|
|
|
|
সহবাসের নালিশের তদন্ত, পুলিশি ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন |
জয়িতা সরকার • শিলিগুড়ি |
সাব ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে এক তরুণী ফুঁসলে সহবাসের অভিযোগ করার এক সপ্তাহ পরেও কোনও মামলা রুজু করা হয়নি কেন তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। রাজ্য মহিলা কমিশন-সহ বিভিন্ন সংগঠনের অনেকেই বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত ৯ অক্টোবর তরুণীটি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। অথচ পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেনি। ওই তরুণীর অভিযোগ, অভিযুক্ত পুলিশ আধিকারিক ভাস্কর বিশ্বাস ফোনে নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন। তিনি ভাস্করবাবুর বিরুদ্ধে কিছু বললে বা সম্পর্ক রাখতে চাইলে তাঁর পরিবারের লোকদের হেনস্থা করবেন বলেও শাসিয়েছেন।
পুলিশের ভূমিকা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্য মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন এবং শিলিগুড়ি গণতান্ত্রিক আধিকারিক রক্ষা সমিতি কর্মকর্তারা। মহিলা কমিশনের ভাইস চেয়ারপার্সন শেহনওয়াজ কাদরি বলেন, “যদি ওই মহিলা অভিযোগ করে থাকেন, তা হলে পুলিশের তরফে অবশ্যই অভিযোগ নথিভুক্ত করে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। ঠিক কী অভিযোগ করা হয়েছে আমাদের জানালে বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব।” শিলিগুড়ি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি পুলিশের ভূমিকার কড়া সমোলাচনা করেছেন। সমিতির সম্পাদক অভিরঞ্জন ভাদুড়ি বলেন, “সাধারণ বাসিন্দারা ওই অপরাধ করলে পুলিশ এক রকম ব্যবস্থা নেবে। কিন্তু পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা হতে পারে না। পুলিশের উচিত অবিলম্বে এফআইআর নথিভুক্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া।” পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “পুলিশে কোনও এফআইআর করেননি ওই মহিলা। আমার দফতরে জানানো হয়েছে। সেই মতো বিভাগীয় তদন্ত হবে। সাধারণ ভাবে অভিযোগও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তার পরেই ব্যবস্থা নেব।”
ওই তরুণী বিবাহবিচ্ছিন্না। তাঁর এক সন্তানও রয়েছে। পুলিশকে তিনি জানিয়েছেন, গত ৪ বছর ধরে ভাস্করবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক রয়েছে। তাঁর জেরে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়লে একবার বাড়িতে ওষুধ খেয়ে এবং অন্যবার নার্সিংহোমে নিয়ে গিয়ে গর্ভপাত করানো হয়। ভাস্করবাবুও আগে বিয়ে করেছেন। তবে সেই স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা চলছিল। তা তিনি পরে জেনেছেন। তার আগে সন্তান হলে বিবাহবিচ্ছেদের মামলায় বিপদে পড়তে পারেন বলে ভয় দেখিয়ে গর্ভপাত করাতে বাধ্য করিয়েছেন বলে মহিলার অভিযোগ।
যদিও তাকে নিয়ে পুরী, দীঘা-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে গিয়েছেন। সে সব জায়গায় তাঁরা স্বামী স্ত্রীর মতোই থাকতেন। ভাস্করবাবুর বাড়িতেও তিনি বছরখানেক থাকেছেন। তাঁর নামে একটি গাড়িও কিনেছেন ভাস্করবাবু এবং তিনিই ব্যবহার করছেন। ওই মহিলার দাবি, মাস কয়েক আগে বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছে বলে জানালেও রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করতে চাইছেন না। তা নিয়ে বলতে গেলে মারধর এবং অত্যাচার শুরু করলে তিনি বাপের বাড়িতে চলে আসেন। তার পরেও সমস্যা মেটাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এর পরেই পুলিশে অভিযোগ করেন। মহিলা বলেন, “বোনের বিয়ে হয়েছে। আমি তাঁর কথা মতো না চললে তাদের ফোন করে হেনস্থা করতে চাইছেন। অথচ পুলিশকে অভিযোগ জানালেও তারা নিতে চায়নি। এখনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।” যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই ভাস্করবাবু অবশ্য আগেই দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে অভিযোগ তোলা হয়েছে। এ দিন ভাস্করবাবুকে বারবার ফোন করা হলেও তা বেজে গিয়েছে। |
|
|
|
|
|