পুরসভার পানীয় জলের পাইপ ফেটেই বিপত্তি। এর জেরে আন্ত্রিকে আক্রান্ত হলেন কয়েকশো মানুষ।
ঘটনাস্থল উত্তর দমদম পুরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রতাপগড় এলাকা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ষষ্ঠীর রাত থেকে উত্তর প্রতাপগড়, দক্ষিণ প্রতাপগড়, গোলবাগানের ঘরে ঘরে অসুস্থ মানুষের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। কিন্তু পুজোর সময়ে চিকিৎসক মেলেনি। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুজোর ছুটি পড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরাও ঠিক সময়ে পৌঁছননি। স্থানীয় চিকিৎসকেরা প্রাথমিক চিকিৎসা করলেও সপ্তমীতে আতঙ্ক ছড়ায় গোটা এলাকা জুড়ে। ওই দিন পুরসভা একটি স্বাস্থ্য শিবির খোলে। স্বাস্থ্যকর্মীদের বাড়ি বাড়ি পাঠিয়ে হ্যালোজেন ট্যাবলেট এবং ওআরএস বিলিও শুরু হয়। অষ্টমীর সকাল থেকেই ১১নম্বর ওয়ার্ডের প্রাথমিক স্কুলে স্বাস্থ্য শিবির খোলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। এ দিকে, ততদিনে রোগীর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। আক্রান্তদের অনেককেই নিয়ে যাওয়া হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। এলাকার বাসিন্দা অনিমা রায় বলেন, “আমার নাতনি প্রিয়াঙ্কা ষষ্ঠীর দিন অসুস্থ হল। স্থানীয় চিকিৎসককে দেখিয়েও সরে উঠল না। তখন তো পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা আসেননি, অ্যাম্বুল্যান্সও পাইনি। শেষে নিজেরাই বেলেঘাটার হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল চক্রবর্তী বলেন, “কল্যাণী এক্সপ্রেসওয়ের ধারে একটি জায়গায় কেমডিএ-র ফেলা ছাই চাপা পড়ে আমাদের পাইপ ফেটেছিল। সেখান দিয়েই নোংরা জল ঢুকেছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।”
উত্তর প্রতাপগড়ের চায়না দে, বাপি জানা, প্রমীলা মণ্ডল, অর্চনা সামন্তরা পুরসভার পাইপ লাইনে আসা জল খেতেন এতদিন। সদ্য হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে তাঁরা আর পুরসভার জল খেতে ভরসা পাননি। কৃষ্ণা সর্দার নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, “এখন বাধ্য হয়েই আমরা জল কিনে খাচ্ছি।” স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমাদেবী জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য দফতরের খতিয়ান অনুযায়ী ওই এলাকায় প্রায় দশ হাজার বাসিন্দার মধ্যে আন্ত্রিকে আক্রান্তের সংখ্যা সাতশোর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে।
এর মধ্যে দফায় দফায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে প্রায় তিনশো জন বাসিন্দাকে। বুধবার বিকেলে চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “এখনও বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে সাতাশ জন ভর্তি আছেন। উত্তর দমদম পুরসভার হাসপাতালেও ভর্তি আছেন কয়েক জন। তবে পানীয় জলের বিষয়ে এখন সবাইকে সচেতন করা গিয়েছে।” |