গঙ্গার ঘাটগুলিতে প্রতিমা নিরঞ্জনের চাপ কমাতে পূর্ব কলকাতার দু’টি জলাশয়কে বিসর্জনের জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছিল। বিসর্জনের পরে জলাশয় দু’টি সাফাইয়ের ক্ষেত্রে কাজের গতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তা সত্ত্বেও বাসিন্দাদের মতে, প্রথম বারের প্রচেষ্টায় রাজ্য সরকার কিছুটা হলেও সফল। আর প্রশাসনের দাবি, আজ, বৃহস্পতিবার প্রতিমা নিরঞ্জনের পরে দু’টি জলাশয়কেই আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।
গঙ্গার ঘাটে চাপ কমাতে পূর্ব কলকাতার লেকটাউন-গোলাঘাটা ও নিউ টাউনের কাছে দু’টি জলাশয় প্রতিমা নিরঞ্জনের নতুন জায়গা হিসেবে চিহ্নিত করেছিল রাজ্য সরকার। দশমীতে দিনভর ওই দু’টি জলাশয়ে একাধিক প্রতিমার ভাসান হয়। বিসর্জনের পর থেকেই কলকাতা পুরসভা নদীবক্ষ পরিষ্কারের কাজ চালাচ্ছে। কিন্তু ওই দু’টি জলাশয়ে দশমীর পরে বুধবার গিয়ে দেখা গেল, চার দিকে ভাসছে কাঠামো। জলাশয়ের পাড়ে প্রতিমার সঙ্গে ফেলে দেওয়া পুজোর সামগ্রী থেকে তৈরি হয়েছে আবর্জনার স্তূপ। স্থানীয় কিছু লোকজন নিজেরা কাঠামো সরিয়ে রাখছেন। কেউ কেউ আবার কিছু কিছু সামগ্রী নিয়ে চলে যাচ্ছেন।
সূত্রের খবর, দশমীর দিনে ওই দু’টি জলাশয়ে পঞ্চাশটিরও বেশি প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার ফের প্রতিমা নিরঞ্জনের কাজ হবে। অভিযোগ, ইতিমধ্যেই নয়ানজুলি কিংবা নিউ টাউনের জলাশয়ের জল দূষিত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, তাঁরা এত দিন ওই জলাশয়কে নানা ভাবে ব্যবহার করতেন। কিন্তু এখন যা অবস্থা, তাতে আর ওই জলাশয় কোনও কাজে লাগানো যাবে না। |
গোলাঘাটার কাছে ওই নয়ানজুলি দেখভালের দায়িত্ব দক্ষিণ দমদম পুরসভার। স্থানীয় বিধায়ক তথা পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান সুজিত বসু জানান, মাত্র কিছু দিনের চেষ্টায় ওই নয়ানজুলিটি বিসর্জনের জন্য তৈরি করতে হয়েছে। সৌন্দর্যায়নের কাজও শুরু হয়েছে। কলকাতা পুরসভার মতো পরিকাঠামো নেই। তবুও ক্রেন ও পুরকর্মীরা মিলে নয়ানজুলি থেকে প্রতিমার কাঠামো পাড়ে নিয়ে এসেছেন। জলাশয়টি পরিষ্কারের কাজও দ্রুত করা হবে।
দশমীতে দিনভর সল্টলেক ও লেকটাউন মিলে মোট ৩৮টি প্রতিমার বিসর্জন হয় সেখানে। সুজিত বাবুর দাবি, “গঙ্গার উপরে চাপ কমাতে রাজ্য সরকার দু’টি জলাশয় চিহ্নিত করেছিল। গোলাঘাটার নয়ানজুলিটির সৌন্দর্যায়নের কাজও শুরু হয়েছে। দ্রুত সেই কাজ শেষ করতে হবে। সেই অর্থে পরিকাঠামো নেই। তবুও দশমীর পরেই জলাশয় পরিষ্কারের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভাসান হলে দ্রুত জলাশয়টিকে আগের অবস্থায় ফেরানো হবে। পরের বছর থেকে অনেক আগে থেকে প্রস্তুতি নিয়ে বিসর্জনের কাজ করা হবে।”
নিউ টাউনের জলাশয়টিরও চার দিকে বুধবার ভেসেছে প্রতিমার কাঠামো। পাড়ের চারধারে পুজোর সামগ্রীর স্তূপ। পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “গঙ্গায় যে ভাবে পরিষ্কারের পরিকাঠামো রয়েছে, এ ক্ষেত্রে তা নেই। পরের বছর সেই পরিকাঠামো তৈরি করা হবে। গঙ্গার ঘাটগুলি পরিষ্কারের পরে কলকাতা পুরসভার যন্ত্র ব্যবহার করে ওই জলাশয় দু’টিও পরিষ্কার করা হবে।” অভিযোগ যা-ই থাক, সল্টলেক কমিশনারেট এলাকা থেকে বাবুঘাট বা বাগবাজারের বদলে হাতের কাছেই বিসর্জনের জায়গা পেয়ে খুশি পুজোর উদ্যোক্তারা। তাঁদের বক্তব্য, প্রথম বার বলেই কিছু সমস্যা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে এ সমস্যা হবে না। |