খনিগর্ভে বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করে বেসরকারি হাতে খনির মালিকানা তুলে দিতে চাইছে কর্তৃপক্ষ। আর এর জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়েও কাজ করতে হচ্ছে খনি কর্মীদের। এমন সব অভিযোগে বৃহস্পতিবার কেকেএসসি-র নেতৃত্বে নিউ কেন্দা কোলিয়ারির এজেন্ট এবং ম্যানেজারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন খনিকর্মীরা। বিক্ষোভ শেষে একটি দাবিপত্রও কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি বিপ্রদাস মুখোপাধ্যায় জানান, এই কোলিয়ারির ২ নম্বর খনির পাশেই একটি খোলামুখ খনি চালু হয়েছে বছরখানেক আগে। কিন্তু খোলামুখ খনির জল ওই ভূগর্ভস্থ খনিতে ঢুকে যাওয়ায় সেখানে বন্ধ রয়েছে কাজ। অভিযোগ, জল বের করার কোনও পরিকল্পনা না নিয়ে ২ নম্বর খনির কর্মীদের অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়েছে। প্রচুর কয়লা মজুত থাকা সত্ত্বেও ওই খনিতে উৎপাদন বন্ধ রাখা হয়েছে। নবমীতে ৪ নম্বর খনিগর্ভের ২৯ নম্বর ডিপের একটি জায়গায় চাল ধসে পড়ে। তার তলায় চাপা পড়ে একটি কয়লা কাটার যন্ত্র (শোভাল যন্ত্র)। বিপ্রদাসবাবুর দাবি, এই ঘটনার চার দিন আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত ওভারম্যান ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে যে কোনও সময়ে চাল ধসে পড়তে পারে বলে রিপোর্ট দিয়েছিলেন। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। দুর্ঘটনার পরে এখন খনির উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিপ্রদাসবাবুদের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ কৌশলে খনি বন্ধ করে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করতে চাইছে। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে চাপা পড়ে থাকা শোভাল যন্ত্রটি উদ্ধার করে উৎপাদন চালু করতে হবে, ২ নম্বর খনির জল বের করে তা চালু করে বদলি হওয়া কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে হবে। তাঁদের আরও দাবি, ১৯৯৪ সালের ২৫ জানুয়ারি এই কোলিয়ারির ৩ নম্বর খনিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় ৫৫ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। ফের এই ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, খনি বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ ঠিক নয়। কেন খনির চাল ধসে পড়ল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শনিবারের মধ্যে চাল ধসে চাপা পড়া যন্ত্রটি উদ্ধার করে উৎপাদন চালুর চেষ্টা চলছে। |