রাজবাড়ির প্রধান ফটকে ৩ জন কনস্টেবল বসে। টিকিট কেটে ঢোকার সময়ে সন্দেহ হলেই চলছে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ। বড় ব্যাগ নিয়ে ঢোকা নিষিদ্ধ। ছোট ব্যাগ সন্দেহজনক মনে হলে তল্লাশি। রাজবাড়িতে ঢোকার সময় মেটাল গেটের মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশনে রাজবাড়ির ঘরে ঘরে চলছে নজরদারি। খিড়কি দিয়েও যাতে কেউ রাজবাড়ির ভিতরে কেউ ঢুকতে না পারে সে জন্য সেখানেও বসানো হয়েছে পাহারা। |
অগস্টে আলিপুরদুয়ারে সাইকেল বোমা বিস্ফোরণ ঘটায় কেএলও। তার তদন্তে নেমে গোয়েন্দারা জেনেছেন যে কোচবিহার রাজবাড়িতেও হামলা চালাতে পারে কেএলও। রাজবাড়িকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করেছে পুলিশ প্রশাসন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল এ দিন বলেন, “রাজবাড়িতে দিনরাত নিরাপত্তা রক্ষী রাখা হয়েছে। নানা ভাবে নজরদারি চালানো হচ্ছে। পর্যটকেরা নির্ভয়ে ঘুরতে পারেন।” কোচবিহার হেরিটেজ সোসাইটির সভাপতি অরূপজ্যোতি মজুমদার জানান, ওই রাজবাড়ি শুধু কোচবিহারের মানুষের নয়, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং অসমে ছড়িয়ে থাকা একটি বড় অংশের মানুষের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। যা কোচবিহারের ঐতিহ্য এবং একটি রাজবংশের পরিচয় বহন করছে। নানা জায়গা থেকে প্রতি দিন দেড় হাজার মানুষ রাজবাড়িতে যান। নানা রাজ্য তো বটেই, বিদেশ থেকেও পর্যটকেরা সেখানে যান।
রাজবাড়ির দরবার হল, বিলিয়ার্ড রুম সহ ৭টি ঘরে মিউজিয়াম রয়েছে। সেখানে রাজাদের ব্যবহার করা জিনিস রয়েছে। সেই সময়ের নানা সামগ্রী রয়েছে। শীঘ্রই সেখানে আরও দুটি ঘর নিয়ে রাজার সময়ে ব্যবহৃত মুদ্রা ও অস্ত্র নিয়ে প্রদর্শনী কক্ষ চালু করা হবে। অরূপবাবু বলেন, “এই রকম একটি জায়গায় কোনও নাশকতামূলক কাজ কেউ বরদাস্ত করবে না। আমরা আশা করব কোচবিহার রাজবাড়িতে কোনও নাশকতামূলক কাজের কথা কেউ ভাববেন না।” |
পুলিশ সূত্রের খবর,২৯ অগস্ট মাসে আলিপুরদুয়ার চৌপথীতে সাইকেল বোমা রাখে সন্দেহভাজন কেএলও জঙ্গিরা। সেই বোমা নিষ্ক্রিয় করতে গিয়ে এক পুলিশ কর্মীর মৃত্যু হয়। গোয়েন্দারা সেই সময়ে জানতে পেরেছিলেন, কোচবিহার রাজবাড়িতে নাশকতা ঘটানো হতে পারে। তাই সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে রাজবাড়ির নিরাপত্তা বাড়িয়ে দিয়েছিল কোচবিহার পুলিশ প্রশাসন। যেখানে এক নিরাপত্তা রক্ষী রাজবাড়ির ভিতরে পাহারা দিতেন সেখানে এখন রাজবাড়ি গেটে ৩ জন পুলিশ নিয়োগ করা হয়েছে। ৩ দফায় পাহারা দেন তাঁরা। ভিতরে এক জন বন্দুকধারী রক্ষী। পেছনের গেটে তিন জন নিরাপত্তা রক্ষী মোতায়েন হয়েছে।
|
• ১৮৮৭-তে মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণ তৈরি করেন। |
• ৬৪টি কক্ষ। দরবারকক্ষ রোমের সেন্ট পিটার্স গির্জার অনুকরণে। শয়নকক্ষ, সাজঘর, বিলিয়ার্ড রুম, পাকশালা, ভোজনকক্ষ, নৃত্যশালা, পুস্তকাগার, দেখার মতো। |
• রাজবাড়ির ৭টি কক্ষ নিয়ে তৈরি করা হয়েছে মিউজিয়াম। |
• শীঘ্র অস্ত্রাগার, কয়েন গ্যালারি উদ্বোধন করা হবে। |
• প্রতিদিন গড়ে ১৫০০ পর্যটক রাজবাড়িতে যান। |
|