আন্ত্রিকের সংক্রমণ অব্যাহত পুরুলিয়া জেলায়। হুড়ার আমলাতোড়া গ্রামের পরে এ বার আড়শার মিশিরডি গ্রামে আন্ত্রিকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার বিকেল অবধি এই গ্রামে আন্ত্রিকে আক্রান্ত ২২ জনকে জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি ২১ জন। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের সুপার নীলাঞ্জনা সেন বলেন, “হাসপাতালে ওই গ্রামের ১৩ জন মহিলা ও ৯ জন পুরুষ আন্ত্রিকে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি রয়েছে। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।”
মিশিরডি গ্রামের নামোপাড়াতেই মূলত আন্ত্রিকে বেশি লোক আক্রান্ত হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা নিমাইচরণ মাঝি বলেন, “একাদশীর দিন থেকে প্রথমে পেটে ব্যথা, তারপরে বমি ও পায়খানা শুরু হয়। আমার স্ত্রী কল্যাণী মাঝিও আন্ত্রিকে অসুস্থ হয়েছেন।” এলাকার অন্য এক বাসিন্দা বিবেক মাঝির কথায়, “আমার বাড়িরই ন’জন পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি।” বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ওই পাড়ায় পানীয় জলের উৎস বলতে কাছাকাছি একটি কুয়ো রয়েছে। নলকূপ থাকলেও সেই জল পানের যোগ্য নয় বলে তাঁদের দাবি। গ্রামে আরও একটি নলকূপ থাকলেও তা বেশ দুরে। তাই অধিকাংশ সময় বাসিন্দারা ওই কুয়োর জলই পান করেন।
আন্ত্রিকের সংক্রমণ ছড়ানোর খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ওই গ্রামে যান আড়শা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের আধিকারিক নীহাররঞ্জন মুদি। তিনি বলেন, “স্বাস্থ্যকর্মীরা ওই গ্রামে রয়েছেন। ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। ওই গ্রামে যে কুয়োর জল বাসিন্দারা পান করেন, তার কাছেই গোবর ফেলা হয়। মনে হচ্ছে সেখান থেকেই ওই রোগ ছড়িয়েছে।” তাঁরা আপাতত বাসিন্দাদের ওই কুয়োর জল ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। পুকুরে নোংরা মিশ্রিত বৃষ্টির জল মেশায়, ওই জলে বাসন ধুতে মানা করা হয়েছে।
স্থানীয় জেলা পরিষদ সদস্য সুষেণচন্দ্র মাঝিও গ্রামে যান। তিনি বলেন, “ওই এলাকায় পানীয় জলের বিকল্প ব্যবস্থা করতে বিডিওকে বলেছি।” আড়শার বিডিও মাধব বিসাই বলেন, “ওই এলাকায় একটি নলকূপ বসানো হবে। আপাতত গাড়ি করে বাসিন্দাদের জল দেওয়া হচ্ছে।”
|