৯ ঘণ্টা ওয়ার্ডের গেটে ঝুলে দেহ
নিরাপত্তার ফাঁক গলে জেলে ফের বন্দির মৃত্যু
ংশোধনাগারের গেটে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হল এক বন্দির দেহ। বুধবার সকাল ৬টা নাগাদ মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের ৭ (বি) নম্বর ওয়ার্ডের মূল গেটে রমজান গায়েন (২৫) নামে খুনের মামলায় অভিযুক্ত ওই বন্দির দেহটি ঝুলতে দেখে হইচই পড়ে যায়। একে-একে জেলের আধিকারিক, পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকরা আসেন। কিন্তু নিয়মের বেড়াজালে আটকে ৯ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগে যায় দেহটি নামতে।
এত সময় লাগল কেন?
উত্তর মেলেনি জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি কারা দফতরের এআইজি, ডিআইজি, জেল সুপারকারও সঙ্গে। সকলেরই মোবাইল ফোন বেজে গিয়েছে। তবে সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, জুডিশিয়াল না এগ্জিকিউটিভকোন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে দেহ নামানো হবে, তা নিয়ে টানাপোড়েনেই এই দেরি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলের এক আধিকারিক বলেন, “যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সমস্ত প্রক্রিয়া করা হয়েছে। সওয়া তিনটে নাগাদ এগ্জিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট গোবিন্দ দত্তের উপস্থিতিতে মৃতদেহ নামানো হয়। এই সময়ে ভিডিও রেকডিং করা হয়। যা জরুরি ছিল।” পরে ময়না-তদন্তের জন্য দেহটি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ দিকে, এই ঘটনাকে ঘিরে জেলের নিরাপত্তা ও নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বন্দির অপমৃত্যুর খবর পেয়ে এ দিন জেলে আসেন কারা দফতরের এআইজি কল্যাণ প্রামাণিক, ডিআইজি শোভন দীন প্রমুখ। জেল সুপার খগেন্দ্রনাথ বীরকে সঙ্গে নিয়ে তাঁরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ইতিমধ্যে জেলের এক কর্মীকে ‘শো-কজ’ করা হয়েছে। ঘটনার সময়ে কর্তব্যরত ওই ওয়ার্ডারের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছে, কী ভাবে এই ঘটনা ঘটল? সেই সময়ে তিনি কী করছিলেন? নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ‘শো-কজের’ জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব দেখেই ওই কর্মীর বিরুদ্ধে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। বিভাগীয় তদন্তও শুরু হতে পারে।
মেদিনীপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে এখন সব মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার ২৫০ জন আবাসিক রয়েছেন। এর মধ্যে প্রায় ৭০০ জন সাজাপ্রাপ্ত। সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে প্রায় ৫০০ জন আবার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত। রয়েছেন মাওবাদী সন্দেহে ধৃত থেকে বেশ কয়েকজন কুখ্যাত সমাজবিরোধী এবং বাংলাদেশি বন্দিও। এত জনের জন্য সব মিলিয়ে ৫২টি সেল ও ১৪টি ওয়ার্ড রয়েছে। ওয়ার্ডে সাধারণত বিচারাধীন বন্দিরা থাকেন। ১৪টি ওয়ার্ডের সামনে-পিছনে অন্তত ২৮ জন ওয়ার্ডারের থাকার কথা। কিন্তু, এই সংখ্যক ওয়ার্ডার থাকেন না-বলেই নিরাপত্তার ফাঁক গলে অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে চলেছে।
আনন্দপুর থানার রাজারডাঙ্গার বাসিন্দা রমজান ছিল ৭ (বি) নম্বর ওয়ার্ডে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক মহিলাকে কাটারি দিয়ে কুপিয়ে খুন করায় অভিযুক্ত রমজানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল ২ জুলাই। সে নেশাগ্রস্ত ছিল এবং মাঝেমধ্যেই মানসিক ভারসাম্যহীনের মতো আচরণ করত। জেলের যে ওয়ার্ডে সে ছিল, সেটি ‘পাগলা ওয়ার্ড’ নামে পরিচিত। মানসিক ভারসাম্যহীনদের রাখা হয় সেখানে। চলতি মাসের ৩০ তারিখ মেদিনীপুর আদালতে হাজিরার দিন ছিল রমজানের।
এ দিন সকালে কম্বলের কাপড় গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় তাঁর দেহটি মূল গেটে ঝুলতে দেখেন জেলের কর্মীরা। ওই ওয়ার্ডের মধ্যে ২৭ জন বন্দি ছিলেন। দেহটি নামাতে দেরি হওয়ায় গেট খোলা যায়নি বলে তাঁদের খাবার দেওয়া হয় জানলা দিয়ে। পাশের ৭ (এ) ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বন্দিরাও দীর্ঘ সময় ধরে দেহটি ঝুলতে দেখে ক্ষোভ জানান।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.