মার্কিন মুলুক খোলায় স্বস্তি ভারতের
কান ঘেঁষে বেরিয়ে গিয়েছে গুলি। শেষ মুহূর্তে কোনও ক্রমে রফাসূত্রের সন্ধান মিলেছে, তাই রক্ষে। নইলে ফের এক বার ভয়াল মন্দার কবলে পরত পৃথিবী। পাহাড়প্রমাণ সমস্যার মুখে দাঁড়াতে হত ভারতের অর্থনীতিকে। তাই আপাতত সেই আতঙ্ক কাটায় কিছুটা স্বস্তির শ্বাস ফেলছে এ দেশের শিল্পমহল। মার্কিন প্রশাসনে তালা খোলায় হাঁফ ছাড়ছে তামাম দুনিয়াও।
বণিকসভা ফিকি-র প্রেসিডেন্ট নয়নালাল কিদওয়াই থেকে শুরু করে অ্যাসোচ্যামের প্রেসিডেন্ট রানা কপূর। সকলেই জানান, আমেরিকা নিয়ে উদ্বেগের অবসান নিঃসন্দেহে ভারতীয় অর্থনীতির পক্ষে সুখবর। বেশি নয়, আরও চব্বিশ ঘণ্টা মার্কিন মুলুকে টানাপোড়েন অব্যাহত থাকলেই যে ভারত সহ সারা পৃথিবীর অর্থনীতিতে ঘোর বিপর্যয় নেমে আসত, তা জানিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা। আক্ষরিক অর্থে এই ক’দিন খাদের ধারে দাঁড়িয়েছিল বিশ্ব।
শুধু ভারত নয়। সারা দুনিয়া যে কী উৎকণ্ঠা নিয়ে গত দু’সপ্তাহ মার্কিন কংগ্রেস আর হোয়াইট হাউসের দিকে তাকিয়ে থেকেছে, তা স্পষ্ট বিশ্বব্যাঙ্কের কর্ণধার জিম ইয়ং কিমের কথাতেই। তাঁর মতে, শেষ পর্যন্ত এই সঙ্কট এড়াতে পারা নিঃসন্দেহে উন্নয়নশীল দেশগুলির পক্ষে সুখবর। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনিশ্চয়তা ফিরে আসতে না-দেওয়ার উপর জোর দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের (আইএমএফ) ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টিন লাগার্দও।
ডেমোক্র্যাট রিপাবলিকানের তিক্ত লড়াইয়ে আমেরিকায় নতুন আর্থিক বছর শুরুর আগে (পয়লা অক্টোবর) বাজেট পাশ করা যায়নি। তাই মার্কিন প্রশাসনে তালা পড়েছিল সেই দিন থেকেই। গত ষোলো দিনে বহু আলাপ-আলোচনাতে খোলেনি।
হোয়াইট হাউসের কর্মীদের স্বাগত জানাচ্ছেন চিফ-অফ-স্টাফ
ডেনিস ম্যাকডোনাও। বৃহস্পতিবার। ছবি: রয়টার্স।
কিন্তু সারা বিশ্বের কাছে তার থেকেও বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো। ১৭ অক্টোবরের মধ্যে যা না-বাড়ালে, পুরনো ধার মেটানোও সমস্যা হত আমেরিকার পক্ষে। মন্দা ঘনাত সারা বিশ্বে। বিস্তর টালবাহানার পর একেবারে শেষ দিনে (বুধবার) এ নিয়ে ঐকমত্যে পৌছয় দুই দল। তড়িঘড়ি এ নিয়ে বিল পাশ হয় মার্কিন কংগ্রেসের দুই কক্ষে। সময় পেরোনোর আগে প্রায় শেষ ঘণ্টায় তাতে সই করেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
এ দিন সকাল থেকে অনেকটাই বদলে গিয়েছে আমেরিকার ছবি। ১৪০টি ন্যাশনাল পার্কের মতো বিভিন্ন দ্রষ্টব্য স্থানে তালা খুলছে। স্বাভাবিক হচ্ছে বিভিন্ন পরিষেবা। দরজা খুলছে বিভিন্ন সরকারি দফতরের। হাসিমুখে কাজে ফিরছেন সেখানকার কর্মীরা।
তবে এক বারের জন্য নাম না-করেও, সাংবাদিক বৈঠকে বিরোধী রিপাবলিকানদের ফের তুলোধোনা করেছেন ওবামা। জানান, এই ‘তৈরি করা’ সঙ্কটের জেরে বিপুল ক্ষতি হয়েছে মার্কিন অর্থনীতির। তার থেকেও বড় কথা, চরম ক্ষতি হয়েছে তার ভাবমূর্তির। অবশ্য সেই সমস্ত সঙ্কট কাটিয়ে দ্রুত ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতিজ্ঞার কথাও শুনিয়েছেন তিনি। জানিয়েছেন, আরও বেশি আর্থিক বৃদ্ধি ও চাকরির সুযোগ তৈরির পথেই হাঁটবে তার সরকার। তবে একই সঙ্গে মন দেবে দীর্ঘ মেয়াদে ঘাটতি কমিয়ে আনার বিষয়েও। বিরোধীদের কাছে ওবামার ‘আর্জি’, “যদি কোনও দল বা প্রেসিডেন্টকে অপছন্দ হয়, ভোটে লড়ুন। সরকার বদলান। কিন্তু তাকে অচল করবেন না।”
আপাতত ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি খরচ চালানো নিয়ে রাজি হয়েছে দু’পক্ষ। ঋণের ঊর্ধ্বসীমা বাড়াতেও ফের তাল ঠোকাঠুকি হবে ৭ ফেব্রুয়ারি নাগাদ। তখন কী আবার এমন অচলাবস্থায় পড়বে আমেরিকা? ওবামার উত্তর, “না।” তত দিনে দুই দলই দীর্ঘমেয়াদি সমঝোতাসূত্র বার করে ফেলতে পারবে বলে সকলেই আশাবাদী।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.