বেহাল পথ, আন্দোলনের হুমকি ক্ষুব্ধ বাসিন্দাদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ফালাকাটা |
সাত মাস ধরে বেহাল ধূপগুড়ি-ফালাকাটা সড়কে বেড়ে চলেছে যাত্রীদের দুর্ভোগ। দীর্ঘদিন ধরে এই রাস্তা বেহাল হয়ে পড়ে থাকায় ক্ষুব্ধ বাসিন্দারাও।
ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটার দূরত্ব ২২ কিলোমিটার। ওই রাস্তার সাত কিলোমিটার বাদে বাকি রাস্তা জুড়েই বড় বড় খানাখন্দ। পিচের চাদর উঠে গিয়ে গর্ত হয়েছে রাস্তা জুড়ে। ছোট গর্ত ছাড়াও অনেক জায়গায় গর্ত প্রায় ৪-৫ ফুট বড়। গর্ত পেরোতে গিয়ে মাঝে মধ্যে দুর্ঘটনা ঘটা রুটিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত তিন মাসে ওই পথে দুর্ঘটনায় পড়ে দু’টি বাস। প্রচুর মানুষ জখম হন। মারা যান একজন পরিবহন কর্মীও। মাঝে মধ্যে ভাঙা রাস্তা পেরোতে গিয়ে গাড়ি খারাপ হয়ে যায়। তারপরে শুরু হয় দীর্ঘ যানজট। দুর্বিষহ কৃষকদের অবস্থাও। ধূপগুড়ি অথবা ফালাকাটা বাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাবার সময় দ্বিগুণ হারে তাঁদের ভ্যান রিক্সার ভাড়া মেটাতে হয়। |
|
ধূপগুড়ি-ফালাকাটা সড়ক জুড়ে থাকে এমন গর্ত। ছবি: রাজকুমার মোদক। |
আট বছর আগে ওই পূর্ত দফতরের নিয়ন্ত্রণাধীন ওই রাস্তাটি চার লেন করার জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণ করেন। অধিগ্রহণের পর থেকেই শিলিগুড়ি থেকে অসম যাতায়াতের ওই মূল রাস্তাটি জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ নিয়মিত মেরামত করছেন না বলে অভিযোগ। দেড় বছর আগে রাস্তাটি একবার মেরামত করা হলেও বর্ষা শুরুর আগে ফের রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়ে। ওই রাস্তার উপর দিয়ে সারা দিনে কয়েক হাজার ভারী গাড়ি চলাচল করায় ফলে দিনের পর দিন রাস্তাটি আরও খারাপ হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতোই এলাকার বিধায়কও ওই রাস্তার বেহাল দশা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত রাস্তা মেরামত না করা হলে বড় আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন বাসিন্দারা। জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকারের কথায়, “ওই রাস্তাটি নিয়ে ইতিমধ্যে জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। ওঁরা পুজোর পর মেরামতির কাজ শুরু করার কথা জানিয়েছেন। জেলার আরও অন্যান্য রাস্তাগুলির পরিস্থিতি নিয়ে কয়েক দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করা হবে।”
বছর দু’য়েক আগে রাস্তাটি এরকমই বেহাল হয়ে পড়েছিল। বহু আবেদন নিবেদন করে ফল না পেয়ে পরে এলাকার বাসিন্দারা দিনের পর দিন ওই রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। তার জেরেই ওই রাস্তা সংস্কার করেন জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ। এ বারও সে পরিস্থিতি তৈরি করা হবে বলে ইতিমধ্যে ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির একাংশ বাসিন্দা হুমকি দিয়েছেন। ফালাকাটার তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারী বলেন, “ওই রাস্তা মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। মাসের পর মাস রাস্তাটি যে ভাবে বেহাল হয়ে পড়ে রয়েছে তা মানা যায় না। আমি ইতিমধ্যে রাজ্যের পূর্ত সচিব কে বিষয়টি জানিয়ে তার মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছে দ্রুত রাস্তা মেরামতির জন্য বলেছি। ওই রাস্তা নিয়ে কেন ওই দফতরের হেলদোল নেই তা বুঝতে পারছি না।” ধূপগুড়ি ব্যবসায়ীদের সংগঠন ফোসিড-এর সম্পাদক হিমাদ্রি সাহা বলেন, “কৃষক থেকে সাধারণ মানুষ সকলে সড়ক যন্ত্রণায় জেরবার হচ্ছেন। বিভিন্ন স্তরে জানিয়েছি। তাঁরা পুজোর পর রাস্তা মেরামতির আশ্বাস দিয়েছেন দেখা যাক কি হয়।” |
|