|
|
|
|
হেনস্থা-তদন্তে দেরি, ক্ষোভ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
বৃদ্ধাবাসে এক দম্পতিকে হেনস্থার অভিযোগের ৭২ ঘণ্টা পরেও সে ব্যাপারে রিপোর্ট জেলাশাসকের হাতে পৌঁছে দিতে পারল না মহকুমা প্রশাসন। তার জেরে জেলা প্রশাসনের তরফে অভিযোগের তদন্ত শুরু করতে দেরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জেলাশাসক সমাজ কল্যাণ দফতরকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করাবেন সিদ্ধান্ত হলে শিলিগুড়ি মহকুমাশাসকের দফতর থেকে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়। গত সোমবার মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করা হলেও তিনি প্রয়োজনীয় তদন্ত করে সেই রিপোর্ট বৃহস্পতিবারও জেলাশাসকের দফতরে পাঠাতে পারেননি। জেলাশাসক পুনিত যাদব বলেন, “এখনও মহকুমাশাসকের দফতর থেকে রিপোর্ট হাতে পাইনি। তা হাতে পেলেই সমাজক্যলাণ দফতরের আধিকারিকরা তার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করবেন।” তবে রিপোর্ট পাঠাতে দেরির বিষয়টি অবশ্য মানতে চাননি জেলাশাসক। তিনি জানান, মহকুমাশাসকের সঙ্গে এ ব্যাপারে তাঁর কথাও হয়েছে। মহকুমাশাসক দীপা প্রিয়া বলেন, “বিষয়টি জেলাশাসক দেখছেন। তাঁকে সমস্ত রিপোর্ট পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।”
শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল লাগোয়া বৃদ্ধাবাসে ওই দম্পতিকে হেনস্থার অভিযোগ ওঠে। মহকুমাশাসকের দফতরে অভিযোগ জানানোর পরে মঙ্গলবার তিনি দফতরের একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে পাঠিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি অভিযোগকারীদের বক্তব্য নথিভুক্ত করান। বুধবার বৃদ্ধাবাসের কর্মকর্তাদের ডেকেও জিজ্ঞাসাবাদ করেন মহকুমাশাসক। যা জানা গিয়েছে সেই রিপোর্টট জেলাশাসকের কাছে পাঠানোর কথা।
ওই দম্পতির পাশে দাঁড়িয়েছে দার্জিলিং জেলা লিগ্যাল এড ফোরাম। ফোরামের অন্যতম কর্মকর্তা অমিত সরকারের অভিযোগ, মহকুমা প্রশাসনের তরফে এখনও ওই বৃদ্ধাবাসে গিয়ে ঘটনা খতিয়ে দেখাই হয়নি। তিনি বলেন, “জেলাশাসক সমাজ কল্যাণ দফতরকে দিয়ে তদন্ত করানোর আশ্বাস দিয়েছেন। অথচ জেলাশাসক মহকুমা প্রশাসনের রিপোর্ট না পাওয়ায় সেই কাজে বিলম্ব হচ্ছে।” ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়ায় মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি সত্তরোর্ধ্ব ওই দম্পতি সমরেশ নাগ এবং মমতাদেবীর চিকিৎসায় যাতে কোনও গাফিলতি না হয় তা দেখতে হাসপাতালের সুপারকে চিঠি পাঠান মহকুমাশাসক। সমরেশবাবু শ্বাসকষ্টের কিছু সমস্যা রয়েছে। তবে মমতা দেবীর শারীরিক অবস্থা ভাল নয়। হৃদরোগ থেকে দুই পায়ে বাতের ব্যথায় ভোগেন তিনি। কোমরের হাড় ভাঙা বলে হাঁটাচলা করতে পারেন না। তার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন। হাসপাতালের সুপার সব্যসাচী দাস ওই দম্পতির চিকিৎসায় সব সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন।
বৃদ্ধাবাসে আপত্তিকর কিছু দেখলে ফোনে পরিচালন কমিটির এক সদস্যকে সে সব জানাতেন ওই দম্পতি। তা মানতে পারেননি কর্মকর্তাদের একাংশ। সম্প্রতি বৃদ্ধাবাসের এক মহিলা কর্মীর সঙ্গে এক কর্মকর্তা এবং কর্মীদের একাংশের সম্পর্ক নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন ওই দম্পতি। অভিযোগ, এর পরেই লোকজন নিয়ে লাঠিসোটা-সহ ওই দম্পতির ঘরে ঢুকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা হয়। বাধা দিলে ধাক্কাধাক্কি হয়। গালিগালাজ করে ওই বৃদ্ধ দম্পতিকে বৃদ্ধবাস ছেড়ে দিতে হুমকি দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ। |
|
|
|
|
|