্স আরও ভাল হবে। নেইমারের হেয়ারস্টাইল থেকে শুরু করে বেলের বুট পর্যন্ত সব কিছুকেই বাস্তব বলে মনে হবে। সঙ্গে ফুটবলারদের ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ আরও বাড়ছে। মানে, রোনাল্ডোকে নিয়ে আপনি নামলে জেতা শতকরা সত্তর ভাগ নিশ্চিত।
|
টিম কেমিস্ট্রি |
৪-২-৩-১ ছকে খেলা নেইমার কি পারবেন ৪-৪-২ ছকে খেলতে? সে উত্তর পাওয়া যাবে ফিফাতে। কারণ এই বছরের খেলায় থাকছে ‘কেমিস্ট্রি মোড’। যা দিয়ে নির্ধারণ করা যাবে যে, কোন ফর্মেশনে মেসি বা রোনাল্ডো নিজের সেরাটা দিতে পারছেন। |
ফুটবলারদের নিখুঁত স্কিল |
জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের ‘জ্লাতান ফ্লিক’ কিংবা লিওনেল মেসির ‘রাবোনা’। যে কোনও বিশ্বমানের স্কিলকে আরও নিখুঁত করা যাবে। স্কিল অনুযায়ী সব ফুটবলারকে ভাগ করে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন রেটিংয়ে। যেখানে ‘ফাইভ স্টার স্কিল’ থাকা ফুটবলার আছেন পাঁচ জন। বার্সেলোনার মেসি ও নেইমার ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন ইব্রাহিমোভিচ, রোনাল্ডো ও রিবেরি। |
ঐতিহাসিক স্টেডিয়ামে খেলার সুযোগ |
এ বছরও ফিফা গেমে থাকছে ৩১-টি লাইসেন্সড স্টেডিয়াম। যে তালিকায় থাকবে বার্সেলোনার ন্যু কাম্প, রিয়াল মাদ্রিদের বের্নাবাও, বায়ার্ন মিউনিখের এলিয়াঞ্জ এরিনার মতো সব নামকরা স্টেডিয়াম। সঙ্গে নতুন ভার্সনে যোগ হচ্ছে আরও নতুন তিনটে স্টেডিয়াম। এভার্টনের গুডিসন পার্ক, আটলেটিকো বাসানেজের লা বম্বোনেরা ও
শাখতার দনেস্কের ডনবাস এরিনা। |
|
দলের নতুন সতীর্থ নেইমারের সঙ্গে সেলিব্রেট করছেন জাভি। |
এডিট করুন মেসি বা রিবেরিকে |
মেসির বুটের রং বদলাতে চান? ইচ্ছে হয় নেইমারকে মারকিউরিয়াল ভেপর বদলে নাইকির অন্য কোনও বুট পরাতে? সব হবে। এ বছর ‘এডিট দ্য প্লেয়ার’ অপশনে বদলানো যাবে মহাতারকাদের বুট। পরানো যাবে রিস্টব্যান্ড। বা নতুন অ্যাঙ্কেল টেপ। |
ফিফা আল্টিমেট টিম |
গত কয়েক বছরে ইন্টারনেটের রমরমা বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে ফিফা। এ বছরও থাকছে ‘ফিফা আল্টিমেট টিম।’ ব্যাপারটা কি? লোকাল এরিয়া কনেকশন অথবা অনলাইন কারুর সঙ্গে খেলতে হলে আর ভাবতে হবে না। ফিফাতে থাকছে মাল্টিপ্লেয়ার অপশন যার সাহায্যে দূরপ্রান্তে থাকা কোনও বন্ধু অথবা বিশ্বের যে কোনও জায়গা থেকেই কোনও ফিফার গেমারকে চ্যালেঞ্জ জানানো যাবে। অনলাইনে বিভিন্ন টুর্নামেন্ট তৈরি করে খেলা অথবা পুরো মরসুম নিজেদের নির্দিষ্ট দল নিয়ে লিগ বানিয়ে খেলা, সব কিছু করার সুযোগ থাকছে। |
