নিকাশি নালা বলে কিছু নেই। ফলে, মাছের আঁশ, মুরগির নাড়িভুঁড়ি, পাঁঠা কাটার পরে জমে যাওয়া চাপ চাপ রক্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যায় রাস্তায়। জলের সঙ্গে মিশে তা হয়ে ওঠে থকথকে। তার উপরে রয়েছে প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ ব্যবহার। ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগে জল যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ হয়ে পরিস্থিতি হয়ে ওঠে আরও পূঁতিগন্ধময়। তবুও বাজারে যাতায়াত করতেই হবে। অগত্যা সন্তর্পণে পা ফেলে চলাচল করতে হয় সকলেই। ডুয়ার্সে পর্যটকদের অন্যতম আর্কষণের জায়গা লাটাগুড়ির বাজার ও লাগোয়া এলাকার হাল এমনই। যা জেনেও নিকাশির হাল ফেরাতে প্রশাসন, পঞ্চায়েতের তরফে কেউ উদ্যোগী হননি। ফলে, লাটাগুড়ির পরিবেশ দূষিত হয়েই চলেছে। লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান মুনি রায় বলেন, “আগামী ২১তারিখে গ্রাম পঞ্চায়েত অফিস খুলবে। কখনই সমস্যার সমাধানের বিষয়ে আলোচনা করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” লাটাগুড়ি রিসর্ট ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সূত্রের খবর, পাহাড়ে বেড়ানো নিয়ে নানা অনিশ্চয়তায় ডুয়ার্সের লাটাগুড়িতে এখন উপচে পড়ছে পর্যটকদের ভিড়। কোনও সরকারি কিংবা বেসরকারি অতিথি নিবাসে জায়গা মিলছে না। গরুমারার জঙ্গলে বেড়াতে যাওয়ার টিকিট পেতেও লম্বা লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। কিন্তু, বেড়াতে গিয়ে প্রতি পদে দূষণের মুখোমুখি হচ্ছেন পর্যটকেরা। |
গরুমারার জঙ্গল লাগোয়া লাটা গুড়ির ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশেই রয়েছে ১ একর আয়তনের একটি পুকুর। লাটাগুড়ির অন্যতম সুন্দর জায়গা। প্লাস্টিক ক্যারিব্যাগ আর আগাছায় সেটি ভরাট হতে চলেছে। এমনকী, দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের পরেও কাঠামো সরানোর কাজও শুরু হয়নি। লাটাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের পুকুরের চারদিক অপরিচ্ছন্ন। পুকুর ধারে দাঁড়িয়ে বহরমপুরের বাসিন্দা স্বপন চৌধুরী বললেন “এতো সুন্দর পুকুরকে সাজা হচ্ছে না সেটাই বোঝা দায়।” লাটাগুড়ি হাট ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক দিব্যেন্দু দেবও সামগ্রিক দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, “লাটাগুড়ি পর্যটন মানচিত্রে বিখ্যাত হলেও নিকাশি বেহাল থাকায় অনেক কথা শুনতে হচ্ছে। প্রশাসন-পঞ্চায়েত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি খারাপ হবে।” হাটে কাপড় ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ ঘোষবা মাছ বিক্রেতা নিমাই দাসরা চান, দ্রুত প্রশাসন উদ্যোগী হোক। সকলেই জানান, পর্যটকেরা বাজারে এসে জল কাদায় বিপাকে পড়েন, কিন্তু তাও এই সমস্যার সমাধানে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনও উদ্যোগই নেই। |