ফল-সব্জিতে হাত দিলেই ছ্যাঁকা, পকেটে টান
ল-সব্জির দাম চড়েই ছিল। কিন্তু তাই বলে দাম যে লাফ দিয়ে একটা বেড়ে যাবে ভাবেননি কেউ। বৃহস্পতিবার লক্ষ্মীপুজোর বাজারে গিয়ে সেই আগুনের ছোঁয়া হাতে-নাতে টের পেলেন বাঁকুড়া ও পুরুলিয়াবাসী। পটল, বেগুন, ঝিঙে তো রয়েছেই, আলুর দামও বেশ বেড়ে গিয়েছে।
‘পিলিনে’র দাপটে অষ্টমীর রাত থেকেই শুরু হয়েছিল বৃষ্টি। নবমী, দশমীটানা দু’দিন বৃষ্টি থামেনি। তার উপর কখনও ডিভিসি, কখনও কংসাবতী জল ছেড়েছে। কিছু এলাকায় ফসলও নষ্ট হয়েছে। আর এই সুযোগেই চড়চড়িয়ে বেড়েছে সব্জির দাম। এই পরিস্থিতিতে অনেক গৃহস্থই পুজোর বাজেট ছাঁটতে বাধ্য হচ্ছেন।
বাজারে গিয়ে মাথায় হাত সকলের। এক টুকরো ফুলকপি, যা চার জনের পাতেও দেওয়া যায় না, বাঁকুড়ার চকবাজারেই তার দাম এ দিন ছিল ৫০ টাকা। দু’দিনেই ফুলকপির দাম ২০ টাকা বেড়ে গিয়েছে। বাঁধাকপির দাম কেজিতে ২০ টাকা থেকে বেড়ে এ দিন ৩০ টাকা হয়েছে। পটল, বেগুনের দামও চড়ে গিয়েছে। পুরুলিয়ার বাজারেও একই ছবি। এখানে ফুলকপি ৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বাঁধাকপি ৩৫-৪০ টাকা কেজি প্রতি হিসেবে কিনতে হয়েছে ক্রেতাদের। কেজিতে আলু ১২ টাকা, কুমড়ো ২০ টাকা, বেগুন ৪০ টাকায় বিক্রি হল পুরুলিয়ার বাজারে। খিচুড়ি কিংবা লুচি-সব্জির ভোগের উপকরণ জোগাড় করতেই হিমশিম খেলেন গৃহস্থেরা।
বাজার সারতে সারতে পুরুলিয়ার দেবীপ্রিয়া কর বা আদ্রার প্রতিমা সেনদের বক্তব্য, “গত বছর এতটা দাম ছিল না। এ বছর আগুন দাম! শুধু চাল-ডালে তো আর খিচুড়ি হবে না?”
দাম আগুন। কিন্তু, লক্ষ্মী-আরাধনা বলে কথা! খরচা না করলে কি লক্ষ্মীলাভ হবে?
তবু দরকষাকষি করতে ভুলছেন না ক্রেতারা। কেউ দেখে নিচ্ছেন, নারকেলটা কেমন। —নিজস্ব চিত্র।
বাঁকুড়ার বড়কালীতলার বধূ ববিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সব্জি-ফলের দাম তো ক্রমশ মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। কিনব কী করে! সারা ক্ষণ বাজেট ছাঁটতে ছাঁটতে বাজার করতে হল।” বাঁকুড়ার চকবাজারের সব্জি বিক্রেতা গাঁধী দাসের যুক্তি, “প্রতি বছরই লক্ষ্মীপুজোর সময় দাম কিছুটা বেড়ে যায়। তবে এ বার বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হওয়ায় চাষিরাই আরও দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।”
এ তো গেল ভোগের বাজার-দর। দেবীর নৈবেদ্য সাজানো হবে যে ফলে, তাও কিনতে গলদঘর্ম অবস্থা রাঢ়বঙ্গবাসী। পুরুলিয়া শহর, আদ্রা, রঘুনাথপুর, কাশীপুর, মানবাজার-সহ বিভিন্ন বাজারে ফলের দামও ছিল বেশ চড়া। পুরুলিয়া জেলার বিভিন্ন বাজারে এ দিন আপেল কেজিতে ১০০ টাকা, কমলালেবু পিস হিসেবে ১৫ টাকা, শসা ৪০-৫০ টাকা পানিফল ৫০-৬০ টাকা, পেয়ারা ৪০-৬০ টাকা, চাঁপা কলা ডজনে ৪০ টাকার আশেপাশে ঘোরাঘুরি করেছে। বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, খাতড়ার বাজারে কেজিতে নারকেল ৪০ টাকা, মুসাম্বি লেবু ৮০ টাকা, বেদানা ১৫০টাকা, শাঁখ আলু ১০০ টাকা, নাসপাতি ৮০টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
স্বস্তি মেলেনি ফুলের বাজারেও। বাঁকুড়ার মাচানতলায় প্রতিটি লাল গাঁদা ফুলের মালা ১৫ টাকা, হলুদ গাঁদা ফুলের মালা ২০ টাকা, রজনী গন্ধা ফুলের ছোট মালা ৮ টাকা, বড় মালা ৫০ টাকা ও পদ্ম ফুল ১২ টাকা দরে হাঁকেন ফুল বিক্রেতারা। বাজার সেরে ফেরার পথে পুরুলিয়া শহরের কর্পূরবাগান এলাকার বাসিন্দা শম্পা গুপ্ত বললেন, ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন টানা বৃষ্টির জেরে এই দাম বৃদ্ধি। কী করব, বাধ্য হয়ে ওই দামেই কিনতে হল।”
বাজার সেরে ফেরার পথে তাই অনেকই গজগজ করতে করতে বলেন, “আত্মীয়-স্বজন, পাড়া প্রতিবেশি মিলে আমন্ত্রিতের সংখ্যা কম নয়। পাতে দেব কী?”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.