|
|
|
|
দুর্যোগের জের, মাছের আমদানিতে টান শহরে |
জয়িতা সরকার • শিলিগুড়ি |
পিলিনের আঁচ এসে পড়েছে শিলিগুড়ির মাছ বাজারেও। চার দিন ধরে শিলিগুড়ির বাজারে প্রায় মিলছেই না কোনও সামুদ্রিক মাছ। যতটুকু মিলছে তার দামও আকাশছোঁয়া। তাই টান পড়েছে রসনায়। মাছ কিনতে গিয়ে হতাশ হয়ে ফিরছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির প্রায় প্রতিটি বাজারেই মাছের দাম ছিল সাধারণের ধরাছোঁয়ার বাইরে। দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ কোন গাড়ি আসছে না ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। শহরে কার্যত বন্ধ হয়ে গিয়েছে মাছের আমদানি। বাজারে বাঙালির পছন্দের মাছ গুলি নেই বললেই চলে।
শিলিগুড়ি মুখ্য নিয়ন্ত্রিত বাজারে মাছ আসে ওড়িশা ও অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। কিন্তু অষ্টমীর রাতে ওড়িশা উপকূলে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় পিলিন আছড়ে পড়ায় উপকূল এলাকা জলমগ্ন। জাতীয় সড়ক দিয়ে চলাচল বন্ধ। তাই মাছের গাড়ি চলছে না। মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এখন সমুদ্রে মাছ ধরাও বন্ধ রয়েছে। শুধু ওড়িশা নয়, সামুদ্রিক বিপর্যয় হওয়ায় ডায়মন্ডহারবার দীঘা থেকেও মাছ আসছে না শহরে। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে মাছের সঙ্কট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা। বাড়তে তাকবে মাছের দামও। একেই সব্জির দাম ঊর্ধ্বমুখী। পাল্লা দিয়ে মাছের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়েছেন।
শিলিগুড়ি রেগুলেটেড মার্কেচ ফিশ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাপি চৌধুরী। তিনি বলেন, “প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণেই গাড়িগুলি আসতে পারছে না শিলিগুড়িতে। ফলে মাছের চাহিদা বাড়ছে, আর যোগান কম থাকায় দাম বাড়ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে বাজারে মাছের সংকট দেখা দিতে পারে। তবে আশা করছি সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।” অন্ধ্র, ওড়িশার সরবরাহ বন্ধ থাকলেও কিছু পরিমাণে ইলিশ আসছে শিলিগুড়িতে। সেগুলিও বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। এভাবে দাম বাড়তে থাকায় উৎসবের মরসুমে কার্যত মুখভার সাধারণ মানুষের। সুভাষপল্লির বাসিন্দা তারা দত্ত বলেন, “বাজারে মাছ কিনতে গিয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে। যে ভাবে দাম বেড়েছে তা সাধারণ মানুষের সাধ্যের বাইরে। কী করে কিনব?”
শিলিগুড়ি মুখ্য নিয়ন্ত্রিত বাজারে রোজ প্রায় ৪-৫ টন মাছ আসে ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে। সামুদ্রিক মাছ থাকে প্রায় ২ টন। কিন্তু প্রায় এক সপ্তাহ থেকে গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় সেই যোগান বন্ধ। ফলে, নিয়ন্ত্রিত বাজার থেকে পাহাড়ে ও পাশের রাজ্য সিকিমেও সরবরাহ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পর্যটনের মরসুমে পাহাড়ে মাছ না যাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন সেখানকার হোটেল মালিকরা। মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, রোজ নিয়ন্ত্রিত বাজার থেকে পাহাড়ে ৫০০-৭০০ কেজি মাছ পাহাড়ে সরবরাহ করা হয়। |
|
|
|
|
|