নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
এক পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে দিনের পর দিন ফুঁসলে সহবাসের অভিযোগ তুলে পুলিশ কমিশনারের দ্বারস্থ হয়েছেন এক তরুণী। শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানার ঘটনা। ৩৭ বছর বয়সী ওই মহিলার বাড়ি শিলিগুড়িতেই। তিনি যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, তাঁর নাম ভাস্কর বিশ্বাস। বর্তমানে প্রধাননগর থানাতে সব ইন্সপেক্টর পদে ভাস্করবাবু কর্মরত। মহিলার অভিযোগ, গত ৮ অক্টোবর তিনি শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে তা নেওয়া হয়নি। পরে তিনি শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটে গিয়ে অভিযোগ জানান। পুলিশ ওই অফিসারের বিরুদ্ধে কোনও মামলা রুজু করেনি বা অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেয়নি কেন তা নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন উঠেছে। পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। তা খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বিবাহবিচ্ছিন্না ওই মহিলার অভিযোগ, ভাস্করবাবুর সঙ্গে সম্পর্কের জেরে তিনি গর্ভবতী হয়ে পড়লে একবার বাড়িতেই ওষুধ খাইয়ে এবং আরেকবার নার্সিংহোমে গর্ভপাত করানো হয়। গত ৪ বছর ধরে ভাস্করবাবুর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। তিনি তাঁকে পুরী, দীঘা-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে যান। ভাস্করবাবু আগে বিয়েও করেছিলেন। সে কথা ওই মহিলা আগে জানতেন না বলে দাবি করেন। তার আগে ২০১১ সালে তারাপীঠ কালীবাড়িতে গিয়ে তাঁরা বিয়েও করেন। ঠিক ছিল পরে রেজিস্ট্রি করবেন। শিলিগুড়ির নজরুল সরণিতে স্বামীজি মোড়ে ভাস্করবাবুর বাড়িতেই বছরখানেক থাকতেন। গত জুন মাস থেকে রেজিস্ট্রি করার দাবি জানালে তিনি মহিলাকে এড়িয়ে যেতে চান বলে অভিযোগ। এমনকী ‘টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মিটিয়ে নিতে চান। তা না মানলে তাঁকে মারধর এবং অত্যাচার শুরু করেন। কয়েক মাস আগে ওই মহিলা বাপের বাড়িতে এসে থাকা শুরু করেন। ভাস্করবাবু বলেন, “অভিযোগ ঠিক নয়। ওই মহিলার সঙ্গে আমার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল। গর্ভপাত করানোর বিষয়টি ভিত্তিহীন। মহিলার কাছে এ ব্যাপারে কী প্রমাণ রয়েছে? ওই মহিলার সঙ্গে বর্তমানে কোনও সম্পর্ক নেই।” মহিলার অভিযোগ, স্ত্রী বলে পরিচয় দিয়ে নার্সিংহোমে তাঁর চিকিৎসা করানো হয়। ভাস্করবাবুর বাড়ির কাছেই ওই নার্সিংহোম। চিকিৎসা সংক্রান্ত নথিপত্র ভাস্করবাবুর কাছেই রয়েছে।
মহিলাকে থানা থেকে ফেরানো প্রসঙ্গে পুলিশ কমিশনার বলেন, “শুনেছি মহিলা অভিযোগ জানাতে শিলিগুড়ি থানায় গেলেও পরে তা করতে চাননি।” ওই মহিলার দাবি, শিলিগুড়ি থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে পুলিশের এক অফিসার ফোন করে অভিযুক্ত ভাস্করবাবুকে থানার কাছে ডেকে নেন। আমাকে বাইরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলতে বাধ্য করেন। কিন্তু অভিযোগ নিতে চাননি। শিলিগুড়ি থানার আইসি বিকাশ কান্তি দে মহিলার অভিযোগ জানাতে আসার বিষয়টি প্রথমে অস্বীকার করেন। পরে বলেন, “মহিলা এসেছিলেন। তবে লিখিত কিছু দেননি। যে কোনও সময় তিনি অভিযোগ দিতে পারেন।”
মহিলা জানান, পুলিশ গুরুত্ব দিচ্ছে না দেখে তিনি অভিযোগপত্রটি মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে ও গণতান্ত্রিক অধিকারি রক্ষা সমিতির কাছে পাঠান। শিলিগুড়ি গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির সম্পাদক অভিরঞ্জন ভাদুড়ি জানান, তাঁরা অভিযোগকারিণীর সঙ্গে কথা বলবেন। |