ম্যানেজার কেরিয়ার মোড |
বার্সেলোনার ডাগআউটে কার না দাঁড়াতে ইচ্ছা করে? অথবা মোরিনহোর হটসিটে বসে প্রিয় ক্লাবকে একদিনের জন্য ম্যানেজ করা যে কোনও সমর্থকের স্বপ্ন। কিন্তু এগুলো স্বপ্ন হলেও ফিফার দুনিয়ায় আসল এক সত্যিই। গত কয়েক বছরের মতো এ বারের ফিফায় থাকছে ম্যানেজার কেরিয়ার মোড। যেখানে কোনও নির্দিষ্ট এক ফুটবল দলের চার্জে থাকবেন গেমাররা। ঠিক কোনও এক ফার্গুসন বা মোরিনহোর মতো সুযোগ থাকবে ফুটবলারদের ভাগ্য নির্ধারণ করা, দল বাছা, নতুন প্লেয়ারদের সই করানো, অফ ফর্মের ফুটবলারদের বিক্রি করা। পছন্দের ফুটবলারের চুক্তি বাড়ানো অথবা ক্লাব কর্তাদের চাপ সামলানো
সব ঝুট-ঝামেলাই পোহাতে হবে আপনাকে। |
গ্লোব্যাল ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক |
এ বছরের ফিফার অন্যতম আকর্ষণ হতে চলেছে ‘গ্লোব্যাল ট্রান্সফার নেটওয়ার্ক’। যার সাহায্যে বিশ্বের যে কোনও প্রান্ত থেকে নতুন প্রতিভা তুলে আনা যাবে। এবং কোনও অনামী ফুটবলারকে করা ফেলা যাবে ফুটবল বিশ্বের পরবর্তী মহাতারকা। নেইমারের মতো গতিশীল ফুটবলার অথবা জেরার্ড পিকের মতো শক্তিশালী, আগে কী ধরনের ফুটবলার চাই ঠিক করতে হবে গেমারকে। একবার ঠিক করলে তেমন ফুটবলার খোঁজার দায়িত্ব দলের স্কাউটদের। তা-ও আবার গেমারদের দেওয়া নির্দিষ্ট দিনের মধ্যে। |
|
রিয়াল মাদ্রিদের নতুন জার্সিতে দলের মহাতারকা ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। |
প্লেয়ার কেরিয়ার |
নেইমারকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বার্সেলোনা দলে ঢোকা। কিংবা রোনাল্ডো ও বেলের সঙ্গে সমান তালে রিয়াল মাদ্রিদের দলে খেলা। ফিফায় থাকছে ‘প্লেয়ার কেরিয়ার মোড’। যেখানে নিজের ইচ্ছেমতো কোনও নতুন ফুটবলার তৈরি করা যাবে। হেয়ারস্টাইল থেকে শুরু করে পায়ের বুট, সব কিছুই ঠিক করে নতুন একটা চেহারা দেওয়া যাবে ফুটবলারকে। ক্লাবের হয়ে ভাল খেলতে পারলে থাকছে দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ। |
আন্তর্জাতিক যুদ্ধ |
দেশের জার্সিতেও ফুটবলযুদ্ধে নামতে পারবেন। শুধু মাত্র ফ্রেন্ডলি ম্যাচ নয়, ম্যানেজার মোডে ক্লাব ম্যানেজ করার সঙ্গে সঙ্গেই কোনও দেশের অর্ন্তবর্তী কোচের হটসিটেও বসা যাবে। বিশ্বকাপের দেরি এখনও আট-ন’মাস। লা লিগা বা প্রিমিয়ার শেষ হতে হতেও আগামী মে মাসের ধাক্কা। অপেক্ষা না করে আগাম সব টুর্নামেন্ট জিতে নিলে মন্দ কী? |
|