এলাকাবাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি ছিল, দুবরাজপুরের মেজে ও বেলসারা গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া শাল নদীতে একটি ভাসাপুল তৈরি হোক। সেই দাবি পূরণের জন্য বর্ষার আগেই সাংসদ তহবিলের প্রায় ৩৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তৈরি হয় ৫ মিটার চওড়া ও ১০৩ মিটার দৈর্ঘের ওই ভাসাপুল বা কজওয়ে।
কিন্তু তাতেও দুর্ভোগ কমেনি এলাকাবাসীর। দিন দু’য়েকের ভারি বর্ষণেই নবনির্মিত কজওয়ের উপরে জল উঠে এসেছে। এই কজওয়েটি সামান্য নীচু। তবে জল উঠে আসার জন্য বাসিন্দারা নদীতে প্রচুর বালি জমে থাকাকেই দায়ী করেছেন। কিন্তু এত বালি সরানো হবে কী করে? এই বালি সরাতে এগিয়ে এসেছে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও সেচ দফতর। সেচ দফতরের উদ্যোগে ও স্থানীয় বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের সহযোগিতায় একশো দিনের কাজ প্রকল্পে নদী বক্ষের বলি সরানোর কাজ শুরু হয়েছে পুজোর আগেই। |
কজওয়েটি সামান্য নীচু সে কথা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন সেচ দফতরের এক আধিকারিক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সেচ দফতরের ওই আধিকারিকের দাবি, “বরাদ্দের পরিমাণ কম থাকায় কজওয়েটির উচ্চতা কিছুটা কম হয়েছে। তবে ওই নদীটির গতি ডান দিক ঘেঁষে হওয়ায়, কজওয়ের পর নদীর বাঁ দিকে প্রচুর পরিমাণ বালি জমে যাওয়ায় সমস্যা তৈরি হচ্ছে বেশি। সেই জন্যই বালি সরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। যাতে কজওয়ের ঠিক পরে নদী বক্ষের বেশ কিছুটা অংশের বালি তুলে ফেলে নদীর গতি পথকে ঠিক দিশা দেওয়া যায়।” বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান শিবঠাকুর মণ্ডল বলেন, “সমস্যা বুঝতে পেরে সাংসদ শতাব্দী রায়কে জানিয়েছিলাম। তিনি প্রশাসনিক স্তরে কথাবার্তা বলার পরে ওই খাতে ২ লক্ষ টাকা অনুমোদিত হয়েছে বলে জেনেছি।”
পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, সেচ দফতরের আধীনে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে ওই কাজ করা হচ্ছে। ইতিমধ্যেই ৭ দিন ধরে ১১৫ জন জবকার্ডধারী বালি সরানোর কাজ করেছেন। পুজোর পর আবার কাজ হবে। তা হলে আর কজওয়ের উপর জল উঠবে না আশা করছেন প্রধান। সংশ্লিষ্ট দফতরের ময়ূরাক্ষী ক্যানাল বিভাগের সুপারিন্টেন্ডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার সুজিত কোনার বলেন, “একশো দিনের কাজ প্রকল্পে কজওয়ের ঠিক পর থেকে ১৫০ মিটার চওড়া ও ৩০০ মিটার দৈর্ঘের বালি তোলা হবে বলে ঠিক হয়েছে।” জবকার্ডধারী নিনা বাউড়ি, উর্মিলা বাগদী, উদয় মণ্ডল ও শ্রীদাম দাস বৈষ্ণবরা বলেন, “নদীর দু’পাশে থাকা বালিজুড়ি পঞ্চায়েতের অনেকগুলি গ্রামের মানুষের সুবিধার জন্য সেতু তৈরি হয়েছিল কিন্তু। বর্ষায় জল উঠে যাওয়ায় ফের একই সমস্যা হচ্ছিল। বালি তুললে সমস্যা যেমন থাকবে না তেমন এই কাজে বেশ কিছুদিন কাজও পাবেন এলাকার মানুষ।” |