শতাব্দী প্রাচীন ৫১ কুমারী পুজোয় সামিল গ্রামবাসী
থিত আছে, নিজের পারিবারের সুখ-শান্তি, সমৃদ্ধি এবং এলাকার বাসিন্দাদের উন্নতি কামনায় কঙ্কালীতলায় ৫১ কুমারীর পুজোর প্রচলন করেছিল বোলপুর লাগোয়া কাপাসটিকুরী চট্টোপাধ্যায় পরিবার।
১১৮ বছর আগের প্রথা আজও সমানে চলে আসছে। আশ্বিন ত্রয়োদশী তিথিতে কঙ্কালীতলায় শতাব্দী প্রাচীন বটবৃক্ষের নীচে, প্রথা মেনে বৃহস্পতিবার ৫১টি সতীপীঠের অধিষ্ঠাত্রী দেবীর নামে ৫১ কুমারীর পুজো হয়। প্রাচীন প্রথা মেনে, এ বারও দিন কয়েক আগে থেকে কাপাসটিকুরী চট্টোপাধ্যায় পরিবারের তরফ থেকে এলাকার ৫১ কুমারীর বাড়িতে সন্দেশ গিয়েছিল। তাঁদের কন্যাদের নিয়ে হাজির হন সতীপীঠ কঙ্কালীতলায়। বৈদিক মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে কঙ্কালীতলা মন্দির সংলগ্ন প্রাচীন বটবৃক্ষের নীচে শুরু হয় ৫১ কুমারীর পুজো। চট্টোপাধ্যায় পরিবারের সদস্য ভীষ্মদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাবা, ঠাকুরদার সময় থেকে এই পুজো চলে আসছে। কথিত আছে, আমাদের বংশের পূর্বসূরী কমলাদেবী চট্টোপাধ্যায় এই কুমারী পুজোর প্রচলন করেছিলেন। শুনেছি, ওই সময় এলাকায় নানা অশান্তি এবং আমাদের পারিবারিক বিবাদ চরমে ছিল। তার নিদান হিসেবে কমলাদেবী ৫১ পীঠের অন্যতম সতীপীঠ কঙ্কালীতলায় পঞ্চবট স্থাপন করেন। তার নীচে ৫১ কুমারীর পুজো শুরু করেন এবং এলাকার বাসিন্দাদের উন্নতি, সুখ, সমৃদ্ধি ফেরা-সহ পারিবারিক শান্তি বৃদ্ধি পায়।”
বোলপুরের কঙ্কালীতলায় বট গাছের নীচে হচ্ছে ৫১ কুমারীর পুজো। বৃহস্পতিবার তোলা নিজস্ব চিত্র।
যখন এই পুজোর প্রচলন হয়েছিল, তখন চট্টোপাধ্যায় পরিবারের প্রচুর বিষয় সম্পত্তি ছিল। পুজোর সম্পূর্ণ খরচ তাঁরাই বহন করতেন। তবে বর্তমানে ওই সব জমিদারী নেই। প্রথা অনুযায়ী এখনও খরচের প্রায় সিংহ ভাগ দেন চট্টোপাধ্যায় পরিবার। বাকি নানা ভাবে সংগ্রহ করা হয়। লাগোয়া শ্মশান, ঝিল-সহ প্রায় ২২ বিঘে জমি কাপাসটিকুরী চট্টোপাধ্যায় পরিবার দান করেছেন স্থানীয়দের।
বীরভূমের অন্যতম সতীপীঠ লাভপুরের ফুল্লরাতলায় ফুল্লরামন্দিরে প্রথম পুজো সেরে সাহিত্যিক তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধিষ্ঠাত্রী দেবী তারা মায়ের পুজো হচ্ছে। ১১৬ বছর আগে এই পুজোর প্রচলন করেছিলেন দম্পতি হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় ও প্রভাবতীদেবী। কুল পুরোহিত সনৎ ভট্টাচার্য ও সুভাষ ভট্টাচার্য বলেন, “পুরুষানুক্রমে এই পুজো আমরা করে আসছি। জেনেছি, দীর্ঘদিন নিঃসন্তান ছিলেন প্রভাবতীদেবী। বিহারের তান্ত্রিক রামজী গোসাঁই-এর পরামর্শ মতো লাভপুরের দক্ষিণ প্রান্তে থাকা একটি ডাঙাতে, দুর্গাপুজোর পর শুক্ল চতুর্দশীর রাতে তারা মায়ের পুজো করেন। মা তারার পুজো করায় তাঁদের একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হয়। বন্দ্যোপাধ্যায় দম্পতি তাঁর নাম রাখেন তারাশঙ্কর।”
সনতবাবু জানান, গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তের ওই ডাঙায় তারা মন্দিরের ভগ্ন অবস্থার জন্য, দীর্ঘ কাল সাহিত্যিক নিজের বাড়ির দুর্গা মণ্ডপে অধিষ্ঠাত্রী দেবীর পুজো করতেন। সম্প্রতি সাহিত্যিকের ভাইপো, চিত্র পরিচালক পলাশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে সংস্কার কাজ শেষ হয়েছে। এ বছর থেকে ওই ওই ডাঙায় অধিষ্ঠাত্রী দেবীর পুজো পুনরায় হচ্ছে। এই পারিবারিক পুজো এবং ৫১ কুমারীর পুজোতে সামিল হন আশপাশের বহু মানুষ।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.