প্রায় এক দশক পর অরুণাচলের ডি এরিং অভয়ারণ্যে খোঁজ মিলল রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের! কয়েকদিন আগে সেখানে দেখা গিয়েছে বাঘের পদচিহ্ন (পাগ-মার্ক)। ওই তথ্যের ভিত্তিতেই, এ বছর শীতকালে ওই অভয়ারণ্যে বাঘসুমারি করা হবে। পাসিঘাটের ডিএফও তাসি মিজে জানান, ডি এরিং অভয়ারণ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সম্প্রতি বাঘের পায়ের ছাপ মিলেছে। কয়েক বছর ধরেই তা উধাও ছিল। পূর্ব সিয়াং জেলার ১৯০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ওই অভয়ারণ্যের ভিতরে সিয়াং এবং সিবেয়া নদীর অববাহিকা রয়েছে।
পশু বিশেষজ্ঞ আনোয়ারউদ্দিন চৌধুরি ওই জঙ্গলে ক্যামেরা ট্র্যাপিং-এর ব্যবস্থা করেছিলেন। তিনি জানান, কিছুদিন আগেও কাঠ-পাচারকারী এবং চোরাশিকারিদের অবাধ যাতায়াত ছিল ওই অভয়ারণ্যে। কিন্তু, কয়েক বছর আগে থেকে গ্রামবাসী, আদি উপজাতি প্রতিষ্ঠানকে পাশে নিয়ে সংরক্ষণের কাজ শুরু করে বন দফতর। আদিদের সংগঠন ‘আদি বানে কেবাং’ ওই জঙ্গলে শিকার নিষিদ্ধ করে।
আনোয়ারউদ্দিন বলেন, “ওই অরণ্য বহুদিন ধরেই বাঘেদের বিচরণভূমি ছিল। সে গুলি আশপাশের গ্রামে ঢুকে গবাদি পশু শিকার করত। কোবো চাপোরির দিকেও চলে আসত। চোরাশিকারের জেরে জঙ্গলে শূকর, হরিণের সংখ্যা কমে যায়। এরপরই বাঘগুলিও অন্য কোনও অরণ্যে চলে যায়।” তিনি জানান, লখিমপুরে ওই জঙ্গলে ক্যামেরা-ট্র্যাপিং করে হরিণ ছাড়া কোনও বিপন্ন প্রজাতির প্রাণীর সন্ধান মেলেনি। দায়িত্ব নেওয়ার পরই অভয়ারণ্যে বাঘের খাদ্য বাড়ানোর উদ্যোগ নেন ডিএফও মিজে। ওই সরকারি কর্তা জানান, গ্রামবাসীরা শিকার বন্ধ করায় জঙ্গলে হগ-ডিয়ারের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। তাই ফের বাঘ ফিরেছে ওই জঙ্গলে। বন দফতর সূত্রে খবর, আপাতত ২-৩টি বাঘ ওই অভয়ারণ্যে রয়েছে। অরুণাচলে পাক্কে এবং নামদফায় ব্যাঘ্র প্রকল্প রয়েছে। পাক্কেতে এ বছর বাঘসুমারিতে ৬টি বাঘের সন্ধান মিলেছে। ২০১২ সালের নভেম্বর মাসে অরুণাচলের আনিনির পাহাড়ি গ্রামে দুটি বাঘের বাচ্চা উদ্ধার হয়। দু’টিকেই নিয়ে যাওয়া হয় রোয়িং চিড়িয়াখানায়। বন দফতর জানিয়েছে, ওই দুটি ব্যাঘ্রশাবককে জঙ্গলের লাগোয়া বোমায় (ঘেরাটোপ) রাখা হবে। ১৬ ফুট বাই ৪০ ফুটের সেই বোমায় প্রথমে তাদের শিকার ধরানো শেখানো হবে। তার পর বোমার একটি দিক খুলে দিয়ে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে তাদের। বনকর্তাদের দাবি, এর আগে রাশিয়ায় এ পদ্ধতিতে পালিত বাঘকে অরণ্যে মুক্তি দেওয়া হলেও, ভারতে এমন আগে হয়নি। |