বাজারের চড়া দরে ম্লান পঞ্চরত্নের ঔজ্জ্বল্য। কোজাগরীর রাতে লক্ষ্মীকে নিবেদন করা পাঁচ পদের ভোগকে বলা হয় পঞ্চরত্ন।
দামের অগ্নিমূল্যের প্রভাব পড়েছে ফল ফুল সব্জি থেকে মুদিখানা, সর্বত্রই। খিচুড়ি লক্ষ্মীপুজোয় আবশ্যিক। কিন্তু তার প্রধান উপকরণ গোবিন্দভোগ বা তুলসী ভোগের দাম কেজিপ্রতি ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা। মুগডাল ৯০ থেকে ১২৫ টাকা কেজি। চচ্চড়ির জন্য দরকার ডাঁটা, কুমড়ো, মূলোর দর ২০ থেকে ২৫ টাকা। বেগুন ছাড়া অনেক জায়গায় চচ্চড়ি রোচে না। বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা। আদা ১২০ টাকা। কাঁচালঙ্কা ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি। চন্দ্রমুখী আলুর দামও ১৫ টাকার উপরে। ফুলকপির ডালনার কপি মাপ মতো ২০ থেকে ৩৫ টাকা। বাঁধা কপি ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি। চাটনির জন্য দরকার টম্যাটো। তার দর ৬০ টাকা। কাঁচা তেঁতুল ৪০ টাকা কেজি। পায়েসের দুধ ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি। চিনি ৪০ টাকা। আর কেউ যদি লক্ষ্মীকে লুচি খাওয়াতে চান, তা হলে সাদা ময়দা প্রতি কেজি ২২ থেকে ২৮ টাকা। তেল ৯০ থেকে ৯৫ টাকা কেজি। |
এ যদি নবদ্বীপের বড় বাজারের দর হয়, তা হলে কৃষ্ণনগর বা করিমপুরের বাজারের ছবিটা কমবেশি একই রকম। রাতারাতি বাড়ছে ফলের দামও। করিমপুর বাজারের ফল ব্যবসায়ী সুকুমার সরকার বলেন, “এই ভাবে দাম বেড়ে যাওয়ায় ক্রেতারা কম করে জিনিস কিনছেন।” আর এক ফল ব্যবসায়ী উদয় বিশ্বাসের কথায়, “ক্রেতার সংখ্যা অবশ্য বাড়ছে। ফলে পুষিয়ে যাচ্ছে।”
তবে ২০ টাকার শসা রাতারাতি ৫০ টাকায় পৌঁছে গিয়েছে। মুসুম্বি ৯ টাকা। ১২০ টাকার বেদানা ১৮০ টাকা। আপেল, ন্যাসপাতি ৮০ টাকা। আঙুর ২০০ টাকা, খেজুর ১০০ টাকা, নারকেল মাপ মতো ২৫ টাকা থেকে শুরু। ডাব ছাড়া বাঙালির পুজো হয় না। প্রতিটি ২০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। পানিফল ২৪ টাকা, পাকা আম ২০০ টাকা কেজি।
মাটির প্রতিমা ছোট ছাঁচের ১০০ থেকে ৩০০ টাকা। আর ন’পোওয়া আয়তনের প্রতিমা ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। করিমপুর অঞ্চলে কোজাগরীর রাতে হয় বিশেষ ধরনের পাঁচ পুতুলের পুজো। লক্ষ্মীনারায়ণ, দুই পাশে জয়-বিজয়। সামনে গড়ুর। প্রমাণ মাপের পাঁচ পুতুলের দাম ২৫০০ থেকে ৪০০০ টাকা পর্যন্ত। কারিগর শম্ভু পাল বলেন, “বাঁশ থেকে বিচুলি সব কিছুরই দাম বেড়েছে। প্রতিমার দামও তাই ঊর্ধ্বমুখী।”
তবে সব থেকে চমকে দেওয়ার মতো দাম বেড়েছে পদ্মফুলের। নবদ্বীপ বাজারে এ দিন এক একটি পদ্মফুল বিক্রি হয়েছে ১৫ টাকায়। অন্য দিকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করিমপুর ছিল কমলশূন্য। চেষ্টা চলছে যাতে শুক্রবার সকালে অন্তত পদ্ম সংগ্রহ করা যায়। |