এই বার ধানের দিকে ঝুঁকেছে ডুয়ার্সের বাঁদরের দল। মাদারিহাট থেকে শামুকতলা, গ্রামের পর গ্রাম চাষিদের মাথায় হাত পড়েছে বাঁদরের দৌরাত্ম্যে। কী ভাবে বাঁদর শায়েস্তা করা যায় তা ভেবে পাচ্ছেন না বন কর্মীরা। কোচবিহারের ডিএফও রাজেন্দ্র জাখর বলেন, “বাঁদর ফলমূল এ সব খায় শুনেছি। তারা যে ধান খায় তা আগে শুনিনি। তবে বাঁদরদের শায়েস্তা করা খুবই কঠিন। বিষয়টি আমি দেখছি।” কিন্তু কবে বন দফতর ব্যবস্থা নেবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ওই এলাকার চাষিরা। উত্তর শিবকাটা গ্রামের বাসিন্দা নারায়ণ সরকার, সুভাষ সরকাররা জানান, আলো ফুটতেই বাঁদরের দল হানা দিচ্ছে। পটকা ফাটিয়ে হাতি তাড়ানো গেলেও বাঁদর পালাচ্ছে না। মগডালে উঠে বসে থাকছে। গৃহবধূ মালা সরকার বলেন, “বহু দিন রান্নাবান্না করে স্নান সেরে ফিরে দেখি খাবার খেয়ে সাবাড় করে দিয়েছে বাঁদরেরা। ছোটদের হাতের খাবার পর্যন্ত ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে। সব সময় তো ঘর বন্ধ করে রাখা যায় না। কোন কিছু রোদে শুকোতে দিতে পারি না। সব কিছু লন্ডভন্ড করে দিচ্ছে। জমির ফসল ঘরে তুলতে পারছি না।” |
সাউথ রায়ডাকের রেঞ্জ অফিসার উৎপল দত্ত বলেন, “বুনো হাতি রোধে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়। বাঁদরের হানা রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না।” মাদারিহাট এলাকার বিঘার পর বিঘা জমিতে সদ্য ধান পাকতে শুরু করেছে। ভোর হতেই সেই ধান খেয়ে পেট ভরাতে হানা দিচ্ছে বাঁদরের পাল। গত তিন দিন ধরে মাদারিহাটের প্রায় ১০ বিঘা জমির ধান সাবাড় করেছে। মাদারিহাট গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য উত্তম শর্মার কথায়, “বাঁদর ধান খায় তা এ বছর আমরা বুঝলাম। যে ভাবে নিমেষের মধ্যে তারা জমি গুলি সাবাড় করছে তাতে দুশ্চিন্তায় পড়েছি।” মাদারিহাটে মেঘনাদ সাহা নগর এলাকায় ক্ষতির পরিমাণ বেশি। দীপালি সাহা তার দুই বিঘা জমিতে ধান বুনেছিলেন। ধানের শিসের রঙ সোনালি হতে ঝাঁকে ঝাঁকে বানর তার জমিতে হানা দিয়ে গত তিন দিনে আধ বিঘা জমির ধান খেয়েছে। তিনি ঠিক মত পাকার আগে ধান ঘরে তোলার কাজ করছেন। দীপালির কথায়, “ভোর বেলা বন থেকে ৭০-৮০টা বাঁদর জমিতে হানা দিচ্ছে। এত গুলি বানর যে ভাবে ধান খায় তা দেখে প্রথমে অবাক হয়েছিলাম। কী ভাবে বাঁদর তাড়াতে হয় জানি না।” |