জঙ্গলে পথ হারাল মমতার গাড়ি
ঙ্গলমহলে পথ হারালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আচমকাই রাজ্যের কয়েকটি প্লাবিত এলাকা পরিদর্শনে বেরিয়ে পড়েন মমতা। সঙ্গে ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ মুকুল রায়। নিজের গাড়ির সঙ্গে আর দু’টি মাত্র গাড়ি নিয়ে তিনি পৌঁছে যান ঝাড়গ্রামে। তার মধ্যেই পথ হারিয়ে জঙ্গলে ঢুকে পড়েছিলেন। উপযুক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া এ ভাবে ঘোরাফেরা করা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কোনও হেলদোল না থাকলেও রাজ্য থেকে জেলা প্রশাসন পর্যন্ত উদ্বেগ ছড়িয়েছে সর্বত্র।
কথা ছিল, মুখ্যমন্ত্রী উঠবেন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়িতে। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সে পথে যেতে গিয়েই লোধাশুলি থেকে পথ হারায় মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ি। জেলা পুলিশ সূত্রের খবর, লোধাশুলির জঙ্গল পেরিয়ে ডান দিকে গেলেই ঝাড়গ্রাম। মুখ্যমন্ত্রীর যাওয়ার কথা ছিল সেই পথেই। কিন্তু রাস্তা ভুল করে গাড়ি ঢুকে পড়ে বাঁয়ে, চিঁচিড়ার দিকে। প্রায় ১৫ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে গাড়ি চলে যায় ফেকো পর্যন্ত। তার পরে সম্বিত ফেরে চালকের। গাড়ি ঘুরিয়ে চলে আসেন লোধাশুলি, সেখান থেকে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি। ঘড়িতে তখন রাত সাড়ে ১০টা বেজে গিয়েছে।
এই পথে আগেও বেশ কয়েক বার গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর গাড়ির চালকও একই ছিলেন। তবে রাস্তা ভুল হল কেন? জেলা প্রশাসনের বক্তব্য, জঙ্গল-পথে ঘুটঘুটে অন্ধকারের মধ্যে পথ চিনতে ভুল করেন চালক। তাই এই বিপত্তি। কিন্তু যেখানে ঝাড়গ্রাম যাওয়ার পথে শহরের ছবি চোখে পড়ার কথা, সেখানে ক্রমশ গভীর জঙ্গল আর খানাখন্দ চলতে থাকায় সন্দেহ হয় চালকের। তার পরেই গাড়ি ঘুরিয়ে নেন তিনি।

প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখছেন মুখ্যমন্ত্রী। গোপীবল্লভপুরের সাতমায়। দেবরাজ ঘোষের তোলা ছবি।
প্রশাসনের বক্তব্য, জঙ্গলমহলের ওই সব এলাকা এখনও পুরোপুরি মাওবাদীমুক্ত নয়। উপরন্তু চিঁচিড়ার পথে গাড়ি থামিয়ে চুরি, ছিনতাই নিত্যদিনের ঘটনা। রাস্তার হালও তথৈবচ। এই অবস্থায় জেলা প্রশাসনকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহলে ঢুকে পড়াটা নিরাপত্তার দিক দিয়ে কতটা সঠিক কাজ হয়েছে, তাই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ মহলের ব্যাখ্যা, মঙ্গলবার বাঁধের জল ছাড়া নিয়ে নিজের বাড়িতে সচিবদের নিয়ে বৈঠক করার পরেই জেলা পরিদর্শন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সিদ্ধান্ত এতটাই আচমকা ছিল যে, মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা অফিসার-সহ তাঁকে ঘিরে থাকা নিরাপত্তাকর্মীদের বেশির ভাগই কিছু জানতে পারেননি। ফলে মমতা যখন বাড়ি থেকে রওনা দেন, তখন কোনও পাইলট কার-ও ছিল না। পুলিশের এক কর্তা জানান, ‘জেড প্লাস’ নিরাপত্তা পান মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলের মতো ‘স্পর্শকাতর এলাকায় গেলে তাঁর গাড়ির আগে ‘জ্যামার’ লাগানো থাকে। সে দিন এ সবের কোনও কিছুই ছিল না।
বুধবার, সফরের দ্বিতীয় দিন অবশ্য সর্বত্রই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল। এ দিন গোপীবল্লভপুরে ত্রাণ বিলি করতে যান মুখ্যমন্ত্রী। সেই পথে মুখ্যমন্ত্রীর কনভয়ে ছিল প্রায় ৭০টি গাড়ি। ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজি, ডিআইজি-সহ পুলিশের শীর্ষ কর্তারা। সব মিলিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তায় এ দিন জেলাজুড়ে প্রায় হাজার খানেক পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়। পশ্চিম মেদিনীপুর ছাড়াও পূর্ব মেদিনীপুর হয়ে হাওড়া জেলায় যান তিনি। সর্বত্রই পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.