পুজোর আগেই উদ্যোক্তাদের সঙ্গে বৈঠকে পুলিশ জানিয়ে দিয়েছিল, একাদশী ও দ্বাদশীর দিন এ বার প্রতিমা বিসর্জনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। কিন্তু সেই নিষেধাজ্ঞা না মেনে এই দু’দিন বিসর্জন করল আসানসোল মহকুমার বেশ কিছু পুজো কমিটি। পুলিশের দাবি, কারা বিসর্জন করেছেন, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ তাঁরা পাননি। তা পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, একাদশীতে আসানসোল রেলপাড়, আসানসোল বাজার, মহিশীলা-সহ নানা এলাকার কুড়িটিরও বেশি পুজো কমিটি তাদের প্রতিমা বিসর্জন করে। দ্বাদশীর দিনও দু’টি ক্লাব বিসর্জন করে। অথচ, সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে রবীন্দ্রভবনে প্রায় দেড়শো পুজো কমিটিকে নিয়ে বৈঠক করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট। সেখানে ছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোলের মেয়র তাপস বন্দোপাধ্যায়, পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল-সহ প্রশাসনের নানা কর্তা। সরকারি নির্দেশিকা ব্যাখ্যা করে পুলিশ কমিশনার জানিয়ে দিয়েছিলেন, এ বার প্রতিমা বিসর্জন করতে হবে দশমীর বা ত্রয়োদশীর দিন। তার মাঝে দু’দিন কেউ ঢাক-ঢোল ছাড়া নিঃশব্দেও প্রতিমা তুলে নিয়ে গিয়ে বির্সজন করতে পারবেন না। এই নির্দেশ মানা না হলে তা দণ্ডনীয় অপরাধ বলে গণ্য হবে।
এর পরে আসানসোলের শ’খানেক ক্লাব বৈঠক করে ‘উৎসব উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি’ গঠন করে। ৩ সেপ্টেম্বর ওই কমিটি আবার একটি বৈঠক করে। সেখানে পুজো কমিটির কর্তারা দাবি করেন, অতিরিক্ত দু’দিন প্রতিমা ও মণ্ডপ রাখা ব্যয়সাপেক্ষ। তাই দশমী ও একাদশীর দিন প্রতিমা নিরঞ্জনের অনুমতি দেওয়ার আবেদন জমা দেওয়া হয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে। কিন্তু সেই অনুমতি মেলেনি। প্রতিবাদে ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বহু পুজো মণ্ডপে পনেরো মিনিট আলো বন্ধ রেখে প্রতীকি প্রতিবাদ জানানো হয়।
তা সত্ত্বেও একাদশীর দিন বেশ কিছু উদ্যোক্তা প্রতিমা নিরঞ্জন করেন। দ্বাদশীতে যে দুই পুজো কমিটি বিসর্জন করে, তাদের উপদেষ্টা আসানসোল পুরসভার তৃণমূল মেয়র পারিষদ অনিমেষ দাস। তাঁর সাফ বক্তব্য, “প্রশাসনিক নিষেধাজ্ঞা জারির অনেক আগেই আমাদের নিরঞ্জনের দিনক্ষণ ঠিক হয়ে গিয়েছিল। অতিরিক্ত দিন প্রতিমা, মণ্ডপ রাখা ব্যয়সাপেক্ষ। বির্সজনে কোনও অসুবিধা হয়নি।”
আসানসোল-দুর্গাপুরের এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সুরেশ চাডিয়া জানান, ওই দু’দিন যারা বির্সজন করেছে, তারা বিনা অনুমতিতেই এ কাজ করেছে। তবে পুলিশের কাছে এখনও নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তাঁর দাবি। |